সংবাদদাতা, আরামবাগ: শুক্রবার আরামবাগে ষষ্ঠশ্রেণীর এক ছাত্রকে অপহরণের অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতের নাম শেখ রিয়াসউদ্দিন ওরফে বাঁকা। তার বাড়ি আরামবাগ থানা এলাকার দক্ষিণ নারায়ণপুর গ্রামে। মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ধরে ওই দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। শুক্রবার রাতে পুরশুড়ার চিলাডাঙি এলাকা থেকে ওই দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি অপহৃত ছাত্রকেও উদ্ধার করে পুলিস। শনিবার সকালে তাকে আরামবাগ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক চারদিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আরামবাগ থানা এলাকার আরাণ্ডি-২ অঞ্চলের পুরা গ্রামে ওই ছাত্রের বাড়ি। সে স্থানীয় পুরা হাইস্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র। প্রতিদিনের মতো শুক্রবার সে স্কুলে যায়। দুপুরে টিফিন খাওয়ার পর সে মাঠে খেলছিল। তখন রিয়াসউদ্দিন তাকে অপহরণ করে বাইকে চাপিয়ে একটা ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যায় এবং ওই ছাত্রের বাড়িতে ফোন করে নগদ ২ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে ওই ছাত্রকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এরপর ছেলের খোঁজ না পেয়ে ওই ছাত্রের মা আরামবাগ থানার দ্বারস্থ হন। তিনি পুরো বিষয়টি আরামবাগ থানায় লিখিত আকারে জানান। বিষয়টি শুনেই দ্রুত পদক্ষেপ নেন আরামবাগ থানার আইসি পার্থসারথি হালদার। যে মোবাইল নম্বর থেকে রিয়াসউদ্দিন ওই ছাত্রের বাড়িতে ফোন করছিল। সেই নম্বরের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করা হয়। পরে ওই ছাত্রের মা, পুলিস ও র্যা ফকে সঙ্গে নিয়ে সাদা পোশকে আইসি চিলাডাঙিতে হানা দেন। সেখানেই হাতে নাতে ধরা পড়ে রিয়াসউদ্দিন। উদ্ধার করা হয় ওই ছাত্রকে। বাজেয়াপ্ত করা হয় একটি বাইক। এরপর পুলিস রিয়াসউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে আরামবাগে নিয়ে আসে। শনিবার সকালে তাকে আরামবাগ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক চারদিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
এদিকে, স্কুল চলাকালীন মাঠ থেকে এক ছাত্রকে অপহরণের ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে অভিভাবকরা। তাঁদের অভিযোগ, স্কুল থেকে এক ছাত্রকে তুলে নিয়ে যাওয়া হল অথচ স্কুল কর্তৃপক্ষ এবিষয়ে কিছু জানতে পারল না, তাহলে ছেলে মেয়েদের নিরাপত্তা কোথায়। যদিও এবিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনন্দমোহন কুণ্ডু বলেন, টিফিনের সময় বিষয়টি হয়েছিল। আমরা ঘটনাটি ফোনে পুলিসকে জানিয়েছিলাম। পুলিস এসে তদন্ত করে গিয়েছে।
ওই ছাত্রের মা বলেন, ওই দুষ্কৃতী আমাদের বাড়িতে ফোন করে বলে, আপনাদের ছেলে আমার কাছে রয়েছে। ২ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ না দিলে ওকে প্রাণে মেরে ফেলব। ওর বাবা বাইরে রয়েছে। আমরা পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেও ওর সন্ধান পাইনি। এরপর থানার দ্বারস্থ হয়। পরে পুলিস ওই দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করে। পাশাপাশি ছেলেকে উদ্ধার করে।
এবিষয়ে আরামবাগের এসডিপিও নির্মলকুমার দাস বলেন, আমাদের কাছে লিখিতভাবে অপহরণের অভিযোগ জমা পড়েছিল। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ছাত্রকেও সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কি না তা জানার জন্য অভিযুক্তকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।