কাজকর্মে জটিলতা মুক্তি ও কর্মোন্নতি। অপচয়মূলক বা অপ্রত্যাশিত ব্যয় বাড়বে। পারিবারিক ক্ষেত্রে সুসম্পর্ক। ... বিশদ
বাঁকুড়ার ডোকরা শিল্পের কথা গোটা বিশ্বেই সমাদৃত। বাঁকুড়ার বিকনা গ্রাম মূলত এই শিল্পের জন্য আলাদা জায়গা করে নিয়েছে এবং খ্যাতির শিরোনামে উঠে এসেছে। বাংলা ছাড়াও দেশ-বিদেশের পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রথমেই চোখে পড়বে তোরণ। মাটির ঘোড়া আর ডোকরা শিল্পের সামঞ্জস্যে তোরণটি তৈরি। আর জ্বলজ্বল করছে লেখা, বিকনা ডোকরা শিল্পডাঙা।
গ্রামের ভিতরে ঢুকলেই দু’পাশের বাড়ির উঠোন জুড়ে চোখে পড়বে ডোকরা শিল্পের হরেক কারুকার্য। দুর্গা, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতীসহ বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তি, ঘট, হাতি, ঘোড়া, চাল মাপার কুনকো, পালকি, পেঁচা, পেনদানি, ফুলদানিসহ নানাধরনের ঘর সাজানোর জিনিসের সম্ভার। আরও নজর করার মতো বিষয়, একটা কর্মব্যস্ত গ্রাম। স্বামী, স্ত্রী, ছেলে, ছেলের বউসহ পরিবারের সকলেই শিল্পের নানা আনুষঙ্গিক কাজ করে চলেছেন। কেউ মাটির ছাঁচ বানাচ্ছেন, কেউ তৈরি করছেন মোম দিয়ে নকশা, কেউ সেসব রং করছেন। শিল্পী গোপন কর্মকারের কথায়, আমাদের এখানে আলাদা করে শ্রমিকও নিয়ে আসতে হয় না। আমরা, পরিবারের সকলেই একসঙ্গে কাজ করি। যে টাকা আয় হয় তা পরিবারেই থাকে।
ভোট বাজারে ডোকরা শিল্পের গ্রামে এসে ভোটের খবর থাকবে না সেটা তো আর হয় না! কিন্তু জিজ্ঞাসা করা হলে শিল্পীরা অকপটেই বলেন, আমরা গ্রামের মধ্যেই সারাদিন কাজে ব্যস্ত থাকি। ভোটের সব খবর ঠিকমতো রাখা হয় না। তবে প্রশাসনিক সাহায্য-সহযোগিতা যে এসেছে, তা অকপটেই জানালেন শিল্পী হরেন্দ্রনাথ রানা। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আমাদের সমিতিকে ১১ লক্ষ টাকা সহযোগিতা করেছিল। শিল্পী চন্দন কর্মকার বললেন, আমি যে জায়গায় বসে মোমের কারুকার্য করছি, সেই ওয়ার্ক শেড তৈরি করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। বাস্তবিকভাবে দেখা গেল ওই ওয়ার্ক শেডের দেওয়ালে লেখা, বিকনা ডোকরা কমন ফেসিলিটি সেন্টার। সেটি তৈরি করেছে পশ্চিমবঙ্গ খাদি ও ভিলেজ ইন্ডাস্ট্রি বোর্ড।
বাঁকুড়া বিকনা ডোকরা হস্তজাত কুটির শিল্প কল্যাণ সমিতির সম্পাদক গোপন কর্মকার বললেন, এই শিল্পের আরও উন্নতির জন্য রাজ্য সরকারের কাছ থেকে আমরা অনেক সুযোগ-সুবিধা পেয়েছি। এমনকী, আমার বাড়ির সদস্যও লক্ষীর ভাণ্ডারও পাচ্ছে। সরকারি সহযোগিতার এই হাত আগামী দিনেও এগিয়ে থাকবে বলেই মনে করি আমরা। কথা প্রসঙ্গে তিনি আরও জানালেন, সরকারি প্রকল্প লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে যদি কেউ ডোকরার কাজ করাতে চান তা দ্রুততার সঙ্গেও করে দেওয়া হবে। কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু এরপরই! গত লোকসভা ভোটে বাঁকুড়া থেকে নির্বাচিত হন সুভাষ সরকার। আর বিষ্ণুপুরে জয়ী হন সৌমিত্র খাঁ। দু’জনেই বিজেপির টিকিটে জেতা সাংসদ। প্রশ্ন ছিল, শিল্পডাঙায় সুভাষ কিংবা সৌমিত্র কোনওদিন এসেছিলেন? এমন কথা মনেই করতে পারলেন না কোনও শিল্পী।