সন্তানের দাম্পত্য অশান্তিতে মানসিক চিন্তা। প্রেম-প্রণয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ ও মনঃকষ্ট। ব্যবসার অগ্রগতি। ... বিশদ
গত ফেব্রুয়ারি মাসে ময়ূরেশ্বর সাব পোস্টঅফিসের পোস্টাল অ্যাসিস্ট্যান্ট কালীপ্রসন্ন দফাদারের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের আমানত আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। প্রথমে এই ঘটনা নজরে আসে পোস্টঅফিসের এজেন্টদের। তাঁরা অ্যাকাউন্ট সেকশনে থাকা কালীপ্রসন্ন দফাদারকে টাকা জমা করার জন্য দিতেন। অভিযোগ, কখনও লিঙ্ক ফেলিওর, কখনও প্রিন্টার খারাপ জানিয়ে রসিদ দেওয়া হতো না। কিছু ক্ষেত্রে রসিদও দিতেন। সরল বিশ্বাসে তাঁরা গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা এনে ফিক্সড ডিপোজিট করার জন্য দিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু সেই টাকা সরকারের ঘরে জমা পড়েনি। শুধু এজেন্ট নয়, বহু গ্রাহকও ওই কর্মীর কাছে টাকা জমা দিয়েছেন। অনেকের সেই টাকা জমা হয়নি। যার জেরে দফায় দফায় বিক্ষোভে উত্তাল হয় পোস্টঅফিস। এরপরই এজেন্টরা ওই কর্মীর বিরুদ্ধে জেলা পোস্টাল সুপারিন্টেন্ডেন্টের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এরপরই কমিটি গড়ে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়। অভিযোগের সত্যতা মিলতেই অভিযুক্ত কর্মীকে সাসপেন্ডের পাশাপাশি রামপুরহাট মহকুমার ইন্সপেক্টর অব পোস্ট শুভদীপ সাঁতরা ওই কর্মীর নামে থানায় এফআইআর করেন। এফআইআরে তিনি দাবি করেন, অভিযুক্ত কর্মী অফিসিয়াল ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে চলতি বছরের ১৩ জুন থেকে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ অপব্যবহার করা করেছে। বিভাগীয় তদন্তে আমানতকারীদের ৫০ লক্ষ টাকা আত্মসাতের তথ্য মেলে। নিজের ‘ফিনাকল আইডি’ ব্যবহার করে অবৈধভাবে গ্রাহকদের অর্থ তুলেছেন। তাতেই ডাক বিভাগের কর্তারা মনে করছেন, আত্মসাতের পরিমাণ বিশাল অঙ্ক পর্যন্ত যেতে পারে। গত এপ্রিল মাসে রামপুরহাট আদালতে আত্মসমর্পণ করে অভিযুক্ত কালীপ্রসন্ন। বর্তমানে সে জেলে রয়েছে।
এদিকে আত্মসাতের পরিমাণ জানতে গ্রাহকদের পাশবুক আপডেট করার পাশাপাশি অভিযোগ নেওয়া শুরু হয়। প্রায় একশো জনের কাছাকাছি গ্রাহক লিখিত অভিযোগ জানান বলে দপ্তর সূত্রে খবর। ঘটনার জেরে ওই অফিসের পোস্টমাস্টার ভূবনেশ্বর মণ্ডলকে সাসপেন্ড করা হয়। বদলি করা হয় জেলা পোস্টাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট বিপ্লব ভট্টাচার্যকে। এদিকে চারমাস পেরিয়ে গেলেও এখনও আমানতকারীরা অর্থ ফেরত পাননি। প্রতিবাদে এদিন সকাল ১০টা নাগাদ আমানতকারীদের একাংশ পোস্ট অফিসের মেন গেটে তালা ঝুলিয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁরা বলেন, প্রান্তিক এলাকা। বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। সামনে বর্ষার চাষ রয়েছে। অনেকের টাকার প্রয়োজন। হারাধন শেখ নামে এক বিক্ষোভকারী বলেন, অ্যাকাউন্ট থেকে দু’লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। চার মাস পেরিয়ে গেলেও এক টাকাও ফেরত পায়নি। অবিলম্বে টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করতে হবে।
বর্তমান পোস্টমাস্টার নারায়ণচন্দ্র গড়াই বলেন, আমি এখানে একমাসের জন্য ডেপুটেশনে এসেছি। কিছু জানি না। এদিকে বীরভূমের লুক আফটার চার্জে রয়েছেন মুর্শিদাবাদের পোস্টাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট সমর গোলদার। তিনি বলেন, প্রতারিত গ্রাহকরা টাকা ফেরত পাবেন। সেটা প্রক্রিয়া মেনেই করতে হবে। সেখানে যদি গ্রাহকরা পোস্টঅফিসে তালা মেরে দেন, তাহলে সুষ্ঠুভাবে কাজ করা সম্ভব হবে না।