কর্মপ্রার্থীদের কোনও চুক্তিবদ্ধ কাজে যুক্ত হবার যোগ আছে। ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে। বিবাহের যোগাযোগ ... বিশদ
কান্দি মহকুমা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মহকুমা এলাকার পাঁচটি ব্লকের প্রায় ১৭হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়। তবে এবছর ঠিকমতো বর্ষা না হওয়ার কারণে প্রচুর জমি পতিত রয়ে গিয়েছে। ওই পতিত জমিতে ভুট্টা চাষ করার জন্য চাষিদের উৎসাহ দিচ্ছে কৃষি দপ্তর। এছাড়াও আমন ধান কাটার পর ওই জমিতে ভুট্টা চাষ করার জন্য চাষিদের জানাচ্ছে দপ্তর। আবার ভুট্টা চাষ না করলে আমন চাষের পর ডালশস্য ও তৈলবীজ লাগানোর কথাও বলা হচ্ছে।
ডালশস্য হিসেবে খেসারি, মসুর ও ছোলা চাষ করার উপর জোর দিতে বলা হচ্ছে। তৈলবীজ হিসেবে টোরি ও সাদা সর্ষে চাষ করলে চাষিরা লাভবান হবে বলে জানানো হচ্ছে। তবে ভুট্টা চাষ বেশি লাভজনক ও অল্প পরিশ্রমে করা যাবে। সম্প্রতি মহকুমার বিভিন্ন ব্লকে আমন ধানের ন্যাড়া পোড়ানো নিয়ে শিবির করা হয়েছে। সেখানে চাষিদের আমন চাষের পর ভুট্টা চাষের কথা জানানো হয়। খড়গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি টিঙ্কু মণ্ডল বলেন, মঙ্গলবার খড়গ্রাম কিষাণ মান্ডিতে কৃষি দপ্তরের পক্ষ থেকে চাষিদের নিয়ে একটি সচেতনতা শিবির করা হয়। সেখানে পতিত জমি ও আমন ধান কাটার পর ভুট্টা চাষ করার জন্য চাষিদের উৎসাহিত করা হয়েছে।
কান্দি মহকুমা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, গতবছর থেকেই এলাকার পতিত জমি ও আমন ধান কাটার পর সেখানে ভুট্টা চাষ করার জন্য চাষিদের উৎসাহিত করা হয়েছিল। কিন্তু অল্প সংখ্যক চাষি ভুট্টা চাষে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। যদিও এবছর ভুট্টা চাষ করার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। এলাকার কয়েক হাজার বিঘা পতিত ও আমন ধান কাটার পর জমিতে ভুট্টা চাষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এজন্য বিভিন্ন এলাকায় চাষিদের নিয়ে সচেতনতা শিবির করা হচ্ছে। চাষিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
কৃষি দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, অল্প পরিশ্রমে ভুট্টা চাষ করা যায়। লাগানোর সময় যা ভালোভাবে পরিচর্যা করার প্রয়োজন রয়েছে। এরপর অল্প জল ও অল্প শ্রমিক দিয়ে ওই চাষ করা যায়। ভুট্টা চাষে জৈব সার ব্যবহার করলে ভালো উৎপাদন হয়। ভুট্টা উৎপাদন করার পর চার ধরনের লাভ করে থাকেন চাষিরা। প্রথমে ভুট্টার বাজার দর ভালো রয়েছে। এরপর ভুট্টার পাতা ও কাণ্ড গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়। ভুট্টা গাছের শুকনো পাতা ও গাছের নীচের অংশ জমিতে পড়ে থাকলে সেগুলি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। আবার গাছের মাটিতে লেগে থাকা শেকড় ও কাণ্ড পচিয়ে জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। কাজেই শুধু নারকেল গাছ নয়, ভুট্টাকেও চাষের ‘কল্পতরু’ হিসেবে বলা যেতে পারে।
কান্দি পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ গৌরব চট্টোপাধ্যায় বলেন, এবছর কান্দি ব্লকের প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমি পতিত রয়েছে। আমরা চাষিদের জানিয়েছি, ওই পতিত জমিতে ভুট্টা চাষ করলে লাভবান হবেন। এর জন্য কান্দি পঞ্চায়েত সমিতি ভুট্টা চাষিদের বিশেষভাবে সাহায্য করবে।
এব্যাপারে কান্দি মহকুমা কৃষি আধিকারিক মৃদুল ভক্ত বলেন, আমন ধান কাটার পর ও পতিত জমিতে চাষিদের ভুট্টা চাষ করার জন্য উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। ওই চাষ করার জন্য চাষিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে চাষিরা আমাদের পাঁচটি ব্লকের এগ্রিকালচার ডেভলপমেন্ট অফিসারদের সঙ্গে আলোচনাও করতে পারেন। এবছর আমরা পতিত ও আমন কাটার পর জমিতে চাষিদের লাভজনক ফসল ভুট্টা চাষ করার জন্য জোর দিতে বলছি।