বিদ্যার্থীদের পঠন-পাঠনে আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের কর্মপ্রাপ্তির যোগ। বিশেষত সরকারি বা আধা সরকারি ক্ষেত্রে যোগ প্রবল। ... বিশদ
উত্তরবঙ্গের পাঁচটি জাতীয় উদ্যান, তিনটি অভয়ারণ্য, দু’টি চিড়িয়াখানা, দক্ষিণ খয়েরবাড়িতে একটি ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্র থাকা সত্বেও স্থায়ী ও পূর্ণাঙ্গ বন্যপ্রাণী হাসপাতাল এখানে নেই। বন্যপ্রাণীর রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে দেখার পরীক্ষাগারও এই অঞ্চলে নেই। গণ্ডারের মৃত্যুর ঘটনায় দিশাহারা বনকর্মীদের একাংশ তাই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। এই অবস্থায় উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণীদের কথা ভেবে উত্তরবঙ্গে এবার একটি পূর্ণাঙ্গ পশু হাসপাতাল তৈরির দাবি জোরালো হচ্ছে। রাজ্যের প্রাণিসম্পদ দপ্তরও উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণীদের ও বনদপ্তরের অসহায়তার কথা ভেবে দ্রুত উত্তরবঙ্গে একটি পূর্ণাঙ্গ পশু হাসপাতাল তৈরির প্রস্তাব নবান্নে পাঠানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে।
বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পরীক্ষাগারের রিপোর্ট যেহেতু বলেছে অ্যানথ্রাক্সের সংক্রমণে গণ্ডারগুলির মৃত্যু হয়নি তাই আমাদের এখন অন্যভাবে খুঁজে দেখতে হবে ঠিক কি কারণে প্রাণীগুলির মৃত্যু হল।
বনদপ্তরের প্রধান মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিংহ বলেন, ল্যাবের রিপোর্ট বলেছে অ্যানথ্রাক্সে গণ্ডারদের মৃত্যু হয়নি। তা সত্ত্বেও গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। নতুন করে কোনও গণ্ডারও মারা যায়নি বা অসুস্থ হয়নি। পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে জাতীয় উদ্যানে।
রাজ্যের প্রাণিসম্পদ দপ্তরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, জলদাপাড়ায় আমরা বনদপ্তরকে ক্রমাগত সাহায্য করে যাচ্ছি। উত্তরঙ্গের বন্যপ্রাণীদের স্বার্থে উত্তরবঙ্গে একটি পূর্ণাঙ্গ পশু হাসপাতাল তৈরি করা যায় কি না তারজন্য একটি প্রস্তাব নবান্নে পাঠাচ্ছি।
এদিকে নতুন করে কোনও গণ্ডারের মৃত্য বা কোন গণ্ডারের অসুস্থতার খবর না মিললেও বনদপ্তর জাতীয় উদ্যানের শিসামারা ও মালঙ্গি বিটের জঙ্গলে ড্রোন দিয়ে নজরদারি চালাচ্ছে। গত ২৭ বছরে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে একসপ্তাহে পাঁচটি গণ্ডারের মৃত্যুর কোনও রেকর্ড নেই। ১৯৯৩ সালে এই জাতীয় উদ্যানে শেষবার অ্যানথ্রাক্সের সংক্রমণ হয়। সেসময় জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ১৯টি গণ্ডারকে অ্যানথ্রাক্সের টিকা দেওয়া হয়েছিল।
জাতীয় উদ্যানের ডিএফও কুমার বিমল বলেন, আমরা দিনরাত কাজ করছি। গণ্ডারের পাশাপাশি অন্য প্রাণীদের উপরেও ড্রোন দিয়ে নজরদারি চালানো হচ্ছে। শিসামারা ও মালঙ্গি বিটের জঙ্গলে ফেন্সিং দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।
এদিকে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের উদ্ভূত এই পরিস্থিতিতে এবার বক্সার জঙ্গলেও হাইঅ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। বক্সার পশ্চিম ও পূর্ব দু’টি ডিভিশনের ১৪টি রেঞ্জকে এই অ্যালার্টের আওতায় আনা হয়েছে।
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পশ্চিম ডিভিশনের উপক্ষেত্র অধিকর্তা কল্যাণ রাই বলেন, জলদাপাড়া ও বক্সা দুই জঙ্গলের প্রাণীদেরই দুই জঙ্গলে যাতায়াত আছে। সেজন্য বক্সার ১৪টি রেঞ্জকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
রাজ্যের বন্যপ্রাণ শাখার উত্তরবঙ্গের প্রধান মুখ্য বনপাল উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, আমরা প্রাণিসম্পদ দপ্তরকে তো জোর করতে পারি না। তবু বিপদে পড়লে প্রাণিসম্পদ দপ্তরেরই দ্বারস্থ হতে হয় আমাদের। আমাদের এভাবেই চলতে হচ্ছে। দক্ষিণ খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রে কেন স্থায়ী চিকিৎসক নেই তা জানতে চেয়ে সেন্ট্রাল জু অথরিটি কড়া চিঠি দিচ্ছে। কিন্তু আমাদের হাতে এর কোনও জবাব নেই।