সন্তানের দাম্পত্য অশান্তিতে মানসিক চিন্তা। প্রেম-প্রণয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ ও মনঃকষ্ট। ব্যবসার অগ্রগতি। ... বিশদ
সোনা অতি দুঃস্থ পরিবারের সন্তান। বাবা দ্বিজপদ বাউড়ি স্থানীয় রাজনগর, জয়পুরের হাটে হাতে বোনা বাঁশের ঝুড়ি বিক্রি করে সংসার চালান। চাষের জমি বলতে তেমন কিছু নেই। বর্গা জমি চাষ করে কোনও রকমে সংসার চলে। সোনার দাদাও কাজের টানে বাইরে চলে গেছেন। আর্থিক অনটন সোনাদের নিত্যসঙ্গী। কিন্তু পড়াশোনায় তার ছাপ তিনি পড়তে দেননি। সকলের সঙ্গে টিউশন পড়তে গিয়েছেন। নিয়মিত স্কুলে গিয়েছেন। আর পাঁচজনের মতো খেলাধুলো ও বাড়ির চাষের কাজেও সহযোগিতা করেছেন। উচ্চ মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশের দিন দেখা গেল সোনা স্কুলে দ্বিতীয় হয়েছেন। কলাবিভাগের নিরিখে প্রথম। বাংলায় ৯৫, শিক্ষাবিজ্ঞানে ৯২ পেয়েছেন। কিন্তু এত ভালো সাফল্যের পরও সোনা অনার্স নেবেন না বলে মনস্থির করেছেন। কেন না, আর্থিক সঙ্কট তাঁকে চিন্তায় রেখেছে। তিনি বলেন, ভালোভাবে পড়াশোনা করার চেষ্টা করে গিয়েছি সবসময়ে। ছোট থেকেই আর্থিক অনটন রয়েছে। তবুও বাড়ি থেকে সাপোর্ট পেয়েছি। এরপর চাকরি পাওয়ার জন্য পড়াশোনা করব। অনার্স করতে পারব না। পাস কোর্সে পড়াশোনা করব বলে ভেবেছি। তাড়াতাড়ি চাকরি পেতে চাই একটা। তাহলে সংসারে টাকা দিতে পারব। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কৌশিক দত্ত বলেন, সোনার সাফল্যে আমরা অত্যন্ত খুশি। ও অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। যেভাবে প্রত্যন্ত এলাকাতে ভালো রেজাল্ট করেছে তাতে আগামী বছর অনেক পড়ুয়া ভালো রেজাল্টের জন্য মন দিয়ে পড়াশোনা করবে।
জানা গিয়েছে, রাজনগর হাইস্কুলের উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল যথেষ্ঠ ভালো। স্কুলের প্রথম হয়েছেন শুভম পাল। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৬৮। এরপর সোনা ৯০ শতাংশের উপর নম্বর পেয়েছে। এছাড়াও তনুশ্রী চৌধুরী ৪৫০ নম্বর পেয়েছেন। এঁরা প্রত্যেকেই দুঃস্থ পরিবারের সন্তান। প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলের এই সাফল্য জেলাতে বেশ নজর কেড়েছে। এর মধ্যে শত কষ্টের মধ্যেও সোনার সাফল্যের গল্প শোনা যাচ্ছে সর্বত্র।