সুখেন্দু পাল, বহরমপুর: কাশ্মীরে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সাগরদিঘি ব্লকে আপেল চাষ করবে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস থেকেই চাষ শুরু হবে। ১০০ দিনের প্রকল্পে বাগান করা হবে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পরীক্ষামূলকভাবে ১০ একর জমিতে প্রথমে আপেল চাষ হবে। সাফল্য পাওয়া গেলে জমির পরিমাণ বাড়ানো হবে। দেরাদুন থেকে আপেল গাছের চারা আনা হবে। প্রতি বিঘা জমিতে ৩০ থেকে ৪০টি আপেল চারা দরকার হয়। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) সুদীপ্ত পোড়েল বলেন, আপেল চাষের জন্য ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে জমি তৈরি হয়ে যাবে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে গাছ রোপণ করা হবে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সাগরদিঘি ব্লকের অনেকেই আগে আপেল বাগানে কাজ করে এসেছেন। বাগান পরিচর্যার বিষয়টি তাঁদের ভালোভাবে জানা রয়েছে। তাঁদের দিয়েই চাষ করানো হবে। এই চাষে আরও দক্ষ করতে তাদেরকে একটি সংস্থার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। সাগারদিঘির বাহালনগর গ্রামের পাঁচ শ্রমিক কাশ্মীরে আপেল বাগানে কাজ করতে গিয়ে জঙ্গিদের গুলিতে মারা যান। আরও একজন গুরুতর জখম হয়েছিলেন। এই এলাকার বাকি লোকজনদের কথা চিন্তা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এই মাটিতে আদৌও আপেল চাষ করা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, বাঁকুড়ায় ১০০ দিনের প্রকল্পে আম চাষ করতে যাওয়ার সময় অনেকেই ভুরু কুঁচকে ছিলেন। তখনও সেই প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু সেখানে সফলভাবে আম চাষ হচ্ছে। তেমনই কাশ্মীরের আপেলের মতো হয়তো এখানকার ফল ততটা সুস্বাদু হবে না। কিন্তু চাষ সম্ভব। আপেল চাষের সঙ্গে যুক্ত একটি সংস্থা তা নিশ্চিত করছে।
প্রসঙ্গত, জেলার যুবকদের কাজ দিতে ১০০ দিনের প্রকল্পে ম্যাঙ্গো পার্ক তৈরিরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেখানে প্রায় ২৫০টি প্রজাতির আম চাষ হবে। প্রশাসনের দাবি, আম বা আপেল বাগান তৈরি হলে এলাকার যুবকদের অনেক বেশি কাজ মিলবে। সারা বছরই বাগানে বিভিন্ন ধরনের কাজ লেগেই থাকে। আপাতত সাগরদিঘি ব্লকে দু’টি প্রজাতির আপেল চাষ হবে। এখানকার মাটিতে এই দুই প্রজাতির আপেলই সবচেয়ে ভালো হবে।