কর্মপ্রার্থীদের কোনও সুখবর আসতে পারে। কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির সূচনা। গুপ্ত শত্রু থেকে সাবধান। নতুন কোনও প্রকল্পের ... বিশদ
গ্রামের বাসিন্দা মনোজ মণ্ডল বলেন, এবার পুজো এসেছে বলে মনে হচ্ছে না। অন্যান্য বছর আমরা এক মাস আগে থেকে বাড়িতে বাড়িতে ঘুরে চাঁদা তুলি। যে যার সামর্থ্যমতো সহযোগিতা করেন। নবপাড়ায় আমরা ৪০বছরের বেশি সময় ধরে দুর্গাপুজো করে আসছি। কিন্তু দেড় মাস আগে গঙ্গার ভাঙনে দুর্গা মন্দির তলিয়ে গেল। আশপাশে সমস্ত বাড়ি ভেঙে নিয়ে চলে গিয়েছেন এলাকার লোকজন। এবার পুজো করার জায়গা নেই। তাই মায়ের আরাধনা করছি না। তবে মনে মনে মায়ের কাছে প্রার্থনা করব, আমাদের আবার যেন সেই সুদিন ফিরিয়ে দেয়। সামনের বছর আবার ধুমধাম করে পুজো করার ইচ্ছে রয়েছে। হোসেনপুরের আর এক বাসিন্দা শ্যামল মণ্ডল বলেন, আমাদের গ্রামে প্রায় ৩৫০টি বাড়ি ছিল। সবাই চরে চাষ করেই সংসার চালাত। এখন গ্রামে ১২০-১৩০টি বাড়ি রয়েছে। গতবছর বেশকিছু বাড়ি তলিয়ে গিয়েছিল। এবারও ভাঙনের একই ধারা অব্যাহত ছিল। অনেকেই গ্রাম ছেড়ে ফরাক্কায় গিয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই করেছে। কেউ কেউ অন্যত্র বাড়ি করেছে। গ্রামের বাসিন্দারা গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ায় এবার পুজো হবে কী করে। তবে আমাদের গ্রাম থেকে বেশ কিছুটা দূরে চরসুজাপুরে মায়ের আরাধনা হচ্ছে। আমরা সেখানে গিয়েই অঞ্জলি দিয়ে আসব। আমাদের সুদিন ফেরানোর প্রার্থনা জানাব। গঙ্গার গ্রাসে চাষের জমিও তলিয়ে গিয়েছে। তাই আগামী দিনে কীভাবে আমাদের সংসার চলবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছি।
স্থানীয়রা বলেন, সারা বছর গ্রামের লোকজন চাষের কাজে ব্যস্ত থাকলেও পুজোর চারদিন একটু অন্যরকম সময় কাটত। ওই সময় কাজ বন্ধ রেখে সকলেই মন্দিরের সামনে জমায়েত হতেন। নিজেদের সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নিতেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে আড্ডা চলত। গভীর রাত পর্যন্ত মন্দিরের সামনে গ্রামের লোকজন বসে থাকতেন। অষ্টমীর দুপুরে গ্রামবাসীরা মায়ের সামনে বসে অঞ্জলি দিতেন। এবার সে সবকিছুই অতীত। গ্রামের উৎসবের লেশমাত্র নেই। তবে সকলেই একযোগে প্রার্থনা করছেন, সামনের বছর মা যেন আবার তাঁদের গ্রামে আসে। অন্ধকার কেটে আবার গ্রামে আলো ফিরে আসুক।