নতুন কোনও কর্ম পরিকল্পনায় সাফল্যের ইঙ্গিত। লটারি বা ফাটকায় প্রাপ্তি যোগ। খেলাধূলায় কৃতিত্ব। বাক্যে ও ... বিশদ
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার গভীর রাতে ইসলামপুর পুলিস জেলার চাকুলিয়া থানার খোকসা গ্রামে আইনুল হকের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ড হয়। সেসময় একই ঘরে পার্টিশন দেওয়া দরমার বেড়ার দু’দিকে বাবা-মা ও তাদের পালিতা মেয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। একদিকে আইনুল হক(৫৫) ও তাঁর স্ত্রী মজিবুন নেসা(৪৫) ঘুমিয়ে ছিলেন। অন্য দিকে তাঁদের পালিতা কন্যা নিলুফার খাতুন(২২) ঘুমিয়ে ছিলেন। ঘরের মধ্যে অগ্নিদগ্ধ হয়ে আইনুল মারা যান। পরে পূর্ণিয়ার একটি হাসপাতালে তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়। অগ্নিদগ্ধ নিলুফার খাতুনও চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার গভীর রাতে হাসপাতালে মারা যান। পুলিস জানিয়েছে, এই ঘটনায় মোট চার জনের নামে এফআইআর হয়েছে। এরমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম, জমিরুদ্দিন ওরফে ফরিদ, জাহিদ ও নুর আফরোজ। এরা আইনুলের ভাইয়ের ছেলে। তারা খোকসা এলাকারই বাসিন্দা।
ইসলামপুর পুলিুস জেলার এসপি সচিন মক্কর বলেন, ফায়ার ব্রিগেডের প্রাথমিক রিপোর্টে আমরা মনে করেছিলাম শর্ট সার্কিটের কারণে আগুন লেগেছে। পরে তদন্তে দেখা যায় ঘটনা অন্যরকম হতে পারে। নিলুফার মৃত্যুর আগে ফরিদের নাম বলেছে। মৃতদের এক আত্মীয়ের তরফে এনিয়ে অভিযোগও হয়েছে চার জনের নামে। আমরা তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি। ফরেন্সিক টিম দিয়ে ঘটনার তদন্ত করানো হবে। অগ্নিদগ্ধ ঘরটি সিল করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ফরেন্সিক দল আসবে। ডালখোলা দমকল কেন্দ্রের ওসি জিডি গেডাইলি বলেন, আগুন নেভানো আমাদের কাজ। আগুনের খবর পেয়ে গিয়েছিলাম। ঘরের ভেতরে অনেক বিদ্যুতের তার ঝুলেছিল। সেজন্যই প্রাথমিকভাবে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছিল বলে মনে হয়েছিল।
ঘটনার দিন স্থানীয় বাসিন্দা ও নিকট আত্মীয়দের একাংশ অভিযোগ তুলেছিল আগুন এমনিতে লাগেনি, চক্রান্ত করে আগুন লাগানো হয়েছিল। পুলিসও তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত জানতে পেরেছে সম্পত্তির জন্য এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত দম্পতির অনেক জমি-জায়গা আছে। তাঁরা নিঃসন্তান ছিলেন। তাঁরা নিকট আত্মীয়ের মেয়ে নিলুফারকে পালিতা হিসেবে নিয়েছিলেন। নিলুফার কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ত। পরিবার থেকে পার্শ্ববর্তী এলাকার এক যুবকের সঙ্গে তাঁর বিয়ে ঠিক হয়। নিলুফারের বিয়ে ঠিক হওয়ার সময় আইনুল হক কিছু জমি বিক্রি করেন। সেসময় তাঁর ভাইয়ের পরিবার বাধা দিয়েছিল। তাঁরা চাইছিল নিলুফারকে অন্যত্র বিয়ে না দিয়ে পরিবারের মধ্যেই কারও সঙ্গে বিয়ে দিতে। তাহলে জায়গা-জমি হাতছাড়া হবে না। সবই তাদের থাকত। কিন্তু আইনুল সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতেই তাদের তিনজনকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। দুষ্কর্মের জন্য দুষ্কৃতীরা সম্ভবত দাহ্য তেল ব্যবহার করেছিল। স্থানীয়রা জানিয়েছে, রাতে আগ্নিসংযোগের সময় যাতে কেউ বেরিয়ে যেতে না পারে সেজন্য ঘরের দরজা বাইরে থেকে লাগিয়ে দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা।