সন্তানের দাম্পত্য অশান্তিতে মানসিক চিন্তা। প্রেম-প্রণয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ ও মনঃকষ্ট। ব্যবসার অগ্রগতি। ... বিশদ
এবার বিজেপির পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন আদিবাসী কুড়মি সমাজের নেতা অজিত মাহাত। তিনি নিজে প্রার্থী হওয়ায় লড়াইটা এবার সরাসরি। পুরুলিয়া ছাড়াও বাঁকুড়া, মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামে ভোটের ময়দানে রয়েছেন কুড়মি সমাজের প্রথম সারির নেতারা। অজিত মাহাতর কথায়, ‘কেন্দ্রীয় সরকার কুড়মি সমাজের দাবি পূরণ করবে, এই আশায় কুড়মিরা উনিশে বিজেপিকে ভোট দিয়েছিল। কিন্তু পাঁচ বছর আমাদের জন্য কেউ কোনও কথা বলেননি। তাই নিজেদের কথা বলতে আমরা ভোটে দাঁড়িয়েছি। যারা কুড়মিদের বঞ্চিত করে অন্য জেলার ছেলেদের পুরুলিয়ায় শিক্ষকের চাকরি দিয়েছে, তারা এবার মজা টের পাবে। সেটা বুঝেই ঝাল ঝাড়তে ওরা মাঠে নেমেছে।’
কুড়মি সমাজ ভোটে লড়ায় বঙ্গ বিজেপির চোখে সর্ষেফুল। তাদের দাবি, তৃণমূল কংগ্রেসের ‘বি’ টিম হিসেবে ওরা প্রার্থী দিয়েছে। উদ্দেশ্য পরিষ্কার, বিজেপির ভোট কাটা। যদিও কুড়মিদের চটানোর কাজটা আগেই সেরে রেখেছিলেন দিলীপ ঘোষ। আন্দোলন পর্বে তাঁর কাছে কুড়মি নেতারা জানতে চেয়েছিলেন, ‘আমাদের দাবি নিয়ে আপনি নীরব কেন?’ উত্তরে দিলীপবাবু জানিয়েছিলেন, আন্দোলনকারী কুড়মিদের চাল, ডাল দিয়ে সাহায্য করেছেন। কিন্তু পাশাপাশি তাঁর গলায় ছিল হুমকি, ‘বেশি বাড়াবাড়ি করলে কাপড় খুলে নেব।’ গেরুয়া শিবিরের অন্দরের খবর, দিলীপবাবুকে মেদিনীপুর থেকে সরাতে কুড়মিদের ক্ষোভের বিষয়টিকেই হাতিয়ার করেছিল তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠী।
এরাজ্যে সবচেয়ে বেশি কুড়মি ভোট পুরুলিয়া জেলায়। ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুরেও প্রচুর তাদের জনসংখ্যা কম নয়। কুড়মি সমাজ পঞ্চায়েত ভোটে বেশ কিছু এলাকায় জিতেছে। এমনকী, পঞ্চায়েত দখলের নজিরও আছে। তবে লোকসভা ভোটে কুড়মি প্রার্থী জিতবেন, এমনটা প্রায় কেউই আশা করেন না। তবুও তাঁরা লড়ছেন। কুড়মিরা পাশ থেকে সরে গেলে কী হয়, বিজেপিকে সেটা বুঝিয়ে দেওয়াই তাঁদের লক্ষ্য।
বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিবেক রাঙার দাবি, ‘আদিবাসী-কুড়মি সমাজ প্রার্থী দিলেও বিজেপির ক্ষতি হবে না। তারা ভোট কাটবে তৃণমূলের। তাতে ভোটের ব্যবধান বাড়বে।’ যদিও স্থানীয়দের বক্তব্য ঠিক উল্টো, বিজেপির ভোটেই থাবা বসাবে আদিবাসী কুড়মি সমাজ। পুরুলিয়ার কুষ্টুকা গ্রামে দীপক মাহাত বললেন, ‘উনিশে ও একুশের ভোটে আমরা বিজেপিকে জিতিয়ে ছিলাম। কিন্তু এমপি, এমএলএ কেউই কুড়মিদের জন্য কিছুই করেননি। তাই এবার অজিতদার হয়ে ভোট করছি।’
কেন্দা থানার চান্দড়া গ্রামের সুবোধ মাহাত এক সময় সিপিএম করতেন। উনিশের গেরুয়া ঝড়ে তিনিও শামিল হয়েছিলেন বিজেপিতে। এখন তাঁর হাতে অজিত মাহাতর নির্বাচনী প্রতীক। সুবোধবাবু বলেন, এটা কুড়মিদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই। এই ভোটে অজিতদার জনসমর্থন কতটা, সেটা আমরা বুঝিয়ে দেব।
জঙ্গলমহলের আদিবাসী ভোট লোকসভা ভোটের পরই বিজেপির পাশ থেকে সরতে শুরু করেছিল। সেই কারণেই একুশের ভোটে একমাত্র পুরুলিয়া জেলার বলরামপুর বাদ দিয়ে জঙ্গলমহলের সমস্ত আসনে হেরেছিল বিজেপি। এরপর যদি কুড়মি ভোটও সরে যায়? জঙ্গলমহলের সব আসনে মুখ থুবড়ে পড়বে বিজেপি।