পড়শির ঈর্ষায় অযথা হয়রানি। সন্তানের বিদ্যা নিয়ে চিন্তা। মামলা-মোকদ্দমা এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেমে বাধা।প্রতিকার: একটি ... বিশদ
দু’টি সরোবর বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শনিবার বেলা ৩টে পর্যন্ত বন্ধ ছিল। সেইসঙ্গে প্রত্যেকটি গেট এবং ফাঁকা জায়গা টিন এবং বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছিল। গতবছর রবীন্দ্র সরোবরে প্রবেশপথের তালা ভেঙে উৎসুক ভক্তদের একাংশের বেপরোয়া কার্যকলাপে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। যেটা পরিবেশ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। তারপর হাইকোর্ট হয়ে সুপ্রিম কোর্ট। শেষমেষ সুপ্রিম কোর্টের কড়া রায়, রবীন্দ্র সরোবরে ছটপুজো নয়। অন্যদিকে, হাইকোর্টও জানিয়ে দেয়, পরিবেশ ধ্বংস করে সুভাষ সরোবরে ছটপুজো নয়। পুলিসের তরফেও আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা ছিল। সব মিলিয়ে বাঁচানো গিয়েছে পরিবেশ। সুষ্ঠুভাবেই মিটেছে ছট উৎসব। প্রাতঃভ্রমণকারী সার্দান অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা সমরেশ ঘোষ শনিবার সকালে রবীন্দ্র সরোবরের টলটলে জল দেখে উৎফুল্ল। তাঁর বক্তব্য, এবছর ছটপুজোর পর লেক দেখে সত্যিই ভালো লাগছে। অন্যান্য বছর ফুল-বেলপাতা, প্ল্যাস্টিক পড়ে একাকার অবস্থা হয়ে যেত। ইচ্ছে থাকলে যে উপায় হয় এ তারই প্রমাণ। খুশি পরিবেশপ্রেমীরাও। কলকাতা পুলিসের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তিনি বলেন, প্রশাসন কড়া হলে যে-কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা সম্ভব। এবারও তাই হয়েছে। আশা করব, আগামী বছরও এমনটা হবে। ভবিষ্যতে নিয়ম ভাঙা হলে ফের আদালতে যাব। অন্যদিকে, দুটি লেকের বিকল্প হিসেবে শহরজুড়ে একাধিক স্থায়ী-অস্থায়ী জলাধার এবং কৃত্রিম জলাশয়ে ছটপুজোর ব্যবস্থা করেছিল কেএমডিএ এবং পুরসভা। ফুল-সহ পুজোর নানা সামগ্রী ফেলার জন্য পৃথক ভ্যাট, মহিলাদের জন্য চেঞ্জিং রুম, বাথরুম, ডুবুরি-সহ বড় পরিকাঠামো প্রস্তুত ছিল। ভালোয় ভালোয় সব মিটেছে। পুণ্যার্থীদের শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি প্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, মানুষ সচেতনতা দেখিয়েছেন। একাংশের সেই সচেতনতার জন্যই এটা সম্ভব হয়েছে।
অন্যদিকে, পুজোর পর তড়িঘড়ি পরিষ্কার করা হয়েছে বিকল্প জলাশয়গুলি। শনিবার ভোরে ছট মিটতেই দ্রুত সাফসুতরো হয়েছে ঘাট এবং জলাশয়গুলি। যোধপুর পার্ক, নোনাডাঙা, আনন্দপুর, পাটুলি, গলফ ক্লাব, পণ্ডিতিয়া, বাগবাজার-সহ বিভিন্ন জায়গায় বিকল্প জলাশয়গুলিকে শনিবার সকাল থেকেই পরিচ্ছন্ন করেছে কেএমডিএ এবং পুরসভা। এড়ানো গিয়েছে দূষণ। এই প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী বলেন, মানুষের সচেতনতাই বড় কথা। মানুষ সেটার প্রমাণ দিয়েছেন। সেইসঙ্গে সরকার এবং প্রশাসনের ভূমিকাও প্রশংসনীয়। সরকার কড়া মনোভাব নিয়েছে বলেই পরিবেশ রক্ষা পেয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, দিনের শেষে ফুল মার্কস-সহই উত্তীর্ণ হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন।