অর্ক দে কলকাতা: মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার পর থেকেই মধ্য এবং দক্ষিণ কলকাতার সঙ্গে বেহালার দিকে যাতায়াত করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। আবার বেহালাবাসীকেও ঘুরপথে দীর্ঘ যাত্রা করে শহরের অন্যান্য প্রান্তে যেতে হচ্ছে। মাঝেরহাট ব্রিজ ও সংলগ্ন রাস্তাগুলি বন্ধ থাকায় বিকল্প পথে যান চলাচল করছে। তাতে সময় যেমন বেশি লাগছে, তেমনই যানজটে ভুগতে হচ্ছে যাত্রীদের। সব মিলিয়ে বেহালা যাওয়াই এখন ‘কঠিন’। এই যাত্রাকে মসৃণ করতে পদক্ষেপ নিল কলকাতা পুরসভা। বেহালা যাওয়ার জন্য টালিনালার উপর করুণাময়ীতে ও ইজাতুল্লা লেনে দুটি সেতু তৈরি করা হয়। তবে তা এতই সঙ্কীর্ণ যে যানজট লেগেই থাকছে। বর্তমানে ওই সেতু দিয়ে একমুখী যান চলাচল করছে। বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে টলি ক্লাবের বিশাল প্রাচীর। এই সমস্যার সমাধানে সম্প্রতি টলি ক্লাবের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল কলকাতা পুরসভা। ঠিক হয়েছে, দ্বিমুখী যান চলাচলের জন্য রাস্তা তৈরি করতে জমি দেবে টলি ক্লাব ও ওয়াকফ বোর্ড। রাস্তা তৈরি করবে পুরসভা। দেশপ্রাণ শাসমল রোডের মোড় থেকে নতুন রাস্তার কাজ শুরু হবে। রাস্তা চওড়া হবে আড়াই মিটার। টলি ক্লাব সেই জমি দেবে। অর্থাৎ ক্লাবের প্রাচীর ভিতরের দিকে আড়াই মিটার সরে যাবে। সেতুর দু’পাড়ে সংযোগকারী রাস্তাও চওড়া করবে পুরসভা। সেই রাস্তা কোথাও ২৭ ফুট, কোথাও আবার ২৫ ফুট চওড়া হবে। এর ফলে বিপজ্জনক হয়ে পড়া করুণাময়ী ব্রিজ ও টালিগঞ্জ ব্রিজ এড়াতে পারবে গাড়িগুলি। এর ফলে টালিগঞ্জ সার্কুলার রোড, মহাত্মা গান্ধী রোডের যানজট এড়িয়েই বেহালা যাওয়া যাবে। সেক্ষেত্রে টালিগঞ্জ ব্রিজ হয়ে বেহালা যেতে সময় বাঁচবে। টালিগঞ্জ ফাঁড়ির সামনে যে যানজট তৈরি হয়, তা এড়িয়ে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের ঠিক উল্টোদিকে দেশপ্রাণ শাসমল রোড হয়ে কালীপ্রসন্ন এবং ইজাতুল্লা লেন ধরে টালিনালার উপর এপিজে আব্দুল কালাম ব্রিজ পেরিয়ে ক্যানাল রোড, বসন্তলাল সাহা রোড, রায়বাহাদুর রোড ধরে বেহালা অথবা টালিগঞ্জ সার্কুলার রোড ধরে আলিপুর যাওয়া যাবে। বর্তমানে ওই রাস্তা সঙ্কীর্ণ হওয়ায় বেহালা থেকে রায়বাহাদুর রোড এবং বসন্তলাল সাহা রোড ধরে টালিগঞ্জ সার্কুলার রোড হয়ে টালিগঞ্জ ব্রিজ পার করে টালিগঞ্জ ফাঁড়িতে আসতে হচ্ছে। ফলে মহাত্মা গান্ধী রোড এবং টালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের যানজটে নাকাল হচ্ছেন নিত্যযাত্রীরা। এর ফলে টালিগঞ্জের দিক থেকে বেহালার দিকে যেতে অন্তত আধঘণ্টা সময় বাঁচবে।
এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের অন্যতম সদস্য তারক সিং বলেন, এটা দীর্ঘদিনের সমস্যা। ফিরহাদ হাকিম কলকাতা পুরসভার দায়িত্ব নেওয়ার পর এ নিয়ে উদ্যোগী হন। ইতিমধ্যেই রাস্তার ধার থেকে দখলদারদের সরিয়ে নতুন ফ্ল্যাটে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবার রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শুরু হবে। সূত্রের খবর, বসন্তলাল সাহা রোড সম্প্রসারণের জন্য ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার পুরসভাকে চার কোটি টাকা দিয়েছে। এদিকে, করুণাময়ী ব্রিজের পাশে টালিনালার উপর তৈরি হয়েছে আরও একটি নতুন ব্রিজ। এই সেতুতে ওঠার জন্য মহানায়ক উত্তমকুমার সরণী থেকে নরেন্দ্রনাথ ঘোষ লেন হয়ে আসতে হয়। নরেন্দ্রনাথ ঘোষ লেনেও টলি ক্লাবের প্রাচীরের জন্য রাস্তা সঙ্কীর্ণ। এ নিয়ে অবশ্য এখনও সমাধান সূত্র বের হয়নি। আলোচনা চলছে বলেই পুরসভা সূত্রে খবর।