সন্তানের দাম্পত্য অশান্তিতে মানসিক চিন্তা। প্রেম-প্রণয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ ও মনঃকষ্ট। ব্যবসার অগ্রগতি। ... বিশদ
কী হতে চলেছে? মিতালিদেবীর হাসিমুখে উত্তর, সবই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জাদু। চাঁপদানি বিধানসভা এলাকায় পোদ্দারঘাটের সামনে তৃণমূলের বুথ ক্যাম্পে বেশ কয়েকজন কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে বসেছিলেন মিতালিদেবী। টেবিলের উপর রাখা ছিল একটা পেল্লায় আকারের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। বাকিরাও বললেন, এবার কিন্তু ভোটের ইস্যু এই ভাণ্ডারটাই, আর কিছু না!
শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের ভোটে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মহিলাদের বিপুল যোগদানেই আত্মবিশ্বাসী দেখাল তৃণমূলকে। ভোটের আগে সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপরীতে থাকা বিজেপি প্রার্থী কবীরশঙ্কর বসু যত না আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন, তার চেয়ে বেশি নজর কেড়েছিলেন সিপিএমের প্রার্থী দীপ্সিতা ধর। তবে সোমবার বুথে বুথে যেভাবে দাপিয়ে ভোট করল তৃণমূল, তাতে অনেকটা ফিকে মনে হচ্ছিল লাল আর গেরুয়াকে। বহু জায়গাতেই বুথে বুথে সব দলের এজেন্ট ছিল ঠিকই। কিন্তু তাঁদের মনোবল হারিয়ে গিয়েছিল অনেকটাই।
চড়া রোদ ওঠার ভয়ে সকাল সাড়ে ছ’টা থেকেই লাইন পড়তে শুরু করেছিল কোন্নগর, উত্তরপাড়া, শ্রীরামপুরের বেশিরভাগ বুথে। তবে সময়ের সঙ্গে সেই ভিড় উধাও হয়ে যায়। কোথাও জনা দশেকের লাইন, তো কোথাও জনা বিশেকের। কোথাও আবার সেটুকুও নেই। এরপরে আকাশ জোড়া মেঘ বড় চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায় সব দলের কাছেই। ঝমঝমিয়ে দফায় দফায় বৃষ্টি ফাঁকা করে দিতে শুরু করে বুথ। বেলা বাড়লে ভোটারদের বুথে ফেরানো যাবে কি না, তা নিয়ে চিন্তা ছিল সব পক্ষের।
বেলা যত বেড়েছে, ফের ভোটারের ভিড় আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলিকে, বিশেষত তৃণমূলকে। মহিলারা যেভাবে দুপুর হতেই ফের বুথমুখো হয়েছেন, তাতে হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছে জোড়াফুল।
লোকসভা কেন্দ্রের নাম শ্রীরামপুর হলেও, এই বিধানসভা কেন্দ্রে বেশিক্ষণ সময় নষ্ট করেননি কোনও পক্ষের প্রার্থীই। বরং তাঁদের অনেক বেশি নজর ছিল জগৎবল্লভপুর, চণ্ডীতলা, ডোমজুড়ের মতো বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সকাল থেকেই এই এলাকাগুলিতে মাটি কামড়ে পড়েছিলেন। কখনও জওয়ানের শ্লীলতাহানি কাণ্ডে ভোটারদের পাশে থেকেছেন, তো কখনও উত্তেজনাপূর্ণ বুথে ছুটেছেন। কখনও তিনি গুনগুন করে গান গেয়েছেন, আবার কখনও খোশমেজাজে পার্টিকর্মীদের ভোকাল টনিক দিয়েছেন।
অন্যদিকে, দীপ্সিতা ধর কার্যত ডোমজুড় বিধানসভা কেন্দ্রকে ভোটের ভরকেন্দ্র করেছিলেন এদিন। সাতটি বিধানসভা এলাকায় ভোটের প্রার্থী তিনি, এমনটা তাঁর গতিবিধি দেখে একবারও মনে হয়নি। বরং বাঁকড়ার তিনটি পঞ্চায়েত এলাকাই তাঁর পাখির চোখ ছিল। কবীরশঙ্কর বসু জগদীশপুর, চামরাইল প্রভৃতি এলাকায় ঘুরে বেরিয়েই সময় কাটিয়েছেন। কখনও কখনও তৃণমূলের বিক্ষোভের মুখেও পড়েছেন। অন্যদিকে আইএসএফ বলে যে একটি দল আছে, তা এলাকা ঘুরে বোঝা যায়নি ফুরফুরা শরিফ অঞ্চলে। ভোটের দিনে তাদের এই ‘ভ্যানিস হয়ে যাওয়া’র মধ্যে অনেকেই রহস্যের সন্ধান পেয়েছেন। ভোটে কি তাহলে তৃণমূলই জিতছে? দলের জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁই দিনভর প্রবল ছোটাছুটির পর বাড়ির কাছাকাছি ঠাকুরদালানে বসে, আত্মবিশ্বাসের চওড়া হাসি হেসেছেন শুধু। মুখে বলেছেন, এমএলএ হবার আগে আমি নিজের জন্যও খাটিনি এতটা। আশা করি তার সুফল পাব।