সন্তানের দাম্পত্য অশান্তিতে মানসিক চিন্তা। প্রেম-প্রণয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ ও মনঃকষ্ট। ব্যবসার অগ্রগতি। ... বিশদ
শিলিগুড়ির পুলিস কমিশনার সি সুধাকর বলেন, সিমবক্সের মাধ্যমে চলা টেলিফোন এক্সচেঞ্জের বিরুদ্ধে তদন্তে বড়ধরনের সাফল্য মিলেছে। ওই ঘটনায় আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে। এই মামলায় এসওজি, এনজেপি থানা এবং ডিডি প্রশংসনীয় কাজ করেছে।
চারদিন আগে শিলিগুড়ি শহরের উপকণ্ঠে ফুলবাড়ির জোটিয়াকালী মোড়ে ওই ভুয়ো টেলিফোন এক্সচেঞ্জের হদিশ পায় পুলিস। সোমবার ঘটনার তদন্তভার গ্রহণ করে ডিডি। দু’দিন ধরে তারা তদন্ত চালিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ভুয়ো এক্সচেঞ্জোর জন্য জোটিয়াকালীর জেরক্সের দোকানে সিমবক্স সহ বিভিন্ন ডিভাইস আসে বাংলাদেশ থেকে। এই ঘটনায় ধৃত জেরক্সের দোকানের মালিক সাবির আলির দেওয়া তথ্য বিভিন্নভাবে যাচাই করেই এমন অনুমান করা হচ্ছে। ফুলবাড়ির ওপাড়ে বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলা ও ঢাকায় যার নেটওয়ার্ক বিস্তৃত। সম্ভবত সেখান থেকে বৈধভাবে মাস্টারমাইন্ডরা এখানে এসে কলকাতার নাগরিক পরিচয় দিয়ে সংশ্লিষ্ট এক্সচেঞ্জ চালু করে।
গোয়েন্দাদের বক্তব্য, বাংলাদেশের প্রচুর মানুষ সৌদি আরব, দুবাই, চীন, পাকিস্তান সহ বিভিন্ন দেশে থাকেন। সেই দেশ থেকে আন্তর্জাতিক টেলিফোন কলের রেট প্রচুর। সেখানকার ইন্টারনেট ব্যবস্থাও দুর্বল। সম্ভবত এজন্যই এখানে ভুয়ো এক্সচেঞ্জ চালু করে বাংলাদেশি একটি চক্র। এই দেশের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে তা চালানো হচ্ছিল। সিমবক্স প্রযুক্তির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক কল পরিণত হচ্ছিল লোকাল কলে। সংশ্লিষ্ট কলে নজরদারি চালানো যাচ্ছিল না। সম্ভবত এই এক্সচেঞ্জ ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছিল।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার সেই জেরক্সের দোকানে হানা দিয়ে ভুয়ো এক্সচেঞ্জ সিল করে এসওজি। তারা ওই দিন দোকানের মালিক সাবিরকে পাকরাও করে। ধৃতের দেওয়া তথ্য অনুসারে বেশ কয়েকজন এজেন্টের হদিশ পান গোয়েন্দারা। এদিন বিকেলে তারা শিলিগুড়ি শহরের পাতিকলোনি ও এনজেপির ধনতলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরও দু’জকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতদের নাম দয়াল বর্মন ও রাজু রায়। প্রথমজন পাতিকলোনি ও দ্বিতীয়জন ধনতলার বাসিন্দা। ধৃতরা চক্রের সিম সরবরাহকারী এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছে বলে গোয়েন্দাদের সন্দেহ। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ধৃতরা বিভিন্ন জায়গা থেকে জাল নথি দিয়ে সিমকার্ড সংগ্রহ করত। এরপর কমিশনের ভিত্তিতে তা সাবিরের কাছে সরবরাহ করত।
শুধু রাজস্ব ফাঁকি নয়, ভুয়ো এক্সচেঞ্জের নেপথ্যে অন্য কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে বলেও সন্দেহ। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, বাংলাদেশে ভারত বিরোধী জেহাদি সংগঠন সক্রিয়। যাদের শেকর পাকিস্তান ও চীন পর্যন্ত বিস্তৃত। সম্ভবত ওই জেহাদি সংগঠন সংশ্লিষ্ট এক্সচেঞ্জ ব্যবহার করত। উদ্দেশ্য দু’টি। এক, ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে ভারতের অর্থনীতি দুর্বল করা। দুই, নিরাপদে এখানকার তথ্য আদান প্রদান করা। এছাড়া গোয়েন্দাদের নজর এড়াতে কাউশেঠ (গোরু পাচারের মাথা), মাদক ও সোনা পাচার সিন্ডিকেট সংশ্লিষ্ট নেটওয়ার্ক ব্যবহার করত বলেই সন্দেহ।
পুলিস অফিসাররা জানান, তদন্তে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলিও যাচাই করা হচ্ছে। তাছাড়া এখন ঘটনাটি দু’টি দেশের মধ্যে। তাই এর তদন্তভার সিআইডির কাছে যেতে পারে।