লন্ডন, ২৯ মার্চ (পিটিআই): করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে কেন্দ্র আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার জেরে বিপাকে পড়েছেন ব্রিটেনে পড়তে যাওয়া শতাধিক ভারতীয় ছাত্র। বাধ্য হয়ে তাঁরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে আবেদন জানিয়েছেন, যাতে জরুরি উড়ানে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে প্রায় ৩৮০ জন ভারতীয় ছাত্র নিজেদের পাসপোর্টের তথ্যের সাহায্যে একটি তথ্যপঞ্জি তৈরি করেছেন, যাতে তাঁরা সমবেতভাবে ভারত সরকারের কাছে নিজেদের বার্তা পৌঁছে দিতে পারেন। তাঁদের মধ্যে কেরলের একদল ছাত্র উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ডের সাউথ টাইনসাইড কলেজের পড়ুয়া। তাঁরা মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করেছেন। চলতি সপ্তাহেই ম্যানেজমেন্ট স্তরের পরীক্ষা দিয়ে তাঁদের দেশে ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু ২৩ মার্চ পরীক্ষা বাতিল করে দেওয়া হয়। ততক্ষণে বিমান পরিষেবা বন্ধের ঘোষণা হয়ে গিয়েছিল। ফলে দেশে ফিরে আসার উপায়ও ছিল না বলে জানিয়েছেন ওই দলের সদস্য অখিল ধর্মরাজ। অখিল ও তাঁর বন্ধুরা জানেন না, তাঁদের পরীক্ষা কবে নেওয়া হবে। আপাতত বিভিন্ন অ্যাপার্টমেন্ট এবং হোটেলে সেল্ফ আইসোলেশনে তাঁদের দিন কাটছে। সুপারমার্কেটে জরুরি সামগ্রী কিনতে গেলেও লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। তাছাড়া সেখানে অধিকাংশ সামগ্রীই ইতিমধ্যে ফুরিয়ে এসেছে৷ সম্প্রতি সিডনিতে আটকে পড়া ভারতীয়দের একটি বিমানে করে কোচিন আনা হয়। ধর্মরাজরা তাই প্রশ্ন তুলেছেন, তাঁদের এখনও কেন এভাবে বিদেশে ফেলে রাখা হয়েছে?
বাধ্য হয়ে লন্ডন ও স্কটল্যান্ডের ভারতীয় ছাত্ররা মিলে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলেছেন। ৩২ বছর বয়সি ধর্মরাজ জানান, ‘গ্রুপ খোলামাত্র সদস্যসংখ্যা বেড়ে যেতে থাকে। আমাদের অধিকাংশের কাছেই স্বল্প সময়ের ভিসা রয়েছে। তাছাড়া নিজেদের পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হয়।’ যদিও ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ভিনদেশের পড়ুয়াদের ভিসার মেয়াদ ৩১ মে পর্যন্ত বাড়ানো হবে। এটা স্বস্তির খবর হলেও থাকা-খাওয়ার সমস্যা কীভাবে মিটবে, তা কেউ বুঝতে পারছেন না। হোটেলে ঠাসাঠাসি অবস্থায় থাকলে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কাও রয়েছে। আতান্তরে পড়া কোভেন্ট্রি ইউনিভার্সিটির ছাত্র মর্গেশ রাজ তাই বাধ্য হয়ে ট্যুইটারে নরেন্দ্র মোদির কাছে আর্তি পৌঁছে দিয়েছেন। এমতাবস্থায় লন্ডনে ভারতের হাই কমিশনের পক্ষ থেকে আটকে পড়া ভারতীয়দের যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।