সন্তানের দাম্পত্য অশান্তিতে মানসিক চিন্তা। প্রেম-প্রণয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ ও মনঃকষ্ট। ব্যবসার অগ্রগতি। ... বিশদ
মামলার তদন্তে ঢিলেমির জন্য এদিনও ফের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীর তোপের মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তিনি অফিসারের কাছে জানতে চান, দু’টি চার্জশিট জমা করেছেন। আর কোনও চার্জশিট দেবেন? উত্তরে সিবিআই বলে, কিছুদিনের মধ্যেই একটি চার্জশিট জমা পড়বে। তারপর কি আরও পড়তে পারে? সিবিআই উত্তরে জানায়,‘দেখা যাক’। এরপরই বিচারক উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, ‘আর দেখা যাক বলে ছেড়ে দিলে হবে না। কিছু করতে হবে। কত দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে চূড়ান্ত চার্জশিট দিতে পারবেন বলুন। ১৫ দিন ২০ দিন, প্রয়োজনে একমাস নিন।’
এদিন সিবিআই আদালতে জানায়, একজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিটে নাম রাখতে সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গেও বিচারক বলেন, ‘এফআইআরে নাম থাকা অভিযুক্ত। তাঁর অফিসের অনুমোদন চাইতে সাড়ে তিন বছর সময় লাগল? আগে কেন চাওয়া হয়নি। তদন্ত শেষ করার পর অভিযুক্তর অফিস থেকে অনুমোদন নিতে হবে, এমন তো নয়।’এদিন অভিযুক্তদের সবাই আদালতে হাজির ছিলেন না। তার উপর মামলার যাবতীয় তথ্য ছিল না। কয়েকটি পিটিশনের নিস্পত্তিও হয়নি। তাই কয়লা পাচার কাণ্ডের মামলার চার্জ গঠিত হয়নি। ৩ জুলাই ফের চার্জ গঠনের দিন ধার্য করেছন বিচারক। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আদালতে গরহাজির ছিলেন দুই অভিযুক্ত নারায়ণ খাড়গা ও জয়দেব মণ্ডল। পরবর্তীতে যে কোনও অবস্থায় তাঁদের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিন সিবিআই লালাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার আর্জি জানিয়েছে। বিচারক তাঁদের আবেদনে সম্মতি দিয়েছেন।
২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর কয়লা পাচার কাণ্ড প্রথম প্রকাশ্যে আসে। রাজ্য জুড়ে আলোড়ন পড়ে। তখনই জানা যায়, কয়লা পাচারের মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ও ইসিএলের শীর্ষ বেশ কয়েকজন পদাধিকারীর নামে এফআইআর দায়ের করে মামলা রুজু করে। কয়লা খনি অঞ্চলজুড়ে শুরু হয় সিবিআই অভিযান। বিজেপি ও তৃণমূল নেতাদের নামও জড়িয়ে যায়। তারপর দামোদর দিয়ে বহু জল গড়িয়ে গিয়েছে। প্রায় সাড়ে তিন বছর পরেও কোনও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা গ্রেপ্তার হননি। এমনকী এখনও পর্যন্ত জমা পড়া চার্জশিটে শাসক দলের কোনও শীর্ষ নেতা, মন্ত্রীর নাম নেই। ইসিএল, সিআইএসএফ আধিকারিকদের নাম থাকলেও এখনও নাম নেই রাজ্যের কোনও পুলিস অফিসারের। একাধিকবার সিবিআইয়ের এই গড়িমসির ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিচারক। এদিনও তিনি তদন্তকারীদের কড়া কথা শুনিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হোক।
কিন্তু এদিন এজলাসে তদন্তকারীদের এই টালবাহানা দেখে অভিযুক্তদের আইনজীবীদের আশঙ্কা, আদৌ কী এই মামলার কিছু হবে? একজন বর্ষীয়ান আইনজীবী কৌতুক করে বলেন, আমার জীবদ্দশায় যেন ট্রায়ালটা দেখে যেতে পারি। সব শুনে বিচারকের প্রতিক্রিয়া, এই মামলায় আর কিছু হবে না, এই ধারনাটা ভাঙতে চাই। এত সহজে ছাড়ব না। চেষ্টা করে যাব। অভিযুক্ত বয়স্ক মানুষরা দীর্ঘদিন জেলে রয়েছেন। অথচ, তাঁরা সময় মতো ট্রায়ালের সুযোগ পাবেন না, তা হয় না।