কর্মপ্রার্থীদের কোনও সুখবর আসতে পারে। কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির সূচনা। গুপ্ত শত্রু থেকে সাবধান। নতুন কোনও প্রকল্পের ... বিশদ
দু’-তিনদিন আগেই এসটিএফ খবর পায়, বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দু’জন কলকাতায় আসছে। দু’জনই হুগলির বাসিন্দা। জানা গিয়েছে, হুগলি থেকে তারা প্রায়শই বাইকে করে অস্ত্র নিয়ে আসত কলকাতায়। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, তারা ওই আগ্নেয়াস্ত্র পৌঁছে দিত বন্দর এলাকায়। সেখান থেকে লরিতে বিভিন্ন পণ্যের আড়ালে তা চলে যেত নির্দিষ্ট জায়গায় ক্রেতার হাতে। এভাবেই চলত অস্ত্র পাচার। সোর্স লাগিয়ে এই দুই অস্ত্র কারবারির খোঁজ পায় এসটিএফ। তাদের সম্পর্কে জোগাড় হয় বিস্তারিত তথ্য। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোমবার রাতে তারা অস্ত্রের জোগান দিতে আসবে বন্দর এলাকায়। সেইমতো স্ট্র্যান্ড রোডে অপেক্ষা করছিলেন অফিসাররা। তাঁরা আগে থেকেই তাদের বাইকের নম্বর জোগাড় করে রেখেছিলেন। বাইকটি স্ট্যান্ড রোডে ঢোকামাত্রই তার উপর নজরদারি শুরু হয়। শেষমেশ তাদের থামিয়ে তল্লাশি চালাতেই একে একে উদ্ধার হয় আটটি সিঙ্গল শটার। এর নলগুলি স্টেনলেস স্টিল রঙের। গ্রেপ্তার করা হয় সুজাত গোস্বামী ও মহম্মদ সাহিদ নামের দুই অস্ত্র কারবারিকে।
তদন্তে জানা যাচ্ছে, শ্রীরামপুরের এই দুই বাসিন্দা অনেকদিন ধরেই এই কারবার করছে। মূলত উন্নতমানের সিঙ্গল শটার তৈরি করে তারা। হুগলির প্রত্যন্ত জায়গায় ঘর ভাড়া নিয়ে সেখানে লেদ মেশিন বসিয়েছে। সেই কারখানায় তৈরি হচ্ছে এই সব আগ্নেয়াস্ত্রের যন্ত্রাংশ। তবে সব যন্ত্রাংশই যে এক জায়গায় তৈরি হয়, তা নয়। বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে তা তৈরি হওয়ার পর তারা সেগুলি জোড়া লাগিয়ে পূর্ণাঙ্গ পিস্তলের রূপ দেয়। ‘ফিনিশড প্রোডাক্ট’ তৈরি হয় শ্রীরামপুরে। এর জন্য প্রয়োজনীয় ডাইসও তারা বানিয়ে ফেলেছে। আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির জন্য এই কারবারিরা মুঙ্গের থেকে ‘দক্ষ’ কারিগর নিয়ে এসেছে। তারাই ডাইস থেকে শুরু করে পুরো সেটআপ বানিয়ে দিয়েছে। জানা গিয়েছে, একেকটি অস্ত্র বিক্রি হয় তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকায়। কলকাতা হয়ে বিভিন্ন জায়গায় পাচারের পাশাপাশি নিজেদের জেলাতেও তারা অস্ত্র বিক্রি করত। স্থানীয় দুষ্কৃতীরাও তাদের থেকে অস্ত্র কেনে। সেই ক্রেতার তালিকায় রয়েছে চিৎপুর-কাণ্ডে মৃত কুখ্যাত দুষ্কৃতী সান্টিয়াও। জানা গিয়েছে, সান্টিয়ার সঙ্গে তাদের ভালোই যোগাযোগ ছিল। ভিনরাজ্য থেকেও তারা আগ্নেয়াস্ত্রের বরাত পেত বলে জানতে পেরেছে এসটিএফ। তাদের সঙ্গে আন্তঃরাজ্য আগ্নেয়াস্ত্র চোরাকারবারিদের যোগ মিলেছে। এসব নিয়েই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। উদ্ধার হওয়া অস্ত্র।