বিদ্যার্থীদের পঠন-পাঠনে আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের কর্মপ্রাপ্তির যোগ। বিশেষত সরকারি বা আধা সরকারি ক্ষেত্রে যোগ প্রবল। ... বিশদ
গত তিন বছরে বিভিন্ন রাজ্যের আঞ্চলিক উৎসব ও পার্বণগুলিকে কত টাকা অনুদান দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার, তার জবাব চাওয়া হয়েছিল কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের কাছে। তাতে যে উত্তর এসেছে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গের নাম নেই। অথচ এক-একটি রাজ্যকে একাধিক অনুষ্ঠান বা পার্বণের জন্য টাকা দিয়েছে কেন্দ্র। কখনও সেই টাকার অঙ্ক ৫০ লক্ষ, আবার কখনও ২৫ বা ৩০ লক্ষ। এভাবেই কয়েক কোটি টাকা খরচ করেছে কেন্দ্র। মোট ৬৪টি উৎসবে দেওয়া হয়েছে টাকা।
কী ধরনের প্রকল্পে অনুদান পেয়েছে রাজ্যগুলি? শুরু করা যাক চণ্ডীগড়ের কথা দিয়ে। সেখানে গোলাপ উৎসবে প্রতি বছর নিয়ম করে টাকা দিয়েছে কেন্দ্র। হরিয়ানা তাদের আম উৎসবে অনুদান পেয়েছে ২৫ লক্ষ টাকা। হিমাচলের দশেরা ও শিবরাত্রি উৎসবে এক কোটি টাকার উপর অনুদান মিলেছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। এভাবেই মধ্যপ্রদেশে খাজুরাহো ডান্স ফেস্টিভ্যাল, পাঞ্জাবের হোলা মহল্লা, পাতিয়ালা উৎসব, উত্তরপ্রদেশের গঙ্গা মহোৎসব, অযোধ্যা মহোৎসব, তামিলনাড়ুর কুমারি ফেস্টিভ্যাল, তেলেঙ্গানার ঘুড়ি উৎসব, অসমে বৌদ্ধ সম্মেলনের মতো প্রকল্পে খরচ হয়েছে কেন্দ্রীয় অনুদানের কয়েক কোটি টাকা। সবচেয়ে বেশি খরচ হয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির আঞ্চলিক উৎসবে।
কেন্দ্রের এই তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ না থাকায় তাজ্জব অনেকেই। এখানকার বসন্তোৎসব, পৌষমেলা, রাশ উৎসব, রবীন্দ্রজয়ন্তী, জগদ্ধাত্রী পুজো বা রথের মেলার মতো ঐতিহ্যবাহী উৎসবের কথা না হয় বাদ দেওয়া গেল। কিন্তু গঙ্গাসাগর মেলা ও দুর্গাপুজোর মতো সর্বজনীন ও বিশ্বখ্যাত উৎসবকে কী করে এড়িয়ে যেতে পারে কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রক, তা নিয়ে বিস্মিত অনেকেই। বাংলার প্রতি কেন্দ্রের এই বঞ্চনায় রাজনীতির গন্ধ বেশি করে মিলছে। চিরন্তনী দুর্গোৎসবকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আন্তর্জাতিক রূপ দিয়েছে। দুর্গাপুজো কার্নিভালকে বিদেশেও প্রচারের আলোকে আনছে রাজ্য সরকার। অথচ তার চাকচিক্য বাড়াতে গা করেনি কেন্দ্র। যেখানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা রাজ্যে এসে এখানকার সংস্কৃতি ও পরম্পরার বড়াই করেন, সেখানে শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই এই বঞ্চনা, এমনটাই মনে করছেন অনেকে। কোনও রাজ্যের পর্যটনকে চাঙ্গা করতে বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা ঢালে কেন্দ্রীয় সরকার। বেলুড় মঠ থেকে শুরু করে সাগরের পাড়ে সৌন্দর্যায়ন সহ নানা প্রকল্পে সেই টাকা এসেছে রাজ্যে। শুধু বাংলার আঞ্চলিক উৎসবেই কেন কৃপণতার রাজনীতি, সেই প্রশ্নই সামনে আসছে।