গৃহে শুভকর্মের আয়োজনে ব্যস্ততা। বন্ধুসঙ্গ ও সাহিত্যচর্চায় মানসিক প্রফুল্লতা। উপার্জন বাড়বে। ... বিশদ
দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর গ্রামে চার শতাধিক পরিবারের বাস। প্রধানত সমুদ্রে মৎস্যশিকার করে এবং সব্জিচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন বাসিন্দারা। আগে এলাকার বাসিন্দাদের মহকুমা শহর কাঁথিতে যেতে হলে শৌলা মৎস্য আহরণ কেন্দ্রের পাশ দিয়ে মাটির রাস্তা ধরে যেতে হতো। তার আগে নৌকায় পেরতে হতো। কাঁথির দিক থেকেও একইভাবে আসতে হতো। বর্ষাকালে নৌকায়ও যাতায়াত বন্ধ থাকত। অন্যদিকে, মন্দারমণির দিক দিয়ে গ্রামে আসতে কিছুটা মোরাম, কিছুটা মাটির রাস্তা ছিল। খালের উপর কাঠের ব্রিজ পেরিয়ে আসতে হতো। গাড়ির সংখ্যাও কম ছিল। গাড়ি না পেলে পায়ে হেঁটেই যাতায়াত ছিল ভরসা। পরবর্তীকালে দাদনপাত্রবাড়ের দিক থেকে পাকা রাস্তা তৈরি হওয়ায় যাতায়াত কিছুটা সুবিধা হয়। একটা সময় ছিল, রাতবিরেতে গুরুতর অসুস্থদের কিংবা গর্ভবতী মায়েদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াও দুষ্কর ছিল। গ্রামের ছেলেমেয়েদের চতুর্থ শ্রেণি পাশ করার পর নৌকায় শৌলা খাল পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী কাঁথির নয়াপুট সুধীরকুমার হাইস্কুলে পড়তে যেতে হতো। দুর্গম ও দূরবর্তী রাস্তার জন্য অনেকের মাঝপথে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যেত, এমন নজিরও রয়েছে। এখন মেরিনড্রাইভ রাস্তা ও ব্রিজ তৈরি হওয়ায় প্রতিটি সমস্যাই মিটে গিয়েছে। নতুনভাবে বাঁচার আনন্দে মশগুল এলাকাবাসী।
দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর এলাকার ঝাউবন ঘেরা সমুদ্রসৈকত এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ সত্যিই অনন্য। আগে মাঝেমধ্যে ভ্রমণপ্রিয় মানুষজন সৈকতে বেড়াতে আসতেন। মেরিনড্রাইভ রাস্তা ও ব্রিজ চালু হওয়ার পর থেকে পর্যটক সহ ভ্রমণপিপাসু মানুষজনের ভিড় লেগেই থাকে। এই পরিবেশকে কাজে লাগিয়েই কয়েকটি হোটেল-লজ গড়ে উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রাজু মান্না বললেন, সে একটা দিন গিয়েছে। মেরিনড্রাইভ রাস্তা, বিশেষ করে ব্রিজ চালু হওয়ায় আমরা সবদিক দিয়েই উপকৃত হয়েছি। বলা যায়, আমরা দীর্ঘদিনের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছি। বর্তমান সরকারের হাত ধরেই এসব সম্ভব হয়েছে। শিক্ষক রূপক গিরি বলেন, এলাকাটিকে ঘিরে সরকারি উদ্যোগে পর্যটন পরিকাঠামো গড়ে তোলা হলে খুবই ভালো হবে। রামনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অনুপ গিরি বলেন, রাস্তা ও ব্রিজ সত্যিই এলাকাটিকে বদলে দিয়েছে। এলাকাবাসীদের দাবি মেনে মৎস্য ও পর্যটন ক্ষেত্রের উন্নয়নে কী কী পরিকল্পনা নেওয়া যায়, সেব্যাপারে আলোচনা করব।