কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
স্থির বা চলমান চিত্রে নেতা, মন্ত্রী, সান্ত্রীদের ঘুষ নেওয়ার ছবি সংবাদমাধ্যমে দেখা যায়। কিন্তু, সাজা হয় কি? এমন প্রশ্ন নাগরিক মনে ঘুরপাক খায়। কিন্তু, সুব্রতবাবুর মামলা এক অন্য চিত্র সামনে এনে দিল। যেখানে অভিযোগকারী এক এসডিও। যাঁর সঙ্গী ছিলেন আইপিএস কে জয়রামন। উল্টোদিকে অভিযুক্ত ব্যক্তি এক কমার্শিয়াল চেকপোস্টের সামান্য পেট্রোলম্যান। এসডিও’র বক্তব্য ছিল, সেদিন রাত একটা নাগাদ আচমকা ওই চেকপোস্টে যাই। ট্রাকচালকদের কাগজে স্বাক্ষর করার জন্য অভিযুক্ত ১০ টাকা করে নিচ্ছিলেন। কিন্তু, তার বিনিময়ে কোনও রসিদ দিচ্ছিলেন না। এমন আচরণের কোনও সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি। অভিযুক্তের টেবিলের ড্রয়ার থেকে মেলে ৭৬৭ টাকা। তার ভিত্তিতে এফআইআর এবং লিখিত অভিযোগ করা হয় ৩ ডিসেম্বর। উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসককে বিষয়টি জানানো হয়। সেই সূত্রে দুর্নীতি দমন আইনে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা শুরু হয়।
মামলার বয়ান অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ২০ জানুয়ারি নিম্ন আদালত অভিযুক্তকে এক মাসের জেল ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে। যা হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করে তাঁর তরফে বলা হয়, কোনও ট্রাকচালক ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ আনেননি। আদালতে কোনও ট্রাকচালক সাক্ষ্যও দেননি। দ্বিতীয়ত, ওই চেকপোস্টে ঘটনার দিন চারজন কর্মী কর্মরত ছিলেন। কিন্তু, কার টেবিলের ড্রয়ার থেকে ৭৬৭ টাকা পাওয়া যায়, তা জানা নেই। এমনকী অভিযুক্ত ব্যক্তি ঘুষ চাইছিলেন বা গ্রহণ করছিলেন, তারও কোনও প্রমাণ নেই। এসডিও সেদিন নিজে বাজেয়াপ্ত জিনিসের তালিকা বানিয়েছিলেন। যে অধিকার তাঁর নেই। তাই ওই তালিকার ভিত্তিতে সাজা বাতিল হওয়া উচিত।
উল্লেখ্য, মামলায় ছিলেন সাত সাক্ষী। সেইসব সাক্ষ্য পর্যালোচনা করে হাইকোর্ট তার রায়ে বলেছে, অভিযোগকারী বা তদন্তকারী পুলিস অফিসার, এমনকী নিম্ন আদালতের কাছে কোনও ট্রাকচালক বলেননি যে, তাঁদের কাছ থেকে ঘুষ চাওয়া হয়েছিল। অভিযুক্তের অফিসের ড্রয়ার থেকে টাকা উদ্ধার হয়। কিন্তু, সেখানে ছিলেন চারজন কর্মী। ফলে কার ড্রয়ার থেকে টাকা মেলে, তার জবাব নেই। অভিযোগকারী বাজেয়াপ্ত জিনিসের তালিকা (সিজার লিস্ট) বানালেও তাতে কোনও জিডি অথবা পিএস কেস নম্বর নেই। এমনকী ঘুষের দাবি বা তা গ্রহণ করার কোনও প্রমাণই নেই। ফলে সাজা মকুব করা হল। যা অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে।