কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
পর্ষদ সূত্রের খবর, এনজিটি’র নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে গোটা দেশে ইটভাটার দূষণ কমাতে পরিবেশ-বান্ধব প্রযুক্তি চালু করার প্রক্রিয়া ২০১৫ সালে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের উদ্যোগে শুরু করা হয়। ২০১৭ সালের মধ্যে গোটা দেশে এই ব্যবস্থা করে ফেলারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু, সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও, এখনও সর্বত্র ইটভাটার প্রযুক্তি বদল করা সম্ভব হয়নি। এ’রাজ্যের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। পর্ষদের সংশ্লিষ্ট বিভাগের আধিকারিকদের দাবি, সরকারি খাতায় নথিবদ্ধ হিসেবে এ’রাজ্যে ৪৫০৬টি ইটভাটার হিসেব পাওয়া গিয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এখনও পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা তথ্য অনুযায়ী, ২০২৭টি ইটভাটায় ইতিমধ্যে এই প্রযুক্তি চালু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, রাজ্যের এখনও ৫০ শতাংশের বেশি ইটভাটাতে (২৪৭৫টি) এই প্রযুক্তি চালু করা সম্ভব হয়নি। গত মাসে এই সংক্রান্ত একটি মামলায় এনজিটি রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে, কোন কোন ইটভাটায় এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে? তা দ্রুত খতিয়ে দেখতে হবে। সেই সঙ্গে কোথাও এই প্রযুক্তি ব্যবহার না করা হলে, সঙ্গে সঙ্গে সেই ইটভাটাকে বন্ধ করে দিতে হবে। তারপরেই রাজ্যের পক্ষ থেকে চারটি ইটভাটাকে বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে পর্ষদের পক্ষ থেকে সমস্ত ইটভাটাগুলি কী অবস্থায় রয়েছে, সেবিষয়ে বিভিন্ন ডিভিশনের অফিসের কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। পর্ষদের এক কর্তা বলেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন ইটভাটা অ্যাসোসিয়েশনের কাছেও জানতে চাওয়া হয়েছে, কারা কারা এখনও পরিবেশ-বান্ধব প্রযুক্তি চালু করতে পারেনি। তিনি আরও জানান, ২৪৭৫টি ইটভাটা যেগুলি এখনও এই ব্যবস্থা চালু করেনি, তারা আগে পর্ষদকে জানিয়েছিল দ্রুত এই প্রযুক্তি চালু করবে। সেগুলি বর্তমানে কী অবস্থায় রয়েছে, সেবিষয়ে জেলা প্রশাসন, ইটভাটা অ্যাসোসিয়েশনের থেকে তথ্য নেওয়া হবে। একইসঙ্গে পর্ষদের বিভিন্ন জেলায় থাকা নিজস্ব অফিস থেকেও রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। সে পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হবে।
ওই কর্তার দাবি, নদীয়ার তেহট্ট এলাকার ওই চারটি ইটভাটা এখনও পর্যন্ত পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি চালু করেনি। এমনকী প্রযুক্তি বদলেরও কোনও প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। ইটভাটা মালিকরাও এবিষয়ে পর্ষদকে কোনও সদুত্তর দেয়নি। তাই এগুলিকে বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পর্ষদের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে যাতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়, সেবিষয়ে জেলা প্রশাসন, পুলিস এবং সংশ্লিষ্ট জেলা অফিসকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নদীয়া ইটভাটা অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম কর্তা অরুণ সরকার বলেন, একটি ইটভাটা ইতিমধ্যে প্রযুক্তি বদলের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। বাকিরা এখনও এবিষয়ে টানাপোড়েনের মধ্যে রয়েছে। তাঁদের পক্ষ থেকে সকলকে সচেতন করে দ্রুত প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। অন্যদিকে, বেঙ্গল ব্রিক ফিল্ড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অশোককুমার তেওয়ারি বলেন, পরিবেশবান্ধব যে প্রযুক্তি আনা হচ্ছে তা চালু করার জন্য যে পরিমাণ প্রশিক্ষিত কর্মী প্রয়োজন, তা রাজ্যে নেই। তাই সমস্যা হচ্ছে। তবে তারা সমস্ত ইটভাটা মালিকদের কাছে আবেদন করেছেন, যাতে দ্রুত এই প্রযুক্তি সর্বত্র চালু করা যায়।