Bartaman Patrika
 

স্ক্রিন টেস্ট
পার্থ দে

মহারানি স্বর্ণকুমারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা যোগমায়া চক্রবর্তীকে ইস্কুলের মেয়েরা আড়ালে ‘কেঁদো বাঘ’ বলে ডাকে। তাঁর দু-মণি শরীরের জন্য ‘কেঁদো’ বলে। আর হেডমিস্ট্রেসকে ‘বাঘ’ কেন বলে আশা করি সেটা বলে দিতে হবে না! ইস্কুলের সব ছাত্রী, সহশিক্ষিকা, দারোয়ান থেকে শুরু করে পৌনে-শতাব্দী প্রাচীন ইস্কুলবাড়ির থামগুলো পর্যন্ত তাঁকে ভয় পায়। তিনি যখন হুঙ্কার দেন থামগুলো ভয়ে কেঁপে ওঠে। 
যোগমায়া দেবীর বাড়ির দশাও খানিকটা একইরকম। তাঁর অনুমতি ছাড়া বাড়িতে কিচ্ছু হয় না। জানলার একটা পর্দা নড়ে না, এমনকী একটা মশাও রাতে মশারির ভিতর ঢুকতে পারে না! তাঁর স্বামী কমলেশবাবু আর একমাত্র কন্যা প্রিয়াঞ্জলি যে কোনও কাজের আগে দশবার তাঁর অনুমতি নেন। যার যা আর্জিই থাকুক শেষমেশ অবিশ্যি তাঁর কথাটাই খাটে। সেটা ইস্কুলে হোক কী বাড়িতে। যেমন প্রিয়াঞ্জলিকে অনেক আদরে মানুষ করেছেন যোগমায়া; ছোটবেলা থেকে গান, নাচ, আবৃত্তি সবকিছু শিখিয়েছেন। কিন্তু ক্লাস টেনের বোর্ড পরীক্ষার দু-বছর আগে সব বন্ধ করে দিয়েছিলেন। প্রিয়াঞ্জলির কোনও ইচ্ছেকে গুরুত্ব দেননি, চোখ পাকিয়ে বলেছিলেন, ‘পিউ, অন্যায় আবদার করবে না। কো-কারিকুলার অ্যাকটিভিটিসের চেয়ে এখন পড়াশোনা অনেক জরুরি। এখন থেকে বোর্ড এগজামকে পাখির চোখ করে রাখ, অন্য কোনওরকমের ডিসট্র্যাকশন চলবে না।’ 
প্রিয়াঞ্জলিও বাধ্য মেয়ের মতো বোর্ড পরীক্ষাকে পাখির চোখ করে রেখেছিল। প্রথমে দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা, তারপরে দ্বাদশের বোর্ড পরীক্ষায় নব্বই শতাংশের বেশি নম্বর নিয়ে পাশ করে কলেজে ফিজিক্স অনার্সে ভর্তি হয়ে ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছিল। এই পর্যন্ত তার অ্যাকাডেমিক কেরিয়ারের সমস্ত সিদ্ধান্ত যোগমায়া দেবীই নিয়েছেন। সেখানে কমলেশবাবুর কোনও ভূমিকাই ছিল না। 
অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিজিক্সের স্নাতকোত্তরেও প্রিয়াঞ্জলি ফার্স্ট ক্লাস পাওয়ার পর যোগমায়া বললেন, ‘এবার বিদেশের ইউনিভার্সিটিগুলোতে পিএইচডি প্রোগ্রামে চান্স পেতে হবে। জিআরই এবং আইইএলটিএস পরীক্ষার জন্য তৈরি হও।’
প্রিয়াঞ্জলি একবার মিউমিউ করে বলার চেষ্টা করেছিল, ‘মা...ইয়ে মানে, আ-আমি ঠিক...পিএইচডি মেটেরিয়াল নই...,’ কিন্তু যোগমায়া তাকে মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে বললেন, ‘ডক্টরেট তোমাকে হতেই হবে।
কোন কোন মার্কিন ইউনিভার্সিটিতে আবেদন করতে হবে আমি বলে দেব। এখন স্কুলে যাচ্ছি, রাতে ফিরে এসে আমি এটা নিয়ে তোমার সঙ্গে বসব।’
সেদিন ইস্কুলে গিয়ে একটা কাণ্ড ঘটল। 
মহারানি স্বর্ণকুমারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের হীরক জয়ন্তী বর্ষ উদযাপন নিয়ে স্কুল কমিটির একটা মিটিং ছিল। সেই মিটিংয়ে কমিটির চেয়ারম্যান নরেশ সাহাকে একেবারে ধুয়ে দিলেন যোগমায়া। ভদ্রলোক হীরক জয়ন্তীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাংলা ব্যান্ড ‘নগর রাখাল’-কে আনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। যোগমায়া ক্লাস ফাইভের বাচ্চাকে বকার ভঙ্গিতে নরেশবাবুকে ধমকে দিলেন, ‘এসব কী বলছেন নরেশবাবু! স্কুলের ডায়মন্ড জুবিলিতে আপনি স্কুলের মধ্যে অপসংস্কৃতি ঢুকিয়ে ছেলেমেয়েগুলোকে উচ্ছন্নে পাঠাবেন! ওইসব ব্যান্ড ফ্যান্ডের গান স্কুলে চলবে না। গানের নামে কতগুলো ইয়াং ছেলে মেয়েদের স্কুলে এসে গাঁকগাঁক করে চেঁচাবে, শিক্ষাঙ্গনকে কলুষিত করবে, এ আমি কিছুতেই হতে দেব না...ছি ছি, আপনার কোনও আক্কেল নেই!’ 
যোগমায়া দেবীর সেই ঝোড়ো আক্রমণের মুখে নরেশবাবুসহ কমিটি মেম্বারদের বক্তব্য খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছিল। সেই ঘটনার পর ইস্কুলের মেয়েরা আড়ালে বলাবলি করেছিল, ‘কেঁদো বাঘ রাখাল বালকদের খেয়ে নিয়েছে!’
দিনকয়েক পরে হেড মিস্ট্রেসের খাস আর্দালি নমিতা যোগমায়া দেবীর অফিস চেম্বারে ঢুকে বলল, ‘বড়দি, একজন ঢ্যাঙামতো লোক এসেছেন আপনার সঙ্গে দেখা করতে।’ 
যোগমায়া তখন ইস্কুলের কয়েকটা প্রশাসনিক ফাইল নিয়ে ভারী ব্যস্ত ছিলেন। বললেন, ‘বাইরে অপেক্ষা করতে বল, আমি মিনিট দশেক পরে ডাকছি।’
তারপর কাজের ফাঁকে ভুলেই গিয়েছিলেন লোকটার কথা। যখন মনে পড়ল, তখন প্রায় এক ঘণ্টা হয়ে গেছে। তড়িঘড়ি নমিতাকে ডেকে বললেন, ‘হ্যাঁ রে সেই লোকটা কি এখনও অপেক্ষা করছে না চলে গেছে?’ 
‘না বড়দি, এখনও ঠায় বসে আছে লোকটা।’
যোগমায়া কিঞ্চিৎ লজ্জিত বোধ করলেন। ভদ্রলোককে এতক্ষণ বসিয়ে রেখে তিনি ভুলেই গিয়েছিলেন! বললেন, ‘যা শিগগিরই ডেকে আন ওঁকে।’ 
কয়েক মুহূর্ত পরে ভদ্রলোক ঘরে ঢুকতেই যোগমায়া হাতটাত জোড় করে এতক্ষণ বসিয়ে রাখার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিলেন। 
ভদ্রলোক হাঁ হাঁ করে উঠলেন, ‘না না ম্যাডাম কী করছেন! আপনি ব্যস্ত মানুষ, আমারই অসময়ে এসে আপনাকে বিরক্ত করা উচিত হয়নি...এসব ক্ষমাটমা চেয়ে আমাকে লজ্জায় ফেলবেন না।’ 
যোগমায়া দেখলেন ভদ্রলোক প্রায় ছ’ফুট লম্বা। বয়স চল্লিশের আশপাশে। পরনে পাঞ্জাবি আর জিনস। মুখে ইন্টেলেকচুয়াল দাড়ি। 
ঘাড় ঝুঁকিয়ে ভদ্রলোক বললেন, ‘নমস্কার, আমি পথিকৃৎ বসু, ক্লাস নাইনের নীলাঞ্জনা আমার ভাইঝি...’ 
‘নীলাঞ্জনা...ওওও নীলাঞ্জনা, যে মেয়েটা ভারতনাট্যম নাচে? ও লেখাপড়া তো ঠিকঠাকই করছে।’ 
‘না না, আমি ওর ব্যাপারে কিছু বলতে...’
‘তবে দেখুন, এখন ক্লাস নাইন, ওকে একটু সিরিয়াস হতে হবে। এখন নাচটাচ সব বন্ধ থাক, লেখাপড়াটা মন দিয়ে করুক।’
‘সে তো নিশ্চয়ই,’ পথিকৃৎ বসু ঈষৎ অপ্রতিভ গলায় বলেন, ‘ম্যাডাম, আমি আসলে আপনার কাছে একটা অন্য দরকারে এসেছি।’ 
‘কী দরকার?’ 
‘দরকার...মানে, ইয়ে, মানে আমি একজন চিত্রপরিচালক, বেশ কিছু তথ্যচিত্র ও ফিচার ফিল্ম করেছি। কয়েকটা ছোট ছবি সানডান্স, লোকার্নো...’ 
‘হবে হয়তো...আমি আবার ছবিটবি তেমন দেখি না, তাই আপনার নাম শুনিনি। হলে গিয়ে শেষ ছবি দেখেছি সত্যজিৎ রায়ের ‘আগন্তুক’। এবার আপনার দরকারটা বলে ফেলুন পথিকৃৎবাবু।’ 
‘দরকার ঠিক নয়, ম্যাডাম...আসলে আমি একটা প্রস্তাব নিয়ে এসেছি। আমার একটা ছবির চরিত্রে আপনাকে অভিনয় করতে হবে। প্লিজ ‘না’ বলবেন না, ম্যাডাম...আসলে আমার ছবির চিত্রনাট্যে চরিত্রটার যেমন লুক, যেমন প্রোফাইল আছে, তার সঙ্গে আপনি হুবহু মিলে যান...’
যোগমায়া আকাশ থেকে পড়লেন! ভদ্রলোক বলছেন কী! তিনি একটু কঠিন গলায় বললেন, ‘আপনি তো আমাকে চেনেনই না, তাহলে কী করে জানলেন আপনার ছবির রোলটার জন্য আমিই মানানসই?’
‘না, ম্যাডাম আপনাকে আমি চিনি আমার দাদা-বউদির চোখ দিয়ে। নীলাঞ্জনার পেরেন্টস টিচার মিটিং হলে বউদি আসে, ওঁর কাছ থেকেই আপনার কথা জেনেছি।’ 
যোগমায়া দেখেছেন লোকটা এরকম উৎপটাং আবদার নিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেছে। তার মানে নাছোড়বান্দা পার্টি! একে অন্যপথে বিদায় করতে হবে। 
‘দেখুন, সত্যজিৎ রায় আর মৃণাল সেন ছাড়া আর কোনও বাঙালি ছবি করতে জানে বলে আমার মনে হয় না। সিনেমা-নাটকে আমার তেমন রুচি নেই। আমি অ্যাকাডেমিশিয়ান...’
‘এগজ্যাক্টলি ম্যাডাম,’ পথিকৃৎ যোগমায়ার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বলেন, ‘রোলটা তো একজন অ্যাকাডেমিশিয়ানের, মানে শিক্ষিকার...আপনি প্লিজ আমাকে ফেরাবেন না, আরেকবার ভেবে দেখুন, খুব গুরুত্বপূর্ণ রোল।’ 
‘বেশ,’ যোগমায়া হাত জোড় করে উঠে দাঁড়ালেন, ‘আপনি এবার আসুন পথিকৃৎবাবু, আমি ভেবে দেখব।’ 
পথিকৃৎ যাওয়ার আগে তাঁর ভিজিটিং কার্ড দিয়ে গেলেন। যোগমায়া ফের ফাইল টেনে বসলেন, কিন্তু কিছুতেই কাজে মন বসাতে পারলেন না। লঘু বিনোদনে তাঁর কোনওকালেই রুচি ছিল না, ইস্কুল থেকে বাড়ি ফিরে নিউজ চ্যানেল দেখেন। কমলেশবাবু কখনও ভুলক্রমে টিভি সিরিয়াল চালালে বিরক্ত হয়ে উঠে যান। অথচ আজ পথিকৃৎ বসু নামের লোকটা চলে যাওয়ার পর তিনি বারবার অন্যমনস্ক হয়ে পড়লেন। 
রাতে বাড়ি ফিরে ন’টা নাগাদ একটা অচেনা নম্বর থেকে ফোন এল। ধরতেই ওপাশ থেকে পথিকৃৎ বসুর গলা ভেসে এল—‘ম্যাডাম, তাহলে রোলটা করছেন তো?’
যোগমায়া বেশ জোরের সঙ্গে বলতে চেয়েছিলেন ‘আমি এখনও ভেবে দেখিনি’ কিন্তু গলাটা কেমন নরম শোনাল। 
বাড়িতে সাড়ে ন’টায় খাওয়ার নিয়ম করেছেন যোগমায়া। দশটার মধ্যে আলো নিভিয়ে সবাইকে বিছানায় যেতে হয়। প্রিয়াঞ্জলির পরীক্ষার আগে অবিশ্যি রাত জেগে পড়ার অনুমতি আছে। 
সেদিন খাওয়ার পর টিভির সামনে কিছুক্ষণ বসে থাকলেন যোগমায়া। মেয়ে আর স্বামী শোওয়ার ঘরে সেঁধিয়ে যাওয়ার পর রিমোট দিয়ে চুপিচুপি কয়েকটা বাংলা সিরিয়াল আর সিনেমার চ্যানেলে ঘোরাঘুরি করলেন। খানিক বাদে বিছানায় ফিরে এসেও শান্তি নেই। মনের ভিতর কী একটা যেন খচখচ করছে। মনে পড়ল স্কুলশিক্ষিকা হওয়ার আগে ছোটবেলায় তাঁর অনেক কিছুই হতে ইচ্ছে করত। এয়ার হোস্টেস, ডাক্তার, নার্স, পুলিস এমনকী ফুচকাওয়ালাও! যখন তাঁর পাঁচ বছর বয়স তখন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে এইসব বিচিত্র ভূমিকায় অভিনয় করতেন। অবিশ্যি আর পাঁচটা বাচ্চা মেয়েও তো এইগুলোই করে! তাঁর কন্যা প্রিয়াঞ্জলিও তো ছোটবেলায় তাই করত! 
তবে কী এই অভিনয়ের ইচ্ছেটা মানুষের জন্মগত! জীবন যদি তাঁকে সত্যি সত্যিই অভিনয় করার সুযোগ দেয়, মন্দ কী! পরক্ষণেই যোগমায়ার মনে হল এসব তিনি কী ভাবছেন! বাহান্ন বছর বয়সে তিনি এমন তরলমতি বালিকার মতো ভাবছেন কী করে! একটি নামকরা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার এসব মানায় না।
গোটা রাতটা বিছানায় ছটফট করে কাটল! পরদিন ইস্কুলে গিয়েও মন বসাতে পারলেন না। ইতিমধ্যে পথিকৃৎ বসু তাঁকে নিজের বেশ কয়েকটি সিনেমার ইউটিউব লিংক পাঠিয়েছেন। সেগুলো খুলে দেখলেন ভদ্রলোকের কাজগুলি বেশ ভালো। অত্যন্ত উঁচু সিনেম্যাটিক সেন্স। 
সারাদিনে পথিকৃৎ আরও তিনবার তাঁর সিদ্ধান্ত জানার জন্য ফোন করলেন। তিনবারই যোগমায়া কোনও সিদ্ধান্ত জানাতে পারলেন না। 
রাত দশটার সময় চতুর্থ ফোনটা যোগমায়া নিজেই করলেন। তবে বাথরুম থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে।
‘পথিকৃৎ, আমি রাজি। তবে আমার দুটো শর্ত আছে। আপনার শ্যুটিংয়ের কাজ খুব দ্রুত শেষ করতে হবে আর ব্যাপারটা পাঁচকান করা চলবে না।’
‘ম্যাডাম, আমি রাজি,’ ফোনের ওপাশে পথিকৃৎ একটু দম নিলেন, ‘আগামী শুক্রবার বেলা তিনটে নাগাদ রাজলক্ষ্মী স্টুডিওতে চলে আসুন। একটা স্ক্রিন টেস্ট করে নেব। জায়গাটা চেনেন তো, আনোয়ার শা রোডে।’ 
‘ডান।’ 
ফোনটা কেটে বাথরুম থেকে বেরিয়ে এলেন যোগমায়া। খুব সন্তর্পণে এসে বিছানায় শুয়ে পড়লেন। খাটের অন্যপ্রান্তে কমলেশবাবু তখন নাক ডাকছেন। যোগমায়া ঠিক করে নিয়েছেন অভিনয় করার পুরো ব্যাপারটা বাপ-মেয়ের কাছে গোপন রাখতে হবে, নাহলে তাঁর এতদিনের তৈরি ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। 
পরের শুক্রবার যোগমায়া কাজের ছুতোয় ইস্কুল থেকে বেরিয়ে দুটো নাগাদ রাজলক্ষ্মী স্টুডিওতে পৌঁছলেন। একটা বড় বিল্ডিংয়ের তিনতলায় শ্যুটিং ফ্লোর। স্ক্রিপ্ট রেডিই ছিল। পথিকৃৎ সেটা ধরিয়ে দিয়ে বললেন, ‘ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে এই দুলাইনের সংলাপটা বলবেন। ডায়ালগ থ্রো করার সময় যেটুকু ইমোশন দেওয়ার, সেটা দেবেন। আমি ক্যামেরার পাশে ওই মনিটরে সবটা দেখব।’ 
হাতের কাগজটায় লেখা সংলাপটার দিকে তাকালেন যোগমায়া। লেখা আছে—‘আমি সারা জীবন এক মিথ্যার জগতে বাস করেছি। আজ বুঝি, নিজের স্বপ্নের চেয়ে বড় কিছু নেই!’ 
ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে সংযত আবেগ দিয়ে যোগমায়া গড়গড় করে সংলাপটা বলে গেলেন। মনিটরের পিছন থেকে পথিকৃৎ বুড়ো আঙুল তুলে বোঝালেন, শট ওকে! 
তারপরে কাছে এগিয়ে এসে পথিকৃৎ বললেন, ‘ম্যাডাম, দারুণ হয়েছে। এটা নায়িকা-প্রধান ছবি। আমাদের ছবির শ্যুটিং সামনের সপ্তাহ থেকেই শুরু হবে। আপনার চরিত্রটা হল নায়িকার মায়ের। পাশের ঘরে ছবির নায়িকা ও অন্যান্য অভিনেতারা আছেন, আসুন, আমি আলাপ করিয়ে দিই।’ 
যোগমায়া পথিকৃতের পিছুপিছু গেলেন। চিত্রপরিচালক পাশের ঘরের দরজাটা খুলে ধরতেই যোগমায়া চমকে উঠলেন। ঘরের ভিতর একটা সোফায় পাশাপাশি বসে আছেন কমলেশ আর প্রিয়াঞ্জলি। বাপ-মেয়েকে একসঙ্গে দেখে যোগমায়ার মুখে ক্ষণিকের বিস্ময় ফুটে উঠেই মিলিয়ে গেল। ধীরে ধীরে মুখের পুরনো কাঠিন্য ফিরে এল। রহস্যটা যেন একটু একটু করে স্পষ্ট হচ্ছে।
কমলেশ এগিয়ে এসে বললেন, ‘তুমি কোনওদিন মেয়ের মনটা বোঝার চেষ্টা করনি, ওর ইচ্ছে-অনিচ্ছেকে গুরুত্ব দাওনি। কলেজে পড়ার সময়ই পিউ আমাকে বলেছিল, বাবা, আমি অভিনয় করতে চাই। তোমাকে লুকিয়ে ওদের ইস্কুলের নাটকে অভিনয়ও করত। তাই গ্র্যাজুয়েশনের পরেই আমি ওকে একটা অভিনয় শেখার স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছিলাম। সপ্তাহে দু’দিন কলেজের পর যেত। সেখানেই পথিকৃৎ বসুর সঙ্গে আমাদের আলাপ।’ 
যোগমায়া হতভম্ব হয়ে চিত্রপরিচালকের দিকে তাকালেন। তিনজন ষড়যন্ত্রকারীর বিরুদ্ধে আত্মপক্ষ সমর্থনে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু তার আগেই পথিকৃৎ বলে উঠলেন, ‘ম্যাডাম, পুরোটা কিন্তু কনস্পিরেসি নয়, আমার ওয়েব সিরিজ ‘ইচ্ছেপূরণ’-এর নায়িকা প্রিয়াঞ্জলি যেমন সত্যি, আপনার রোলটাও কিন্তু তেমন সত্যি, ওটা কিন্তু আপনাকে করে দিতেই হবে। দেবেন তো? প্লিজ প্লিজ...’ 
চিত্রপরিচালক মশাইয়ের কথায় রাগ করতে গিয়েও যোগমায়া ফিক করে হেসে ফেললেন। 
10th  May, 2024
অক্ষয় তৃতীয়ার অনন্ত মাহাত্ম্য
সুমন গুপ্ত

কৌরবদের সঙ্গে দ্যূতক্রীড়ায় ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির পরাভূত। শেষে কী যে মতিভ্রম হল তাঁর, দ্রৌপদীকেও পণ রাখলেন! দ্রৌপদীপণেও ধর্মরাজের পরাজয় হল। দুরাত্মা দুর্মতি দুঃশাসন পাঞ্চালির দীর্ঘ কেশাকর্ষণপূর্বক সভাসমীপে আনয়ন করল। বিশদ

10th  May, 2024
অক্ষয় তৃতীয়া ও শ্রীকৃষ্ণ
সমুদ্র বসু

 

অক্ষয় তৃতীয়া তিথিতে যা কিছু করা হয় তা অক্ষয় হয়ে থাকে বলে জনমানসে বিশ্বাস। শ্রীকৃষ্ণকে জড়িয়ে মহাভারতে এই তিথিতে ঘটেছিল একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। কী সেই ঘটনাবলি? মহাভারতে দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ এক নির্মম ছবি। বিশদ

10th  May, 2024
কী কিনবেন অক্ষয় তৃতীয়ায়?
সুনীতি বন্দ্যোপাধ্যায় 

বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথি অক্ষয় অর্থাৎ যা অবিনশ্বর অর্থাৎ ক্ষয় নেই। ১৪৩১ সনের অক্ষয় তৃতীয়া বৈশাখ মাসে ২৭ তারিখে ও ইংরেজি ২০২৪ সালের ১০ মে শুক্রবার। বিশদ

10th  May, 2024
অক্ষয় তৃতীয়ায় আবির্ভূত হন ভগবান পরশুরাম
অরুণাভ দত্ত

একবার মর্ত্যলোকে ভারী গোল বেঁধে গেল। তখন সমাজ চার বর্ণে বিভক্ত—ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র। ব্রাহ্মণরাই সমাজের মাথা। কীসে মানুষের কল্যাণ হবে, দিবানিশি সেই চিন্তাতেই ব্রাহ্মণরা মগ্ন। সেই সময় হয়েছিল কী, ক্ষত্রিয়রা ঐশ্বর্যের গৌরবে খুব অহঙ্কারী হয়ে পড়ল। বিশদ

10th  May, 2024
তেলিনীপাড়ার অন্নপূর্ণার রথ
অরুণ মুখোপাধ্যায়

রথ হয় জানি আষাঢ় মাসে। কিন্তু অক্ষয় তৃতীয়ায় রথ? হ্যাঁ। হুগলির ভদ্রেশ্বরের তেলিনীপাড়ায় জমিদার বৈদ্যনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিষ্ঠিত দেবী অন্নপূর্ণা মন্দিরের রথ চলে পুণ্য অক্ষয় তৃতীয়ায়।  বিশদ

10th  May, 2024

Pages: 12345

একনজরে
ব্যাঙ্কিং পরিষেবার বহর বাড়াতে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে লেনদেনের সুযোগ করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এই ডোরস্টেপ ব্যাঙ্কিং পরিষেবা দেওয়ার জন্য তারা ১২টি রাষ্ট্রায়ত্ত ...

নিজেদের এলাকার বুথের ফলাফলের উপর তৃণমূল নেতাদের ভাগ্য ঝুলে রয়েছে। অতীতে দেখা গিয়েছে, অনেক তাবড় নেতার বুথে দল ফল খারাপ করেছে। তারপরও তাঁরা বহাল তবিয়তে ক্ষমতায় থেকে গিয়েছেন। সংগঠনের তাঁরাই শেষ কথা। এবার সেটা হবে না। ...

কলকাতা ও দুই ২৪ পরগনার ২১টি থানা, জিআরপি এবং হাসপাতালে অস্বাভাবিকভাবে মৃতদের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য নতুন জায়গা নির্দিষ্ট করে দিল স্বাস্থ্যভবন। এর মধ্যে পাঁচটি হাসপাতাল, ১২টি জিআরপি থানা এবং কলকাতা পুলিস এলাকার চারটি থানা রয়েছে। ...

পশ্চিমবঙ্গে কাজ রয়েছে। রয়েছে সুষ্ঠু পরিবেশ। এখানে খুঁজলেই কাজ পাওয়া যায়। ভিন রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের বক্তব্য স্পষ্ট। যা এক কথায় নস্যাৎ করে দিচ্ছে বিরোধীদের ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কাজকর্মে জটিলতা মুক্তি ও কর্মোন্নতি। অপচয়মূলক বা অপ্রত্যাশিত ব্যয় বাড়বে। পারিবারিক ক্ষেত্রে সুসম্পর্ক। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

বিশ্ব কচ্ছপ দিবস
১৪৯৮ - পর্তুগীজ নাবিক ভাস্কো-দা-গামা উত্তমাশা অন্তরীপ হয়ে ভারতের কালিকট বন্দরে এসেছিলেন
১৬০৯ - শেক্সপিয়ারের সনেট প্রথম প্রকাশিত হয় লন্ডনে
১৮১৮ - প্রথম বাংলা সংবাদপত্র সমাচার দর্পণ আজকের দিনে প্রথম প্রকাশিত হয়। সম্পাদক ছিলেন জন ক্লার্ক মার্শম্যান
১৮২৯- বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকার প্রতিষ্ঠাতা ও গণিতবিদ মাধবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম
১৮৯৪ - ভারতে ফলিত গণিতের জনক বিজ্ঞানী নিখিলরঞ্জন সেনের জন্ম 
১৯০২ - কিউবা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং এই দিনে সকল মার্কিন সেনা কিউবা ত্যাগ করে
১৯০৫ - বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকার প্রতিষ্ঠাতা ও গণিতবিদ মাধবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু
১৯০৬- নাট্যকার হেনরিক ইবসেনের মৃত্যু
১৯১৮- ইংরেজ ক্রিকেটার ডেনিস কম্পটনের জন্ম
১৯১৯- জয়পুরের রাজমাতা গায়ত্রী দেবীর জন্ম
১৯২৮- বিশিষ্ট তবলিয়া রাধাকান্ত নন্দীর জন্ম
১৯৩০ - বাঙালী প্রত্নতত্ত্ববিদ রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু 
১৯৩২ - ইয়ারহার্ট প্রথম মহিলা যিনি একক উড্ডয়নে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দেন
১৯৫১- বিশিষ্ট দাবাড়ু আনাতোলি কারাপোভের জন্ম
১৯৮৩ - এইচআইভি ভাইরাস সম্পর্কে প্রথম প্রকাশিত হয় সায়েন্স ম্যাগাজিনে



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮২.৪৯ টাকা ৮৪.২৩ টাকা
পাউন্ড ১০৪.২৪ টাকা ১০৭.৭২ টাকা
ইউরো ৮৮.৯২ টাকা ৯২.০৭ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৪,৬০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৪,৯৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭১,২৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৯৩,১০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৯৩,২০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৯ ‌জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ২৩ মে, ২০২৪।  পূর্ণিমা ৩৬/৫ রাত্রি ৭/২৩। বিশাখা নক্ষত্র ১০/৪৫ দিবা ৯/১৫। সূর্যোদয় ৪/৫৭/৩৭, সূর্যাস্ত ৬/৯/৫। অমৃতযোগ দিবা ৩/৩১ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৬/৫২ গতে ৯/২ মধ্যে পুনঃ ১১/১৫ গতে ২/৪ মধ্যে পুনঃ ৩/৩১ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ২/৫১ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ১১/৩৩ গতে ১২/৫৪ মধ্যে। 
৯ ‌জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ২৩ মে, ২০২৪। পূর্ণিমা সন্ধ্যা ৬/৪৮। বিশাখা নক্ষত্র দিবা ৮/৫৮। সূর্যোদয় ৪/৫৭, সূর্যাস্ত ৬/১২। অমৃতযোগ দিবা ৩/৪০ গতে ৬/১২ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/২ গতে ৯/১০ মধ্যে ও ১১/৫৮ গতে ২/৬ মধ্যে ও ৩/৩০ গতে ৪/৫৭ মধ্যে। কালবেলা ২/৫৩ গতে ৬/১২ মধ্যে। কালরাত্রি ১১/৩৪ গতে ১২/৫৫ মধ্যে। 
১৪ জেল্কদ।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
ভূপতিনগরে তৃণমূল নেতার উপর হামলা, কাঠগড়ায় বিজেপি
পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগর থানার এক্তারপুরে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অম্বিকেশ মান্নার ...বিশদ

06:30:00 PM

ইডি-সিবিআইয়ের হাত থেকে বাঁচতে বিজেপিতে গিয়েছেন, নাম না করে তাপস রায় প্রসঙ্গে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

06:21:55 PM

একবছর আগে থেকেই বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ ছিল, নাম না করে তাপস রায় প্রসঙ্গে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

06:19:19 PM

মোদি জিতলে এটাই ভারতবর্ষে শেষ নির্বাচন: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

06:11:43 PM

সবার সার্টিফিকেট বহাল থাকবে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

06:09:11 PM

সারাদেশে বিজেপিকে মদত দিচ্ছে বামেরা: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

06:07:47 PM