নিজস্ব প্রতিনিধি, নন্দীগ্রাম: ২০২১সালে নন্দীগ্রামে কারচুপি করে জিতেছে বিজেপি। এবার সেই কারচুপির জবাব দেওয়ার ভোট। বুধবার নন্দীগ্রামের বাইপাসে নির্বাচনী সভায় এই মন্তব্য করেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তমলুক লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যের সমর্থনে এদিন নন্দীগ্রামে সভা ছিল। সেই সভায় থেকেই এবারের ভোটকে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও প্রতিশোধের ভোট বলে উল্লেখ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আরও সংযোজন, কেন্দ্রীয় সরকারের বিদায় আসন্ন। এদের কেউ বাঁচাতে পারবে না। আগামী ২৫মে ভোট দিতে যাওয়ার সময় মাথায় রাখতে হবে, নরেন্দ্র মোদি সরকারের মেয়াদ আর মাত্র ১০দিন। তারপর দিল্লিতে পরিবর্তনের সরকারে বাংলা নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা নেবে। 
এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, নন্দীগ্রাম বিধানসভায় সাত-আটটা অঞ্চলে বিজেপি কারচুপি করার প্ল্যান করছে। ওইসব এলাকার ওদের কিছু লোক আমাদের সঙ্গে আছেন। তাঁরা‌ই আমাকে জানিয়েছে, ৮০টি বুথে জোর জবরদস্তি করে ভোট করানোর প্ল্যানিং করছে বিজেপি। ওরা মানুষকে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে বাধা দেবে। কোথাও বোমা মারবে, কোথাও শূন্যে গুলি চালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করবে। আমি বলছি, যদি কেউ ভোট দিতে বাধা দেয়, তাহলে হাতে যা থাকবে তাই নিয়ে বেরিয়ে আসবেন। একটাকেও ছাড়বেন না। নিজের ভোট নিজে দেবেন। তিনি বলেন, গত তিন বছর ধরে বিজেপি নন্দীগ্রামকে ছোট করেছে। নন্দীগ্রামের মানুষই ভোটাধিকার প্রয়োগ করে এর যোগ্য জবাব দিতে পারবেন। এটা নন্দীগ্রামের সম্মান, কৃষ্টি ও মর্যাদা রক্ষার ভোট। যাঁরা এই মাটির আবেগকে দিল্লির বুকে বিক্রি করেছেন, তাঁদের উচিত শিক্ষা দেওয়ার ভোট। 
অভিষেক বলেন, আজকে রামমোহন রায়ের জন্মদিন। তাই আজকে আমরা শপথ নেব। তিনি গোটা দেশকে পথ দেখিয়েছেন। আমরা এই রামে বিশ্বাস করি। আমরা যোগী আদিত্যনাথের হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস করি না। স্বামী বিবেকানন্দের গেরুয়া ধর্মে বিশ্বাস করি। আমরা অমিত শাহের গেরুয়া ধর্মে বিশ্বাস করি না। বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যে বিশ্বাসী। বিভাজন কিংবা বৈষম্যে বিশ্বাস করি না। যারা বাংলার অপমান করেছে, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছে এবং স্বামী বিবেকানন্দকে অজ্ঞ বামপন্থী প্রোডাক্ট বলেছে তাদের জবাব দিতে হবে এই ভোটে। 
তিনি বলেন, ১০বছর আগে রান্নার গ্যাসের দাম ছিল ৪০০টাকা। আজ সেই গ্যাসের দাম এক হাজার টাকা। এক লিটার কেরোসিনের দাম ছিল ১৭টাকা। আজ তার দাম ৭৫টাকা। জীবনদায়ী ২০০টাকা ওষুধের দাম বেড়ে  হয়েছে ১২০০টাকা। এটাই বিজেপি সরকারের গরিবদরদি রূপ। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক হাজার টাকা দিচ্ছেন। আর মোদি সরকার গ্যাসের দাম এক হাজার করে দিয়ে সে‌ই টাকা নিয়ে নিচ্ছে। এই বিজেপি বাংলার মায়েদের অপমান করেছে। এরা দেশের ১৪০কোটি মানুষের কাছে বাংলার মাথা হেঁট করে দিয়েছে। তাই ওদের একটা ভোটও নয়। আগামী ৪জুন ইভিএম খোলার সময় পদ্মফুলের নেতারা  চোখ সর্ষেফুল দেখবেন।