কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির সূচনা। ব্যবসায়ীদের উন্নতির আশা রয়েছে। বিদ্যার্থীদের সাফল্যযোগ আছে। আত্মীয়দের সঙ্গে মনোমালিন্য দেখা দেবে। ... বিশদ
সংশ্লিষ্ট সব মহলই এখন এই মরশুমে কী হবে তা নিয়ে বেশ চিন্তিত। এখন যে নতুন আলু উঠছে, তা হিমঘরে সংরক্ষণ করার কথা নয়। পোখরাজ, এস ফোর জাতের আলু সরাসরি বাজারে এনে বিক্রি করা হয়। খুচরো বাজারে নতুন আলু ৯-১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু চাষিরা তিন টাকার মতো দাম পাচ্ছেন। যা বিশেষ লাভজনক নয়। হিমঘরে যে জ্যোতি, চন্দ্রমুখী আলু সংরক্ষণ করা হয়, তা ফেব্রুয়ারি মাসের শেষভাগ থেকে উঠতে শুরু করে। পয়লা মার্চ থেকে হিমঘর খুলতে শুরু করবে। তখন ওই আলু হিমঘরে ঢুকতে শুরু করবে।
এবার এখনও পর্যন্ত আবহাওয়া যেরকম আছে, তাতে আলুর বাম্পার ফলন হবে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে। কৃষিপণ্য সংক্রান্ত সরকারি টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে মনে করেন, এবার আলুর রেকর্ড ফলন হতে পারে। একই মত প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায়ের। ব্যবসায়ী মহল মনে করে, রাজ্যে আলুর উৎপাদন এক কোটি টনের আশপাশে থাকা সবথেকে ভালো। এর থেকে বেশি বা কম উৎপাদন হলে সমস্যা তৈরি হয়। কম উৎপাদন হলে বাজারে আলুর দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। অন্যদিকে, বেশি উৎপাদন হলে চাষির কম দাম পাওয়ার আশঙ্কা থাকে। রাজ্যে আলুর উৎপাদন ১ কোটি ২০ লক্ষ টন হওয়ার নজির আছে। অধিক উৎপাদন হলে দাম পড়ে যায়। এবার শীতকালে এখনও পর্যন্ত ঠান্ডার মাত্রা ভালো ছিল। কুয়াশা ও মেঘলা আকাশ খুবই কম ছিল। বৃষ্টি তো হয়নি। এই ধরনের আবহাওয়া আলুর ভালো ফলনের পক্ষে খুবই ইতিবাচক বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। আগামী কিছুদিনের মধ্যে যদি প্রতিকূল আবহাওয়া না হয়, তাহলে ভালো ফলন হবেই।
আরও একটি কারণে সংশ্লিষ্ট মহল চিন্তিত। সেটা হল, এই মরশুমে বিপুল লোকসান হওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরা আলু কেনার ব্যাপারে এখনও খুব একটা আগ্রহী হচ্ছেন না। নতুন আলুর দাম যে এখনই বেশ কম, তার এটা একটা বড় কারণ। তাছাড়া আলু কেনার টাকার একটা বড় অংশ আসে ব্যাঙ্কের ঋণ থেকে। হিমঘর মালিকরা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেন। সেই ঋণের টাকার একটা বড় অংশ আবার তাঁরা ব্যবসায়ীদের ধার দেন আলু কেনার জন্য। আলুর ব্যবসার লাভ থেকে সুদ সহ ব্যাঙ্কের ঋণ হিমঘর মালিকদের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়। এবার বিপুল লোকসানের আলুর জন্য নেওয়া ঋণের একটা বড় অংশ এখনও পরিশোধ করা যায়নি। পরিশোধ না হওয়া ঋণের টাকা আগামী মরশুমে অ্যাডজাস্ট করার ব্যাপারে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে হিমঘর মালিকদের আলোচনা চলছে। কিন্তু এখনও এ ব্যাপারে ব্যাঙ্কগুলির কাছ থেকে বিশেষ ইতিবাচক সাড়া মেলেনি বলে জানিয়েছেন ওয়েস্ট বেঙ্গল কোল্ডস্টোরেজে অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক পতিতপাবন দে। ব্যাঙ্কের ঋণ পরিশোধ না করার জন্য নতুন ঋণ না পাওয়া গেলে আলুর ব্যবসায় টাকা বিনিয়োগ করা নিয়ে চিন্তায় আছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা আলু কিনতে কম নামলে দাম পড়ে যাবে। ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা লালুবাবু জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতি তাঁরা ইতিমধ্যে সরকারের নজরে এনেছেন। চাষিদের স্বার্থে আলু নিয়ে সরকার হস্তক্ষেপ করুক, চাইছেন ব্যবসায়ীরা। সরকার নির্ধারিত দামে কিছু আলু চাষিদের কাছ থেকে কিনুক সরকার, এটা সংগঠন অনেক দিন ধরে চাইছে বলে তিনি জানিয়েছেন।