শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা। গুপ্ত শত্রুতার মোকাবিলায় সতর্কতা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় বিলম্বিত ... বিশদ
কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আইনগত দিক ঠিক রেখে কোনও কৃষক যাতে সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয়, তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পৈতৃক জমির রেকর্ড না থাকার কারণে অনেক চাষি ক্ষতিপূরণের টাকা পাচ্ছিলেন না। সে কারণে প্রধানের কাছ থেকে নেওয়া উত্তরাধিকার শংসাপত্র, জমির খতিয়ান ও রেকর্ড দেখে ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকরা সার্টিফিকেট দেবেন। ওই সার্টিফিকেট দেখিয়ে চাষিরা ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন। কৃষকবন্ধু প্রকল্পের ক্ষেত্রেও একইভাবে কৃষকদের সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে।
কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বুলবুল ঝড়ে কৃষকদের ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে। কিন্তু আইন মেনে এসডিআরএফ (স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফান্ড) প্রকল্পের টাকা চাষিদের দিতে গিয়ে বহু ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। কারণ, যেসব চাষির নামে জমির রেকর্ড রয়েছে তাঁরাই কেবলমাত্র এই টাকা পেতে পারেন। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, বহু ক্ষতিগ্রস্ত চাষির নামে রেকর্ড নেই। তাঁদের বাবা কিংবা মায়ের নামে জমির রেকর্ড রয়েছে। কিন্তু বাবা ও মা মারা যাওয়ায় উত্তরাধিকার সূত্রে তাঁরাই এখন জমির মালিক। এছাড়া পুরাতন আমলের মাঠ পড়চা থাকা বহু কৃষকের কম্পিউটারাইজড রেকর্ড এখনও নেই।
এই দুই ধরনের কৃষকদের আইন মোতাবেক ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া যাচ্ছে না। এই ধরনের কৃষকদের কৃষকবন্ধু প্রকল্পের সুবিধাও দেওয়া যায় না। বহু কৃষক নতুন রেকর্ডের জন্য বিএলআরও অফিসে আবেদন করে রেখেছেন। প্রতিটি বিএলআরও অফিসে নতুন রেকর্ডের জন্য আবেদনপত্রের পাহাড় জমেছে। শেষপর্যন্ত কৃষকরা কবে নতুন রেকর্ড পাবেন তার কোনও ঠিক নেই। এই পরিস্থিতিতে বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত চাষি ও কৃষক বন্ধু প্রকল্পে সুবিধা না পাওয়া কৃষকদের মধ্যে বঞ্চনার ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে এই সমস্যার বিষয়ে রাজ্য কৃষিদপ্তরে চিঠিও পাঠানো হয়।
বুধবার ভাঙড় ১ পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়েন্ট ডিরেক্টর (এগ্রিকালচার এক্সটেনশন) গৌতম ভৌমিক, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কৃষি আধিকারিক ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে এই দুটি সমস্যার বিষয়েও আলোচনা হয়। তাতে স্থির হয়, যে সমস্ত চাষি উত্তরাধিকার সম্পত্তির মালিক, কিন্তু নিজের নামে রেকর্ড নেই, তাঁদেরও ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে হবে। এছাড়া মাঠ পড়চা রয়েছে, কিন্তু কম্পিউটারাইজড রেকর্ড নেই তাঁদেরও সমস্ত সুবিধা দেওয়া হবে। এই দুই ধরনের চাষিদের প্রথমে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের থেকে উত্তরাধিকার সংক্রান্ত শংসাপত্র নিতে হবে। এরপর জমির খতিয়ান, রেকর্ড সহ জমির সমস্ত কাগজপত্র ও ওয়ারিশন সার্টিফিকেট সহ আবেদনপত্র জমা দিতে হবে বিএলআরও অফিসে। সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে বিএলআরও তাঁদের সার্টিফিকেট দেবেন। ওই সার্টিফিকেটর ভিত্তিতে তাঁদের ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হবে। ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে, একইভাবে তাঁদের কৃষকবন্ধু প্রকল্পের সুবিধাও দেওয়া হবে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি বীণা মণ্ডল বলেন, আইনি জটিলতার কারণে রেকর্ড না থাকা অনেক কৃষককে বুলবুলের ক্ষতিপূরণ ও কৃষকবন্ধু প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া যাচ্ছিল না। রাজ্য সরকার নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে সমস্ত কৃষককে বুলবুলের ক্ষতিপূরণের টাকা ও কৃষকবন্ধু প্রকল্পে সুবিধা দেওয়া যাবে।