নতুন কোনও কর্ম পরিকল্পনায় সাফল্যের ইঙ্গিত। লটারি বা ফাটকায় প্রাপ্তি যোগ। খেলাধূলায় কৃতিত্ব। বাক্যে ও ... বিশদ
দীর্ঘ সাত বছর পর মোহন বাগান তাঁবুতে পা দিয়ে হোসে রামিরেজ ব্যারেটো প্রচণ্ড স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়েন। সেটাই স্বাভাবিক। তাঁকে ঘিরে সোমবার সকালে সমর্থকদের মধ্যেও দেখা গেল আবেগ। সেই পরিচিত ধ্বনি, ‘ শীত-গ্রীষ্ম- বর্ষা, ব্যারেটাই ভরসা।’ কেউ তাঁর পায়ে শরীর ছুঁড়ে দিয়ে বললেন,‘আপনিই আই লিগে দলের দায়িত্ব নিন। টিম পুরো বদলে যাবে।’ কারও মন্তব্য, ‘সাত দিন কেন, সাত সপ্তাহ থাকুন। সবুজ-মেরুন জার্সি পরে কীভাবে নিজেদের মোটিভেট করতে হয় তা সালভা চামোরো-ড্যানিয়েলদের বুঝিয়ে দিন।’ আবেগপ্লুত ব্যারেটো পাল্টা হাত নাড়েন সমর্থকদের দিকে।
সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ব্রাজিলিয়ান তারকাটি বলেন,‘ মোহন বাগান তাঁবুতে এসে পুরানো দিনের কথা মনে পড়ছে। আমার জীবনে এই ক্লাবের ভূমিকা খুবই অর্থবহ। অনেক স্মরণীয় ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে আমি। সমর্থকদের ভালোবাসা পেয়েছি। এখনও দেখছি আমার টানে অনেকে এসেছেন। সমর্থকদের এই আবেগ দেখে আমার দায়িত্ব বাড়ল। আমি এখানে এসেছি শিক্ষানবিশ কোচ হিসাবে। কিবু ভিকুনা স্প্যানিশ কোচ। বিশ্ব ফুটবলে স্পেন একটা বড় ফ্যাক্টর। সেই দেশের শিক্ষিত কোচের সঙ্গে সাত দিন কাজ করা নিঃসন্দেহে বড় অভিজ্ঞতার ব্যাপার। এই দলের অনেকেই অপরিচিত। তবে শিলটন, দেবজিৎ, আজহার ও আশুতোষকে চিনি। এই সাত দিনে আমি চেষ্টা করব লোয়াড়দের মানসিক দৃঢ়তা বাড়াতে।’
মোহন বাগান কর্তারা তাঁকে ‘ভবিয্যতের কোচ’ হিসাবে প্রজেক্ট করছেন। ব্যারেটো ভবানীপুর ক্লাব থেকে অবসর নেওয়ার পর এটিকের উপদেষ্টা হয়েছিলেন। তারপর এফএসডিএলের অ্যাকাডেমির কোচ। সেখানে তৃণমূল স্তরে কোচিং করানোর পাশাপাশি ‘বি’ লাইসেন্স করে নিয়েছেন তিনি। আগামী বছরের গোড়াতেই ‘এ’ লাইসেন্স করতে চাইছেন। তার আগে পরিবেশের সঙ্গে পরিচিত হতে মোহন বাগান টিমের সঙ্গে সাতদিন কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এদিন ব্যারেটো জানিয়ে দিয়েছেন, মোহন বাগান কোচের হট সিটে বসতে তৈরি তিনি। প্রসঙ্গক্রমে তাঁর মন্তব্য, ‘মোহন বাগানের হেড কোচ হিসেবে রিজার্ভ বেঞ্চে বসতে চাই। পেশাদার কোচ হলেও কলকাতায় কোচিং শুরু করতে চাই মোহন বাগান থেকেই। ইস্ট বেঙ্গলের কথা এখনই ভাবছি না।’
মোহন বাগানের শীর্ষ কর্তা ও সমর্থকদের প্রতি প্রাক্তন ব্রাজিলিয়ান তারকার ‘বার্তা’ বেশ স্পষ্ট। তবে এখনই কিবু ভিকুনাকে তাড়াতে পারবেন না কর্তারা। আপাতত যা পরিস্থিতি তাতে আই লিগের প্রথম ডার্বি পর্যন্ত স্প্যানিশ কোচই দায়িত্বে থাকছেন। ওই ম্যাচের ফলের উপর নির্ভর করছে কিবুর ভবিষ্যৎ। ব্যারেটো অবশ্য এদিন রঞ্জন চৌধুরির পাশে থেকে অনেকটা সহকারী কোচের ভূমিকা পালন করলেন। প্র্যাকটিসের বিভিন্ন সাজসরঞ্জাম বহন করেছেন হাসিমুখেই। তরুণ খেলোয়াড়দের দিয়েছেন পরামর্শ। আগামী ছ’দিন তাঁকে এই ভূমিকায় দেখা যাবে। অনেকের ধারণা, আই লিগে মোহন বাগান দল ভালো না খেললে ফিরতি পর্বে তাঁকে টিডি’র ভূমিকায় দেখা যেতে পারে।
এদিকে, সিকিম গভর্নর্স গোল্ড কাপে না খেললেও আই লিগের আগে মোহন বাগান তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে। এই প্র্যাকটিস ম্যাচগুলির প্রতিদ্বন্দ্বী দ্বিতীয় ডিভিসনের দলগুলির। কিবু ভিকুনা এই তিনটি ম্যাচ খেলতে চান সপ্তাহের শেষে। তিনি টেনিস সচিবকে অনুরোধ করেছেন ৯, ১৬ আর ২৩ নভেম্বর প্র্যাকটিস ম্যাচের জন্য উপযুক্ত টিম খুঁজতে। আইএসএলের রিজার্ভ দলের সঙ্গে ম্যাচ খেলতে চাইছেন না তিনি। চট্টগ্রামে সেমি-ফাইনালে চার গোল খাওয়া নিয়ে তিনি বলেন,‘মালয়েশিয়ান ক্লাবটি ছিল প্রচণ্ড শক্তিশালী। সেমি-ফাইনাল ছিল সবথেকে কঠিন ম্যাচ। দু’জন বিদেশি ডিফেন্ডার খেলিয়েও আমরা চার গোল খেয়েছি। আসলে ড্যানিয়েল সাইরাসকে সময় দিতে হবে। অন্যদের সঙ্গে বোঝাপড়া এখনও ওর গড়ে ওঠেনি।’ সালভা চামোরো কী চলবে? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,‘মানিয়ে নেওয়ার জন্য আরেকটু সময় পাওয়া উচিত ওর।’ মরশুমে ১৮টি ম্যাচ হয়ে যাওয়ার পরেও চামোরোদের মানিয়ে নেওয়ার জন্য কিবুর সময় চাওয়াটা একদিক থেকে হাস্যকর।