বিদ্যার্থীদের পঠন-পাঠনে আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের কর্মপ্রাপ্তির যোগ। বিশেষত সরকারি বা আধা সরকারি ক্ষেত্রে যোগ প্রবল। ... বিশদ
এব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি জেলাশাসক বিভু গোয়েল। স্বাস্থ্য দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত জেলা আধিকারিক বিশ্বজিৎ ঢ্যাংকে ফোন করা হলে তিনিও প্রশ্ন শুনে আর কথা বলতে রাজি হননি। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এনিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা করতে আমি রাজি নই। এগুলি একেবারে বিভাগীয় বিষয়।
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর, চিকিৎসকদের শোকজ করার ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে নদীয়া জেলার স্বাস্থ্য মহলে। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের এক কর্তা বলেন, চিকিৎসক অপ্রতুল হওয়ায় চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ন্যূনতম ব্যবস্থা নেওয়ার নজির এখন প্রায় নেই বললেই চলে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এমন পদক্ষেপ অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তাদের একাংশ। উল্লেখ্য, গত ২৮ জানুয়ারি খোদ জেলাশাসক রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের রেফার করার প্রবণতা দেখে সন্তুষ্ট হননি। নির্দিষ্ট কয়েকজন চিকিৎসক রোগীদের বার বার রেফার করছেন এমন বিষয় ধরা পড়েছে তাঁর চোখে। আরও একাধিক আধিকারিকের চোখে উঠে আসে চিকিৎসকদের চরম গাফিলতি, অবহেলার চিত্র। সে সময় থেকেই বেশ কয়েকজন চিকিৎসককে নজরে রাখা হয়েছিল।
তার আগে প্রসূতির মৃত্যু কমাতে সব হাসপাতালে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সমস্ত প্রশাসনিক আধিকারিককে মাঠে নামানোও হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, প্রসূতি মৃত্যু কমাতে ২৫টির বিষয়কে সামনে রাখা হচ্ছে। রাজ্য এবং জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে এব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রেফারের ক্ষেত্রে ব্যাপক কড়াকড়ি করা হয়েছে। যেমন, কোনও চিকিৎসক প্রসূতিকে কোথাও রেফার করলে সেখানকার চিকিৎসকের সঙ্গে ফোনে কথা বলে নিতে হবে। এব্যাপারে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রেফার করার ক্ষেত্রে যে রেজিস্টার স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে বার বার ভালো করে রক্ষা করার কথা বলা হয়েছে, সেক্ষেত্রে গাফিলতি থেকে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। নয়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, প্রত্যেকমাসে হাসপাতাল সুপার, বিএমওএইচরা এই রেফার সংক্রান্ত অডিটে বসবেন। এছাড়াও প্রসবের পর প্রসূতিদের কড়া নজরদারির মধ্যে রাখতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত আর্থিক বছরে এপ্রিল থেকে মার্চের মধ্যে প্রসূতি মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৬৭টি। এবার এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রসূতি মৃত্যুর সংখ্যা ৫১ ছুঁয়েছিল। স্বাভাবিকভাবে গড় হিসাবে ধরে নেওয়া হচ্ছে গতবারের চেয়ে সংখ্যাটা এবার বেড়ে যাবে। প্রসূতি মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ার পিছনে কিছু ক্ষেত্রে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সাব সেন্টার, ব্লক হাসপাতাল বা জেলা হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবার মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কী পরিস্থিতিতে প্রসূতিকে রেফার করা হচ্ছে, তার উপর আদৌ নজরদারি থাকছে কি না, উঠছে সে প্রশ্নও।
তবে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মীদের একাংশ বলছেন, ব্যবস্থা নেওয়া হলে সেটা প্রকাশ্যে আনা হোক। এই নিয়ে এত লুকো চাপা কেন করা হচ্ছে? স্বাস্থ্য দপ্তর ব্যবস্থা নিচ্ছে জানলে মানুষের মধ্যেই আস্থা বাড়বে। যে সমস্ত চিকিৎসক মর্জিমাফিক কাজ করছেন, তাঁদের মধ্যেও কিছুটা ভয়ের সঞ্চার হবে। এটাও দরকার আছে। প্রসূতি মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার পর একাধিক নার্সিংহোমে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে পরিদর্শন চালানো হয়েছিল। পাঁচটি নার্সিংহোমে বন্ধের নির্দেশ দিতে অন্যান্য নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষও নিজেদের সংশোধনের চেষ্টা করছে। ফলে পদক্ষেপের বিষয়টি যথাযথভাবে সামনে আনা হোক। তাহলে কারও কোনও গাফিলতি থাকলে আগেভাগে সচেতন হতে পারবে।