সংবাদদাতা, তেহট্ট ও নবদ্বীপ: ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই জেলার সর্বত্র বৃষ্টি শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে জেলার সর্বত্র বৃষ্টি হয়েছে। বেশিরভাগ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও আবার মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। রাতে বৃষ্টির পরিমাণ বেড়েছে। বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাটে লোকজনের সংখ্যা কম ছিল। বাজার এলাকার দোকান পাট বেশ কিছু বন্ধ ছিল। যে সব দোকান খোলা ছিল সেখানে খরিদ্দার ছিল না বললেই চলে। রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা অন্যদিনের তুলনায় কম ছিল। বাস, ট্রেন সব জায়গায় যাত্রীদের চাপ অন্যদিনের অনেক কম ছিল। বৃষ্টির দাপটে জনজীবন ব্যাহত হয়। এদিনের বৃষ্টিতে কৃষ্ণনগরের বেশ কিছু জায়গায় জল জমে গাড়ি চলাচলে সমস্যা হয়। বেশ কয়েক জায়গায় ফেরি চলাচল বন্ধ করে দিতে হয়। এদিন বৃষ্টির জেরে করিমপুর বিধানসভার উপনির্বাচনে সব দল তাদের প্রচার বাতিল করে দেয়। আবহাওয়ার উন্নতি হলে তারা প্রচার শুরু করবে বলে জানিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। এদিন তেহট্ট, কৃষ্ণনগর, পলাশীপাড়া, চাপড়া, করিমপুর, বেতাই, নাজিরপুর, ধুবুলিয়া, নাকাশিপাড়া, পলাশী, কালীগঞ্জ সহ জেলার সর্বত্র জনজীবন ব্যাহত হয়েছে। দুর্যোগ পূর্ণ আবহাওয়ার জন্য নবদ্বীপ ঘাটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই খবর পেয়ে উত্তেজিত জনতা ঘাটের ইজারদারকে হামলা চালাতে যায়। পরে আবার নৌকা ও লঞ্চ চালু হয়। শান্তিপুরেও ফেরিঘাটগুলিতেও সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছিল। বৃষ্টির কারণে শান্তিপুর ও রানাঘাটের রাস্তাঘাট ছিল শুনশান।
এদিকে, নিম্নচাপের বৃষ্টির ফলে মাথায় হাত পড়েছে নবদ্বীপের পুজো উদ্যোাক্তা ও মৃৎশিল্পীদের। প্রতিমা শুকাতে এখন নাজেহাল হচ্ছে মৃৎশিল্পীরা। মৃৎশিল্পী সত্য পাল, সত্যেন পাল বলেন, নিম্নচাপের জেরে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে সময় মতো প্রতিমা সম্পন্ন করতে পারব কি না জানি না। মৃৎশিল্পী স্বপন পাল, বাসু পাল বলেন, রাসের সময় এরকম নিম্নচাপের বৃষ্টির কবলে কোনও দিন পড়তে হয়নি। বৃষ্টির জেরে বাইরের কাজ করতেই পারছে না মণ্ডপ শিল্পীরা। নবদ্বীপের ওলাদেবীতলা বাঁধরোডের সারদা সংঘের চণ্ডীমাতা পুজোর মণ্ডপ করছেন মালিক বাপি পাল। তিনি বলেন, বৃষ্টির জন্য মণ্ডপের বাইরের কাজ হাত দেওয়া যায়নি। বৃষ্টির যা পরিস্থিতি তাতে করে কর্মীরা দিনরাত এক করে কাজ করলেও মণ্ডপ সম্পন্ন হবে কি না সন্দেহ আছে। নবদ্বীপের অন্যতম থিমের মণ্ডপের শিল্পী রাজু সূত্রধর বলেন, বিগত দু’দিনের ধারাবাহিক বৃষ্টিতে সামনের কাজ কিছুই হয়নি। এখন শেষ করব কী করে তা নিয়ে চিন্তিত। একটি রাস উৎসব বারোয়ারি কমিটির সম্পাদক সুকুমার দাস বলেন, বৃষ্টি না থামলে আরও সমস্যায় পড়তে হবে আমাদের।