উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
লোকসভার এই ফল যেমন আসন সংখ্যার নিরিখে বিপাকে ফেলেছে তৃণমূলকে, তেমনই আবার রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, বিনয়কৃষ্ণ বর্মন, গৌতম দেব, তপন দাশগুপ্ত, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, লক্ষ্মীরতন শুক্লা, সুজিত বসু, বাচ্চু হাঁসদার মতো বেশ কয়েকজনের বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে। পিছিয়ে থাকার নিরিখে চিন্তা বেড়েছে কলকাতা পুরসভায় শাসকদলের এক ঝাঁক কাউন্সিলারেরও। দল ঘোষিত পন্থা, লিড না পেলে টিকিট নয়, তা প্রযোজ্য হবে কি না, তা নিয়েই চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা।
গত কয়েক বছরে পূর্ব মেদিনীপুর বা কোচবিহারে লোকসভা উপনির্বাচনে বামেদের সরিয়ে যেভাবে বিজেপি তৃণমূলের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছিল, তাতেই এই মেরুকরণের আভাস মিলেছিল। শুধু লোকসভা নয়, সাম্প্রতিককালে বিধানসভা উপনির্বাচন থেকে শুরু করে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনেও বাম ভোট ভাঙিয়ে পুষ্ট হয়েছে বিজেপি। সবক্ষেত্রেই তৃণমূলের প্রতিপক্ষ হিসেবে উঠে আসে গেরুয়া শিবির।
যার জেরে ২০১৪ সালে দুটি আসন থেকে বেড়ে বিজেপি এবার ১৮টি আসন দখল করেছে। উল্টোদিকে গতবার দুটি আসন পেলেও বামেরা এবার খাতাই খুলতে পারেনি। মালদহ উত্তর এবং রায়গঞ্জের মতো কিছু আসনে চতুর্মুখী লড়াই হলেও সিংহভাগ আসনে মেরুকরণ হয়েছে। সেই সব জায়গায় তৃণমূল বিরোধিতায় ‘নিজেদের’ প্রার্থীকে ভোট না দিয়ে পদ্মফুলেই আস্থা রেখেছে বাম সমর্থকরা। ২০১৪ সালের পর ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে যে কট্টর বাম সমর্থক তৃণমূলের বিরোধিতায় নিজের দলীয় প্রতীকে আস্থা রেখেছিল, তাঁদের সিংহভাগই এবার বেছে নিয়েছে বিজেপিকে। ২০১৪ সালে চতুর্মুখী লড়াইয়ে তৃণমূল পেয়েছিল ৩৯.০৫ শতাংশ ভোট। যার সুবাদে তাদের ঝুলিতে গিয়েছিল ৩৪টি আসন। বিজেপি প্রায় ১১ শতাংশ ভোট বাড়িয়ে সেবার পেয়েছিল ১৭.০২ শতাংশ ভোট। তাদের ভাগ্যে জুটেছিল দুটি লোকসভা আসন। বামেরা ২৯.৭১ শতাংশ ভোট পেয়েও দুটি আসন এবং মাত্র ৯.৫৮ শতাংশ ভোটের জোরে চারটি কেন্দ্রে জিতেছিল কংগ্রেস। তার দু’বছর বাদেই রাজ্য বিধানসভা ভোটে বিজেপির প্রাপ্ত ভোটের পরিমাণ প্রায় সাত শতাংশ কমে গিয়েছিল। অর্থাৎ ২০১৬ সালে পাওয়া ১০ শতাংশ ভোট থেকে এবার তাদের ঝুলিতে প্রায় ৩৮ শতাংশ ভোট জমা পড়েছে। অর্থাৎ এই ২৮ শতাংশ বৃদ্ধির পিছনে বামেদের অবদানই সর্বাধিক। কেননা ২০১৬ সালে বামেরা যে ২৫ শতাংশের মতো ভোট পেয়েছিল, তা এবার প্রায় উবে গিয়েছে। সাত শতাংশের মধ্যে বাধা পড়েছে বাম ভোট। সহজ পাটিগণিতে বিজেপির ওই দশ শতাংশের সঙ্গে বামেদের প্রায় ১৮ শতাংশ ভোট যুক্ত হলেও গেরুয়া শিবির ৩৮ শতাংশে পৌঁছতে পারে না। অর্থাৎ কংগ্রেসের তো বটেই, এমনকী তৃণমূলেরও কিছু ভোট বিজেপিতে গিয়েছে। আবার দমদমের মতো কেন্দ্রে সিপিএম প্রায় দেড় লক্ষ ভোট ধরে রাখতে পেরেছে বলেই তৃণমূল বিজেপিকে হারাতে সফল হয়েছে।