উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জঙ্গলমহলের দায়িত্ব পেয়েই সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় আসেন শুভেন্দুবাবু। সার্কিটহাউসে দলীয় নেতাদের নিয়ে মিনিট দশকের বৈঠক করেই বিজেপি নেতা-কর্মীদের সন্ত্রাস চালানো এলাকায় যান তিনি। মেদিনীপুর সদর ব্লকের পাঁচখুড়ির কালীনগরে যেতেই তাঁকে দেখে কেঁদে ফেলেন মহিলারা। তৃণমূলের পার্টি অফিসে দলীয় পতাকা নামিয়ে দিয়েছিল বিজেপি। শুভেন্দুবাবু ফের পতাকা তোলেন। সেখানেই তাঁকে দেখে মহিলারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সকলেরই করুণ আর্তি, আমাদের বাঁচান। তাঁদের উদ্দেশ্যে করে শুভেন্দুবাবুকে বলতে শোনা যায়, চোখের জল না, সাহস রাখুন। আমরা সঙ্গে আছি।
শুভেন্দুবাবু বলেন, আইন হাতে তুলে নিতে আমরা দেব না। প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দল থাকবে। ভালো-মন্দ থাকবে। কিন্তু, এরকম করতে দেব না। ছোটআঙারিয়া, বেনাচাপড়ায় আগে যেরকম ঘটেছে, এখানে আমরা তা করতে দেব না, আটকাব। সকলকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, আমি আটকাব ওদের। জঙ্গলমহলে এর আগেও আমি আটকেছি। সভাপতি, বিধায়ক আছেন, আমরা আছি। পুরোনো সিপিএম এখন বিজেপি হয়েছে। ঘর ছেড়ে কেউ বাইরে যাবেন না। এলাকায় থাকবেন।
উল্লেখ্য, খড়্গপুর গ্রামীণ বিধানসভার অন্তর্গত এই সব এলাকায় একাধিক পার্টি অফিস দখল করার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। তৃণমূল সমর্থকদের উপর ব্যাপক অত্যাচার চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ। শুভেন্দুবাবু আসার পর খড়্গপুর গ্রামীণ বিধানসভা এলাকার একাধিক জায়গায় দলীয় কার্যালয়ের পুনর্দখল নেয় তৃণমূল। পাথরা, হাতিহলকা, রামনগরে পার্টি অফিস দখল নেওয়া হয়েছে। এলাকায় ফিরে গিয়েছেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। এলাকার বিধায়ক দীনেন রায় বলেন, শুভেন্দুবাবু আসতে সকলেই মনোবল পেয়েছে। আমরা একাধিক জায়গায় পার্টি অফিস খুলেছি। নেতা-কর্মীরা সকলেই সাহস পেয়ে বের হচ্ছেন। সিপিএম একসময় যে দিন দেখিয়েছিল, আবার সেই রকম একটা পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। কিন্তু, সেই অপচেষ্টা আমরা রুখব।
সোমবার শালবনীতেও গিয়েছিলেন শুভেন্দুবাবু। লোকসভা ভোটের পর সেখানে ব্যাপক সন্ত্রাস চলছে বলে অভিযোগ। শালবনীর বালিজুড়িতে ২০টির বেশি বাড়ি ঘর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল নেতা-কর্মীরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। আবার তাঁদের সকলকে বাড়ি ফেরানো হয়েছে। এলাকায় একটি পুলিস ক্যাম্পও হয়। মণ্ডলকূপিতে সোমবারই শুভেন্দুবাবু পার্টি অফিসে পতাকা লাগিয়ে দিয়ে যান। এছাড়া শালবনী ব্লক তৃণমূল পার্টি অফিসে বিজেপি পতাকা টাঙিয়ে দিয়েছিল। এদিন সেই পতাকা সরিয়ে আবার পার্টি অফিস খোলা হয়।
শালবনীর তৃণমূল নেতা সন্দীপ সিংহ বলেন, কর্মীদের মনোবল অনেকটাই বেড়েছে। সকলেই রাস্তায় বেরচ্ছে। কর্মীরাও বাড়ি ফিরছে। সোমবার সন্ধ্যায় কেশপুর গিয়েছিলেন শুভেন্দুবাবু। সেখানেও তিনি বলেন, আমি সবাইকে প্রণাম করি। কেশপুর না থাকলে ঘাটালে জিততাম না। আপনাদের ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পান ভালো ডাক্তার। যাকে যে ওষুধ প্রয়োগ করতে হয়, করা হবে। আমরা যে কষ্টের দিন পেরিয়েছি, তা আমরা আর ফিরে পেতে চাই না। ডাণ্ডা দেখিয়ে চোখ রাঙিয়ে আগে যা করেছেন, আর করতে দেব না। উন্নয়নের রাজনীতি হোক। মনোবল চাঙ্গা রাখবেন। সব জায়গায় যেন ঝাণ্ডা ওড়ে।
দেবের গ্রাম মহিষদায় যে পার্টি অফিস বিজেপির থেকে বাঁচাতে সিপিএমের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছিল, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এদিন সেই অফিসের ফের দখল নেয় তৃণমূল। তৃণমূলের পার্টি অফিস হিসেবে দেওয়াল লিখনও হয়। উল্লেখ্য, একসময় এটি সিপিএমের পার্টি অফিসই ছিল। যদিও সঞ্জয়বাবু বলেন, ওই অফিস বিজেপির সমর্থনে সিপিএম দখল করেছিল। চুনকাম করে দিয়েছিল। সেই অফিসে এদিন আমরা আবার আমাদের দলীয় প্রতীক এঁকেছি। গ্রামের মানুষই ওদের রুখে দিয়েছে। এদিকে কেশপুরের শিরসায় তৃণমূলের এক কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে।