কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
তাঁকে আমন্ত্রণ করে ডেকে এনে প্রাপ্য মর্যাদা দেওয়া হয়নি। গত শুক্রবার রেড রোডে দুর্গা কার্নিভালের প্রসঙ্গ টেনে রাজ্য প্রশাসনকে একহাত নিয়েছিলেন রাজ্যপাল ধনকার। যাদবপুর, শিলিগুড়ি, জিয়াগঞ্জ-কাণ্ডের জেরে তাঁর আচরণ নিয়ে রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছিলেন রাজ্যপাল। তাতে বাড়তি মাত্রা জুগিয়েছে কার্নিভাল বিতর্ক। উল্লেখ্য, কার্নিভালে সপরিবারে আমন্ত্রিত হয়ে রেড রোডে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। তাঁর অভিযোগ, সেখানে তাঁকে যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হয়নি। সরকারি টিভি সম্প্রচারে একবারের জন্যও তাঁর উপস্থিতির কথা জানানো হয়নি। ধনকারের দাবি, তাঁকে ‘ব্ল্যাকআউট’ করা হয়েছে। কার্নিভালের দিন চারেক পর তাঁর ওই মন্তব্যকে ঘিরে রাজ্য-রাজনীতি এখন সরগরম। তৃণমূল জিয়াগঞ্জের ঘটনার পর রাজ্যপালের বিবৃতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। দলের মহাসচিব তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় রাজ্যপালকে তাঁর সাংবিধানিক লক্ষ্মণরেখা মেনে চলার কথা বলেছিলেন। কিন্তু দুর্গা কার্নিভালের বিষয়ে তাঁর বিতর্কিত দাবি নিয়ে সরাসরি মুখ খুলতে চায়নি তৃণমূল। প্রশাসনিক স্তরেই মোকাবিলার কৌশল নিয়েছে নবান্ন। তারা অবশ্য রাজ্যপালকে অবহেলা করার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
এই নিয়ে শাসকদল ও রাজভবনের ঠোকাঠুকির মধ্যেই এদিন কংগ্রেস বস্তুত ধনকারের পক্ষেই সওয়াল করল। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, সংবিধান অনুযায়ী রাজ্যপালের পদটি সম্মানীয়। ব্যক্তি হিসেবে তাঁর কাজকর্ম নিয়ে বিতর্ক থাকটা অস্বাভাবিক নয়। তবে, তাঁর আসনের অসম্মান আদতে সংবিধানকে অমর্যাদার শামিল বলে মনে করেন সোমেনবাবু। তাঁর দাবি, রাজ্যপাল যদি ওই দিন অপমানিত বোধ করে থাকেন, তাহলে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয়।
এদিন গান্ধীজির সার্ধ জন্ম শতবার্ষিকী পালনের প্রসঙ্গে বিজেপির কড়া সমালোচনা করেন সোমেনবাবু। তিনি বলেন, হিন্দুত্ববাদের প্রবক্তা বীর সাভারকারকে মরণোত্তর ভারতরত্ন দেওয়ার কথা বলছে বিজেপি। পাশাপাশি গান্ধীজির আততায়ী নাথুরাম গডসের মূর্তি বসিয়ে পুজো করছে সঙ্ঘ পরিবার। একইসঙ্গে গান্ধীজির সার্ধ জন্ম শতবার্ষিকী পালনে ‘সংকল্প যাত্রা’ শুরু করেছে বিজেপি। রাজ্যের জেলায় জেলায় মঙ্গলবার থেকেই সেই কর্মসূচি শুরু হয়েছে। সোমেনবাবুর মতে, বিজেপি জনমানসে বিভ্রান্তি ছড়াতেই গান্ধীজিকে স্মরণের নাটক করছে। তাঁর মতে, সদ্য নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় দারিদ্র্য মোচনে যে গবেষণা করেছেন, তার সঙ্গে গান্ধীজির আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মডেলের কোনও বিরোধ নেই। সেই কারণেই গত লোকসভা ভোটে কংগ্রেস তাঁর পরামর্শে ‘ন্যায়’প্রকল্পের কথা বলেছিল। বিজেপি সেই কারণেই নোবেলজয়ী অভিজিতকে নিয়ে নানা কটাক্ষ করছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয় বলে মনে করেন সোমেনবাবু।