কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘আপনার সাথে প্রশাসন’। লালগড়ের ধরমপুরে অঞ্চলের ভুলাগেড়া গ্রাম ছিল মাওবাদীদের গড়। রাত কাটানো তো দূরের কথা, সন্ধ্যা হলেই মানুষজন বাড়ি থেকে বেরনোর সাহস পেতেন না। দিনেরবেলায় জঙ্গল রাস্তায় যেতে মানুষের গা ছমছম করত। ক্ষমতার পালা বদলের পর কেটে গিয়েছে আটটি বছর। এলাকার রাস্তাঘাট, পানীয় জল থেকে শুরু করে নানা সরকারি সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে মানুষজন। এর মধ্যেও রয়ে গিয়েছে কিছু অভাব-অভিযোগ। এমনকী সচেতনতার জেরে প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষজন সরকারি প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের মনের কথা থেকে শুরু করে অভাব অভিযোগ, সরকারি পরিষেবার প্রকল্প জানাতে একেবারে সেই প্রত্যন্ত গ্রামে যান জেলাশাসক সহ প্রশাসনের কর্তারা। তবে, এলাকায় হাতির পাল থাকায় শুক্রবার রাতের অনুষ্ঠানে শুধুমাত্র ভুলাগেড়া গ্রামের প্রায় দেড়শো জন বাসিন্দা হাজির হয়েছিলেন। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রথমে জলের ব্যবহার ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জল খাওয়ার জন্য নিয়ে একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয় গ্রামবাসীদের। প্রথমে গ্রামবাসীদের সঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্ব, তারপর আলাপ আলোচনা শুরু করেন প্রশাসনের কর্তারা।
গ্রামের অনেকেই জানান, তাঁদের কাস্ট সার্টিফিকেট এখনও নেই। সঙ্গে সঙ্গে জেলাশাসক বলেন, ১ নভেম্বর গ্রামে ক্যাম্প করে কাস্ট সার্টিফিকেট তৈরি করা হবে। গ্রামবাসীরা প্রশাসনের কর্তাদের জানান, কিছু জায়গায় পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। আবার কিছু জায়গায় চাষের জন্য ডিপ টিউবওয়েল তৈরি হলেও এখন তা চালু হয়নি। নির্মল মিশন বাংলায় অনেকেই শৌচাগার পায়নি। শৌচাগার নিয়ে বেশিরভাগ মানুষজনই অভিযোগ জানান। গৌরী কিস্কু নামে এক বাসিন্দা বলেন, বাংলা আবাস যোজনায় তাঁর নাম নেই। জেলাশাসক গ্রামে কমিউনিটি টয়লেট তৈরি করে দেওয়ার কথা বলেন। এখনও যাঁরা বাড়ি পাননি। উষারানি মাহাত পেনশন ভাতা পাননি বলে অভিযোগ করেন। তবে প্রশাসনের আধিকারিকরা গ্রামে যাওয়ায় খুশি মানুষজন। জেলাশাসক ছাড়াও ওইদিন অতিরিক্ত জেলাশাসক(সাধারণ) পীযূষ গোস্বামী, অতিরিক্ত জেলাশাসক(উন্নয়ন) কৌশিককুমার পাল, মহকুমা শাসক সুবর্ণ রায় সহ জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা গ্রামে রাত্রিযাপন করেন।
এদিকে এদিন সকালে গ্রামে পরিদর্শনের সময় বনকাটি গ্রামের কিছু যুবক জেলাশাসককে বলেন, ১০টি পরিবারকে গ্রামের জমির আলের মধ্যে দিয়ে হেঁটে যেতে হয়। একটি কালভার্ট প্রয়োজন। জেলাশাসক জমির মধ্যে হেঁটে গিয়ে জায়গাটি পরিদর্শন করেন। দোমোহনি উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির ভবন তৈরির কথা জানান গ্রামবাসীরা। তারপর হদহদি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে যান। সেখানে চালের নমুনা সংগ্রহ করেন আধিকারিকরা। কিছু গ্রামবাসী একশো দিনের কাজ চেয়েছেন। কয়েকজন প্রতিবন্ধীদের পেনশন ভাতার জন্য আবেদন পত্র নিয়েছেন প্রশাসনের কর্তারা।
জেলাশাসক বলেন, জেলার প্রতিটি ব্লকে মাসে এক থেকে দু’বার গিয়ে এই ধরনের অনুষ্ঠান করব। মানুষের সমস্যার কথার পাশাপাশি সরকারি প্রকল্পের সুবিধা মানুষকে জানানো হচ্ছে।