কাজকর্মে জটিলতা মুক্তি ও কর্মোন্নতি। অপচয়মূলক বা অপ্রত্যাশিত ব্যয় বাড়বে। পারিবারিক ক্ষেত্রে সুসম্পর্ক। ... বিশদ
হাইকোর্টের রায়ে ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিলের প্রভাব পড়েছে মতুয়া অধ্যুষিত রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রেও। এই এলাকায় এসসি সম্প্রদায়ভুক্ত মতুয়াদের সংখ্যা বেশি হলেও অনেক ওবিসি বাসিন্দাও রয়েছেন। রানাঘাট সংগঠনিক জেলা তৃণমূলের এসসি ওবিসি সেলের সভাপতি অসীম মণ্ডল বলেন, অনেকেই এবিষয়ে উদ্বিগ্ন। উচ্চ আদালতের রায় শুনে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে পুরুলিয়া জেলারও বহু যুবক-যুবতীর। বাগমুণ্ডি ব্লকের বাসিন্দা সুখেন মাহাত, ধরিত্রী মাহাত বলেন, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ওবিসি শংসাপত্র করিয়েছিলাম। বারবার ব্লক অফিসে যেতে হয়েছিল। হঠাৎ শুনছি ’১০ সালের পর থেকে সব ওবিসি শংসাপত্র বাতিল করেছে হাইকোর্ট। চাকরি, পরীক্ষা থেকে শুরু করে সংরক্ষণের যেসব সুবিধা পাব ভেবেছিলাম, তার কী হবে বুঝতে পারছি না। আবার শংসাপত্র পাওয়া যাবে কি না তাও বুঝতে পারছি না।
সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ জেলাতেও দিশেহারা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অল ইন্ডিয়া ইমাম মোয়াজ্জিন অ্যান্ড সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এটা কাম্য নয়। মানুষ এই রায় মোটেও ভালোভাবে নিচ্ছে না। সংখ্যালঘু জেলায় এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে।
বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটির বধূ মৌমিতা মণ্ডল ২০১২ সালে ওবিসি সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করেছিলেন। তিনি বলেন, একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় বাড়ি থেকে প্রায় ১৫কিলোমিটার দূরে বিডিও অফিসে গিয়ে ওবিসি সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করেছিলাম। প্রায় প্রত্যেক মাসে একবার করে বিডিও অফিসে গিয়ে খোঁজ নিতাম। দু’বছর পর সেই সার্টিফিকেট হাতে পেয়েছিলাম। তা দিয়ে অনেক সুবিধাই পেয়েছি। এখনও চাকরির আবেদন করলে ওই সার্টিফিকেট ব্যবহার করি। এখন তা বাতিলের নির্দেশ শুনে তো অবাক লাগছে। এবার আমাদের কী হবে তা বুঝতে পারছি না। ইন্দপুরের বাসিন্দা মহিতোষ তন্তুবায়ের স্ত্রী সহ পরিবারের ওবিসি সার্টিফিকেট ২০১০সালের পর হয়েছে। তিনি বলেন, খুব কষ্ট করে নানা নথিপত্র জমা করে ওবিসি সার্টিফিকেট করিয়েছিলাম। বাতিল হয়েছে শুনে হতাশ লাগছে। পশ্চিম বর্ধমানের বরাকরের বাসিন্দা অভিষেক ঘোষ বলেন, ২০১৪ সালে ওবিসি সার্টিফিকেট পেয়েছিলাম। আচমকা বাতিল হওয়ায় সমস্যায় পড়লাম। পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূল নেতা দেবু টুডু বলেন, মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এই রায়ের ফলে বহু মানুষ সমস্যায় পড়বেন। বিষয়টি নিয়ে আরও ভাবনাচিন্তা করা উচিত ছিল। রানাঘাটের বিজেপি প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, রানাঘাটে বহু ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত রয়েছেন। ভুয়ো সার্টিফিকেটধারীদের জন্য তাঁরা চাকরি পাননি। তাঁরা চান, যাদের জাল সার্টিফিকেট ধরিয়ে ওবিসি তকমা দেওয়া হয়েছিল, তাদের চাকরিও বাতিল হোক।