নিউ ইয়র্ক: আমেরিকায় জো বাইডেন জমানার অবসানের পর আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সমীকরণে বড়সড় পট পরিবর্তন। একে অপরের কাছাকাছি আসছে দীর্ঘদিনের শত্রু রাশিয়া-আমেরিকা। ইউক্রেন যুদ্ধে শুরু থেকেই ভোলোদিমির জেলেনস্কির পাশে ছিলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরেই পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। সোমবার ইউক্রেন যুদ্ধের তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভোটাভুটিতে রাশিয়ার পাশে দাঁড়াল ওয়াশিংটন। এব্যাপারে ইউরোপের চিরাচরিত সহযোগী দেশগুলির সঙ্গেও দূরত্ব বাড়িয়েছে তারা। প্রসঙ্গত, যুদ্ধের শুরু থেকে রাষ্ট্রসঙ্ঘে রাশিয়ার কড়া সমালোচনা করে এসেছে আমেরিকা। কিন্তু হোয়াইট হাউসের এই আচমকা ভোলবদলে হতবাক আন্তর্জাতিক মহল। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভায় এসংক্রান্ত প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত ছিল ভারত ও চীন। সোমবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব এনেছিল জেলেনস্কির দেশ। সঙ্গে ছিল ইউরোপ। খসড়া প্রস্তাবের শিরোনাম ছিল ‘অ্যাডভান্সিং আ কমপ্রিহেনসিভ, জাস্ট অ্যান্ড লাস্টিং পিস ইন ইউক্রেন’। ইউক্রেনের আনা এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়নি আমেরিকা। অর্থাৎ, দীর্ঘদিনের অবস্থান থেকে সরে এল তারা। যদিও এনিয়ে ভোটে জয়ী হয় ইউক্রেন। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভার সদস্য সংখ্যা ১৯৩। জানা গিয়েছে, এদিন ইউক্রেনের প্রস্তাবে পক্ষে ৯৩টি ভোট পড়েছে। বিপক্ষে গিয়েছে ১৮টি। ভোটদানে বিরত থেকেছে ভারত ও চীন সহ ৬৫টি সদস্য দেশ। এছাড়া অন্য একটি প্রস্তাবে যুদ্ধ বন্ধের আর্জি জানিয়েছিল আমেরিকাও। যদিও সেখানে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের জন্য রাশিয়াকে দায়ী করা হয়নি। সেই প্রস্তাব অবশ্য খারিজ হয়ে যায়। পাশাপাশি নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাভুটিতেও পুতিনের দেশের পাশে দাঁড়ায় ওয়াশিংটন।
গত মাসে দ্বিতীয়বার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই থেকেই জেলেনস্কির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন ট্রাম্প। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে ‘স্বৈরাচারী’ আখ্যা দিয়েছেন। যুদ্ধের শুরু থেকে ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছে আমেরিকা। ওয়াশিংটনকে পাশে পেয়ে রাশিয়ার মতো শক্তিধর দেশের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে গিয়েছে জেলেনস্কির দেশ। তবে মসনদে বসতেই যুদ্ধ থামাতে উদ্যোগী হয়েছেন ট্রাম্প। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধের দায় জেলেনস্কির উপরেই চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। গত সপ্তাহে রিয়াধে বৈঠকে বসেছিল রুশ-মার্কিন প্রতিনিধি দল। তারপর থেকেই দুই ‘শত্রু’র মধ্যে বরফ গলার আভাস পাওয়া গিয়েছিল।