সন্তানের দাম্পত্য অশান্তিতে মানসিক চিন্তা। প্রেম-প্রণয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ ও মনঃকষ্ট। ব্যবসার অগ্রগতি। ... বিশদ
শ্রাবণীর বাড়ি বাঁকুড়া জেলার সীমানায় পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড় থানার বেনাচাপড়া গ্রামে। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর বাংলায় ৯৪, ভূগোলে ৯৯, দর্শনে ৯৮, সংস্কৃতে ৯৮ ও শারীরশিক্ষায় ৯৭। শ্রাবণী ভূগোল নিয়ে পড়াশোনা করতে চান। ভবিষ্যতে কলেজে অধ্যাপনা করার ইচ্ছা রয়েছে।
রাজগ্রাম গার্লস হাইস্কুলের টিআইসি সঙ্গীতা ঘাটুয়ারি বলেন, শ্রাবণী আমাদের বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল। স্কুলের হস্টেলেই থাকত। তাই বাইরে খুব বেশি কোচিং নেওয়ার সুযোগ ছিল না। তা সত্ত্বেও সে এত ভালো ফল করেছে। ওর জন্য আমরা গর্বিত। তিনি জানান, শ্রাবণী পড়াশোনার পাশাপাশি একজন ভালো ফুটবল খেলোয়াড়। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় খেলে স্কুলের দলকে সাফল্য এনে দিয়েছেন। এই বিদ্যালয় থেকে এবার ১৮জন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেন। তার মধ্যে ১৭জন পাশ করেছেন। শ্রাবণী সবচেয়ে বেশি ৪৮৬ নম্বর পেয়েছেন।
শ্রাবণীর দিদি হীরামণি সোরেন কলেজপড়ুয়া। তিনি বলেন, আমাদের পরিবারের অবস্থা ভালো নয়। সামান্য জমিতে চাষবাস হয়। বাবা ও মা দু’জনই দিনমজুরি করেন। তাই আমরা তিন ভাইবোনই বিভিন্ন জায়গায় সরকারি হষ্টেলে থেকে পড়াশোনা করেছি। বোনের সাফল্যে আমরা খুব খুশি। শ্রাবণীর বাবা দুর্গাচরণ সোরেনের দুই বিঘা জমি রয়েছে। তাতে চাষবাস করে সংসার চালানো মুশকিল। তাই দিনমজুরিও করেন। শ্রাবণীর মা কেশরি সোরেনও দিনমজুরি করেন। তাঁদের এক ছেলে ও দুই মেয়ে। আর্থিক কারণে তিন ছেলেমেয়েকেই ছোটবেলা থেকে বিনামূল্যের সরকারি হস্টেলে পাঠিয়ে দিয়েছেন। ছেলে জয়রাম সোরেন মাঝপথে পড়া ছেড়ে বাড়িতেই রয়েছেন। বড়ো মেয়ে হীরামণি গড়বেতা কলেজে পড়াশোনা করেন। ছোট মেয়ে শ্রাবণী পঞ্চম শ্রেণি থেকে পাত্রসায়রে পড়াশোনা করেছেন। অষ্টম শ্রেণিতে তিনি রাজগ্রাম গার্লস হাইস্কুলে ভর্তি হন।
শ্রাবণী বলেন, হস্টেলের বাইরে কেবলমাত্র একটি কোচিংয়ে যেতাম। বাকি সময় নিজেই পড়াশোনা করেছি। করোনা সঙ্কটে পড়াশোনায় খামতি থেকে যাওয়ায় মাধ্যমিকে ভালো ফল হয়নি। মাত্র ৪৩২ নম্বর পেয়েছিলাম। তাই উচ্চমাধ্যমিকে পড়াশোনার উপর বাড়তি মনোযোগ দিই। টেস্টে ৪৩৬ নম্বর পাওয়ার পর স্কুলের দিদিমণিরা উৎসাহ জোগানোয় মনের জোর দ্বিগুণ বেড়ে যায়। ধারাবাহিকভাবে পড়াশোনা করে সাফল্য পেয়েছি। তবে পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। উচ্চশিক্ষার প্রতিবন্ধকতা নিয়ে চিন্তা হচ্ছে।