সঞ্জয় গঙ্গোপাধ্যায়, কলকাতা: লোকসভা ভোটে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে আজ, সোমবার পুলিসকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেবে নির্বাচন কমিশন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া থেকে গণনা পর্যন্ত কীভাবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে হবে, তারই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে। এর আগে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, ভোট পরিচালনার দায়িত্বে থাকা অফিসারদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন কমিশনের কর্তাব্যক্তিরা। এবার পুলিসকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অতীতের নির্বাচনগুলিতে পুলিসকে বৈঠকে ডেকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু প্রশিক্ষণ রাজ্যে এই প্রথম বলে কমিশন সূত্রে খবর।
কলকাতার নির্বাচন কমিশনের দপ্তরের সামনে বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্সের কনফারেন্স রুমে ওই প্রশিক্ষণ হবে। সেখানে প্রতিটি জেলার পুলিস সুপার, অতিরিক্ত পুলিস সুপার, পুলিস কমিশনার, এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) এবং কলকাতার পুলিস কমিশনারও উপস্থিত থাকবেন। সেই প্রশিক্ষণ শিবিরে কমিশনের পক্ষে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) আরিজ আফতাব, অতিরিক্ত সিইও শৈবাল বর্মণ, অতিরিক্ত সিইও ওঙ্কার সিং মীনা, অতিরিক্ত সিইও সঞ্জয় বসুরা উপস্থিত থাকবেন। তাঁরাই ভোটে কী ধরনের নিরাপত্তা দিতে হবে, তা বুঝিয়ে দেবেন। সেই সঙ্গে বলা হবে, সুষ্ঠুভাবে ভোট করার জন্য সবরকম ব্যবস্থা নিতে হবে।
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, যে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হবে সেগুলি হল— ১) জেলায় জেলায় স্ট্রং রুমে রাখা ইভিএম মেশিনগুলি সশস্ত্র পুলিস দিয়ে কড়া নজরদারিতে রাখতে হবে। যেন কোনও অভিযোগ না উঠতে পারে। ২) মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া পর্বে কোনওরকম অসুবিধা যেন না হয়। সকলে যেন নির্বিঘ্নে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেন। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে যেন কোনও অভিযোগ কমিশনে না আসে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। ৩) স্পর্শকাতর এলাকা ম্যাপিং করতে হবে। তৈরি করতে হবে স্পর্শকাতর বুথের তালিকাও। ৪) কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। ৫) জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করতে হবে। ৬) অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। ৭) আইনশৃঙ্খলার রিপোর্ট প্রতিদিন কমিশনে পাঠাতে হবে। আইনশৃঙ্খলাজনিত কোনও সমস্যা হলে কী করে মোকাবিলা করতে হবে, সেব্যাপারেও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
গত দু’সপ্তাহ ধরে ভোটের সঙ্গে যুক্ত অফিসারদের নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ চলছে। এবারই প্রথম রাজনৈতিক দলের নেতাদের ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে পুলিসকর্তাদেরও। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে নির্বাচন কমিশনের কর্তারা জানিয়েছেন, এবারের লোকসভা ভোটে অনেক নতুন নিয়ম চালু হয়েছে। বেশকিছু বিধিনিষেধও জারি হয়েছে। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন চায়, একেবারে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট হোক। সমস্ত ভোটার যেন ভয়মুক্ত পরিবেশে নির্বিঘ্নে ভোটদান করতে পারেন। সে কারণেই দফায় দফায় প্রশিক্ষণ দিয়ে ভোটপ্রস্তুতি সেরে রাখছেন নির্বাচন কমিশনের কর্তাব্যক্তিরা। অভিজ্ঞমহলের মতে, মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহেই লোকসভা ভোট ঘোষণা হতে চলেছে। তার আগেই সবরকম প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন কমিশনের কর্তারা।