অতি সত্যকথনের জন্য শত্রু বৃদ্ধি। বিদেশে গবেষণা বা কাজকর্মের সুযোগ হতে পারে। সপরিবারে দূরভ্রমণের যোগ। ... বিশদ
সিদ্ধান্ত বাত্রা (১৮)। বাড়ি আগ্রা। এবারের জেইই-তে ২৭০তম স্থান অর্জন করেছেন পিতৃ-মাতৃহীন এই সন্তান। সেইমতো আইআইটি বম্বেতে বি-টেক (ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং)-এ নিজের আসন নিশ্চিত করেছেন। গত ১৮ অক্টোবর ভর্তির প্রথম ধাপে তিনি নির্বাচিত হন। কিন্তু, ৩১ অক্টোবর নিজের রোল নম্বর সংক্রান্ত আপডেট জানতে ওয়েবসাইটের একটি লিঙ্কে ভুলবশত ক্লিক করেন সিদ্ধান্ত। আর এক ভুলেই ভাগ্য বদলে যায় বছর দুই আগে মা হারা অভাগা মেধাবীর। কী ছিল সেই লিঙ্কে? ‘উইথড্র ফ্রম সিট অ্যালোকেশন অ্যান্ড ফারদার রাউন্ডস’। যার অর্থ হল, আসন নির্বাচনের পরবর্তী প্রক্রিয়া থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখা। ওই লিঙ্কে ক্লিক করতেই সিদ্ধান্ত বুঝতে পারেন, যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। সোনার চাঁদ হারিয়েছেন তিনি। বিধি বাম তাঁর সৌভাগ্য কেড়ে নিয়েছে। তারপর ১০ নভেম্বর প্রকাশিত হয় ভর্তির চূড়ান্ত তালিকা। সেখানে ওঠেনি সিদ্ধান্তের নাম।
কালবিলম্ব না করে আইআইটির চূড়ান্ত তালিকা নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বম্বে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন সিদ্ধান্ত। ১৯ নভেম্বর আদালতের অবসরকালীন বেঞ্চ আইআইটিকে দু’দিনের মধ্যে তাঁর ভর্তির বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু, ‘লেট রেজিস্ট্রেশন’-এর শেষ দিনের দু’দিন আগে আইআইটি সাফ জানিয়ে দেয়, সিদ্ধান্তের ভর্তির বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা সম্ভব নয়। আইআইটির রেজিস্ট্রার আর প্রেমকুমার বলেন, ভর্তি সংক্রান্ত উইথড্রল লেটার নষ্ট করার অধিকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নেই। নিয়মের বেড়াজালে আইআইটির হাত বাঁধা রয়েছে। রেজিস্ট্রার আরও বলেন, ভর্তির বিষয়টি দেখভাল করে জয়েন্ট সিট অ্যালোকেশন অথরিটি বা জোসা। বর্তমানে আইআইটিতে কোনও আসন ফাঁকা নেই। ২০২১ সালের জেইই (অ্যাডভান্সড)-এর জন্য সিদ্ধান্তকে আবেদন করতে হবে।
এমন মেধাবী হয়েও কেন এই সিলি মিস্টেক? জবাবে সিদ্ধান্ত বলেছেন, ওয়েবসাইটে ‘ফ্রিজ’ অপশন দেখে তাঁর মনে হয়েছিল ভর্তির প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। সেকারণেই তিনি ‘ফ্রিজ’ অপশনে গিয়ে আসন নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন। আসলে সফল প্রার্থীদের কেউ যদি ভর্তির চূড়ান্ত প্রক্রিয়া থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে চায়, তাঁদের জন্যই এই সুযোগ দেয় আইআইটি। তারপর দু’হাজার টাকা কেটে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে ফেরত দেওয়া হয় ‘সিট অ্যাকসেপটেন্স ফি’। সুযোগ দেওয়া হয় পরবর্তী প্রার্থীকে। একজন প্রার্থীর ‘উইথড্র অপশন’-এ ক্লিক করার অর্থই হল, তাঁর ভর্তির আবেদন বাতিল। আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে সিদ্ধান্ত মামলার শুনানি। সেখানেই হবে মেধাবী ছাত্রের ভাগ্য নির্ধারণ।