ছোট ও মাঝারি ব্যবসায় উন্নতি। বেচাকেনা আর উপার্জন বাড়বে। যে কোনও কাজে ব্যস্ততা বৃদ্ধির যোগ। ... বিশদ
বাড়ি ফিরে বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন সুমন বিত্তার। তখনও তাঁর চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। সাঁইথিয়ার দেরিয়াপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাগডোলা গ্রামে থাকেন সুমন বিত্তার ও তাঁর দুই ভাই সন্দীপ ও সুজয়। শুক্রবার বেঙ্গালুরু থেকে শ্রমিকের কাজ সেরে হাওড়াগামী যশবন্তপুর এক্সপ্রেসে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা তিনভাই। সঙ্গে ছিলেন তাঁদের দিদি, জামাইবাবু এবং ভাগ্নি। দিদি-জামাইবাবুর বাড়ি সিউড়ি-২ ব্লকের পুরন্দরপুর এলাকায়। দুর্ঘটনায় তিন ভাই-ই গলায়, বুকে এবং পিঠে কমবেশি আঘাত পেয়েছেন। বাহানাগা এলাকার একটি ওষুধের দোকান থেকে তাঁদের বিনামূল্যে ব্যথার ওষুধ দেওয়া হয়। সঙ্গের ব্যাগ, মালপত্র কোথায় ছিটকে পড়েছে তার ঠিক নেই। কপর্দকহীন অবস্থায় কীভাবে বাড়ি ফিরবেন তাই ভাবছিলেন। স্থানীয় জনৈক সহৃদয় ব্যক্তি তাঁদের ২০০ টাকা দিয়ে সাহায্য করেন। সর্বস্ব হারিয়ে খালি হাতে বাস ধরে ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ হাওড়ায় পৌঁছন তাঁরা। এরপর বিনা টিকিটে কোনও রকমে হাওড়া থেকে ট্রেন ধরে সাঁইথিয়ার গ্রামে এসে পৌঁছন। খবর নিতে গ্রামবাসীরা ভিড় জমান তাঁদের বাড়িতে।
সুজয় বিত্তার জানান, বেঙ্গালুরুতে একটি ফুলের বাগানে শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিলাম আমরা। বাড়ি থেকে দু’ দিন আগেই ফোনে জানতে পারি, একজন অসুস্থ হয়েছেন। তাই আমরা তাড়াহুড়ো করে অসংরক্ষিত টিকিট কেটে যশবন্তপুর এক্সপ্রেসে উঠেছিলাম। আচমকা ঘটে গেল সেই ভয়ানক দুর্ঘটনা। প্রাণ বাঁচিয়ে কামরা থেকে বেরিয়ে বুঝতে পারি ওই কামরায় আমাদের সঙ্গে মাত্র ৭-৮ জন যাত্রী হয়তো জীবিত রয়েছেন। কামরা থেকে বেরনোর পর দেখতে পাই, বাহানাগা গ্রামের বহু বাসিন্দা আমাদের উদ্ধার করতে ছুটে আসছেন। তারপর তাঁরাই বাড়ি ফেরার জন্য বাস ধরতে সাহায্য করেন আমাদের। বেঙ্গালুরুতে কাজের পারিশ্রমিক এখনও পাইনি। ভাগ্যিস পাইনি, না হলে সব টাকা ব্যাগের সঙ্গে হারিয়ে যেত। সুমন বলেন, চার-পাঁচ মাসের জন্য বেঙ্গালুরুতে কাজ করতে গিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু যে অভিজ্ঞতা হল, তাতে মনে হচ্ছে আমরা আর ট্রেনে চাপতে পারব না।