কাজকর্মে জটিলতা মুক্তি ও কর্মোন্নতি। অপচয়মূলক বা অপ্রত্যাশিত ব্যয় বাড়বে। পারিবারিক ক্ষেত্রে সুসম্পর্ক। ... বিশদ
তবে কোনও মারাত্মক কেলেঙ্কারি ছাড়া বাজার সাধারণভাবে দীর্ঘকালের জন্য ধসে পড়ে না। অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক অর্থনীতির ওঠাপড়ার প্রেক্ষিতে এই দুই ক্ষেত্রে মাঝেমধ্যে যে ‘পতন’ ঘটে, তা স্বাভাবিক। তখন বিনিয়োগকারী ধৈর্য ধরতে পারলে অল্প দিনেই ‘কারেকশন’-এর সুবিধাও পেতে পারেন। কিন্তু এই আর্থিক বাজারকে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিতে পারে কিছু অসাধু দালাল। আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার নেশায় তারা বাজারের উপর কৃত্রিম প্রভাব বিস্তার করে। নিয়মকানুনে কিছু ফাঁক থেকেই যায়, অসাধু কারবারিরা ঢুকে পড়ে সেখান দিয়ে। তারা কোনও কোনও ব্যাঙ্ককে ম্যানেজ করে ‘রেডি-ফরওয়ার্ড ডিল’ বা আরএফ-এর সুযোগ নেয় এবং ‘সার্কুলার ট্রেডিং’ টেকনিক প্রয়োগ করে। সংশ্লিষ্ট দালালরা গভর্নমেন্ট সিকিউরিটিজ বেচে দিয়ে নতুন করে কেনে, তাতে চক্রের সঙ্গে জড়িত পার্টিদের মধ্যে একটা বিপুল অঙ্কের ‘রেডি ক্যাশ ফ্লো’ তৈরি হয়। শেয়ারের দাম এবং বণ্টন ব্যবস্থাও উল্টেপাল্টে দিতে ওস্তাদ এই কীর্তিমানরা। বিভিন্ন কোম্পানির আইপিও নিয়ে অনাসৃষ্টি কারবার ফাঁদে এই ব্রোকার বাহিনী! তাদের এই ‘খেলা’ শেষ হওয়ার পর চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারণ মানুষ। শেয়ার মার্কেট স্ক্যাম যত ছোটই হোক না কেন, তাতে অভ্যন্তরীণ (ডিআইআই) তো বটেই, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের লগ্নিকারীদেরও (এফআইআই) আস্থা টলে যেতে পারে। আর্থিক বাজার এমন ধরনের অস্থিরতায় গ্রস্ত হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয় উন্নয়নশীল দেশগুলি, সেখানে ১৪৪ কোটি মানুষের ভারতের পরিণতি কী হতে পারে তা অনুমেয়। ভারত সাম্প্রতিক অতীতে অন্তত ছয়টি সুবৃহৎ শেয়ার মার্কেট কেলেঙ্কারির সাক্ষী—হর্ষদ মেহতা, সিআরবি, ইউটিআই, সত্যম, সাহারা এবং এনএসই কোলোকেশন স্ক্যাম। ১৯৯২ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে সংঘটিত এই স্ক্যামগুলিতে সাধারণ ভারতবাসীর হাজার হাজার কোটি টাকা ‘হাওয়া’ হয়ে গিয়েছে।
অতএব বিষয়টি কতটা স্পর্শকাতর তা বোঝাই যায়। এর মধ্যে অন্তত রাজনীতির কারবারি, বিশেষ করে দায়িত্বশীল নেতা-মন্ত্রীদের নাক গলানোই উচিত নয়। কারণ তাঁদের কথা শুনে মানুষ ফের প্রতারণার শিকার কিংবা অন্যভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হলে তার দায় তাঁরা নেবেন কি? এ দেশের রাজনীতিকদের বেশিরভাগের অতীত রেকর্ডের ভিত্তিতে হলফ করে বলা যায়, তখন চোখ উল্টেই দেবেন তাঁরা। এই প্রসঙ্গেই নিন্দা করতে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। তাঁরা প্রকাশ্য জনসভা থেকে মানুষকে প্ররোচনা দিচ্ছেন এখনই শেয়ার বাজারে বেশি টাকা বিনিয়োগ করার জন্য! কেন? তাঁরা নাকি ‘হ্যাটট্রিক’ করতে চলেছেন। ৪ জুনের ফলাফলেই তা পরিষ্কার হয়ে যাবে, আর অমনি রকেট গতি নেবে শেয়ার বাজারের সূচক! এমন উস্কানি—কোনও অসাধু ব্রোকারই দিতে পারে, দেশনেতাসুলভ কোনোভাবেই নয়।