উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
তৃণমূল জেলা সহসভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, অনেকক্ষেত্রে অভিযোগ আসছে বহু নিচুতলার নেতা সাধারণ মানুষের জবকার্ড রেখে দিয়েছে। এতে মানুষ চরম ক্ষুব্ধ। এর ক্ষোভ ভোটবাক্সেও পড়েছে। দল থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দ্রুত দলীয় কার্যালয় থেকে সব জবকার্ড মানুষের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। না হলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, এতে তো আমাদের অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হল। তৃণমূলের নেতারা সাধারণ মানুষের টাকা লুট করেছে। এখন দায়ে পড়ে তা ফেরত দেওয়া কথা বলছে। এসব করে আর কোনও কাজ হবে না, মানুষ এদের স্বরূপ চিনে গিয়েছে।
এবার লোকসভা ভোটে গতবারের থেকে মার্জিন বাড়িয়ে জিতেছেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী শতাব্দী রায়। কিন্তু তাঁর এই জয় সামগ্রিক জয় নয়। কয়েকটি বিশেষ এলাকা তাঁকে বিপুল লিড দেওয়ার এবার ফাঁড়া কাটিয়েছেন অভিনেত্রী। গতবারও শহরাঞ্চলে তিনি পিছিয়ে ছিলেন, এবার বিস্তীর্ণ গ্রামাঞ্চলে বিজেপির থেকে পিছিয়ে তৃণমূল। একই অবস্থা অসিত মালের ক্ষেত্রেও। হিন্দুপ্রধান এলাকার গ্রামের মানুষ একচেটিয়াভাবে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। কিন্তু কেন এমন হল তা নিয়ে পর্যালোচনায় ব্যস্ত তৃণমূল শিবির। সেক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে শহরাঞ্চলে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, এয়ার স্ট্রাইক প্রভৃতি ভোটবাক্সে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের ভোটারদের মধ্যে ভালো প্রভাব ফেললেও গ্রামাঞ্চলে শাসকদলের উন্নয়ন নিয়ে বেনিয়ম তৃণমূলের বিপর্যয়ের অন্যতম করণ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার নানা প্রকল্প নিয়ে মানুষের কষ্ট লাঘব করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। কন্যাশ্রী থেকে শিক্ষাশ্রী, রূপশ্রী, সবুজশ্রী প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, সরকারি নানা প্রকল্প নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের মাতব্বরি মানুষের চক্ষুশূল হয়েছে। বিশেষ করে ১০০দিনের কাজ নিয়ে গ্রামাঞ্চলে ক্ষোভ রয়েছে। অনেক গ্রামেই অভিযোগ রয়েছে, সেখানে জবকার্ড নিজেদের জিম্মায় নিয়েছে তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা। এবার কাজের বিনিময়ে সরকারি টাকা ঢুকলে কিছু টাকা কার্ডের মালিককে দিয়ে বাকি টাকা আত্মসাৎ করত নেতারা। নিজেদের অধিকারের টাকা এভাবে লুট হতে দেখে স্থির থাকতে পারেনি বিক্ষুদ্ধ গ্রামবাসীরা। পঞ্চায়েত ভোটের এর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা ছিল, কিন্তু বিস্তীর্ণ এলাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূল জয়লাভ করায় এই ক্ষোভ আরও কয়েকগুণ বেড়ে যায়। সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটে এবারের লোকসভা ভোটে। বিষয়টি এখন ভালোমতোই উপলব্ধি করতে পারছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তারা এও বুঝতে পারছে, এখনও এই নিচুতলার কর্মীদের দমাতে না পারলে বিধানসভা ভোটে বিপদ বাড়বে। এমনকী লোকসভা ভোটের পর অনেক বেশি ক্ষমতাশালী হয়ে বিজেপি এই ইস্যু নিয়ে মাঠে নেমেছে। ইতিমধ্যেই বোলপুর ব্লকের গোপালপুরে জবকার্ড ফেরতের দাবি জানিয়ে বিজেপির নেতৃত্বে গ্রামবাসীরা তৃণমূল নেতার বাড়িতে জড়ো হয়েছিল। যা নিয়ে সংঘর্ষও হয়। তাই সময় নষ্ট না করে লোকসভা ভোটের পর থেকে মানুষের মন জয়ে মাঠে নামছে তৃণমূল। যারই প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে জবকার্ড দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত। সোমবার বোলপুরে দলীয় কার্যালয়ে অনুব্রত মণ্ডলের উপস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।