সন্তানের দাম্পত্য অশান্তিতে মানসিক চিন্তা। প্রেম-প্রণয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ ও মনঃকষ্ট। ব্যবসার অগ্রগতি। ... বিশদ
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আসার পর নরেন্দ্র মোদি দাবি করেছিলেন, আয়করকে তিনি সাধারণ মানুষের কাছে আতঙ্কের দপ্তর হিসেবে তুলে ধরতে রাজি নন। বরং সাধারণ করদাতারা যাতে স্বেচ্ছায় কর দিতে পারেন, তার ব্যবস্থা করা হবে। বাড়ানো হবে করদাতার সংখ্যাও, এমন দাবিও করেছেন তিনি। মোট কথা, মধ্যবেত্তকেই তিনি রাজভাণ্ডার ভরানোর জন্য পাখির চোখ করেছেন। এদিকে, মোদি জমানায় আয়করে বিরাট ছাড় পেয়েছেন সাধারণ মধ্যবিত্তরা, এমন কথা বলা যাবে না। বরং ভোটের বাজারেও আয়করে মধ্যবিত্তকে সামান্য রেহাই দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে, কর্পোরেট সংস্থাকে বিরাট ছাড় দেওয়া হয়েছে।
আয়কর দপ্তর সূত্রের খবর, গত অর্থবর্ষে পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম এবং আন্দামান ও নিকোবর থেকে নিট (মোট আদায় থেকে রিফান্ড বাদ দিয়ে) আদায় হয়েছে ৬২ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। এত বিপুল পরিমাণ আদায় এর আগে কখনও হয়নি বলেই জানিয়েছেন দপ্তরের কর্তারা। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে সেই অঙ্ক ছিল ৫৬ হাজার ৪২২ কোটি টাকা। প্রসঙ্গত, এই বিপুল অর্থের সামান্যই আসে আন্দামান ও সিকিম থেকে। মোট আদায় হওয়া অঙ্কের মধ্যে শিল্প সংস্থা থেকে এসেছে ৩১ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা। বাকি ৩১ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা এসেছে সাধারণ মানুষের পকেট থেকে। আয়কর দপ্তরের কর্তারা বলছেন, বিগত কয়েকটি বছরে শিল্প সংস্থা থেকে আদায় হওয়া টাকার অঙ্কের কাছাকাছি আসত সাধারণ মানুষের ইনকাম ট্যাক্স, কিন্তু কখনও তা ছাপিয়ে যায়নি। গত অর্থবর্ষে শিল্পকে ছাপিয়ে গিয়েছে সাধারণ মানুষের থেকে আদায়। পাশাপাশি বেড়েছে সাধারণ করদাতার সংখ্যাও। গত অর্থবর্ষ, অর্থাৎ ২০২৩-২৪ সালে এরাজ্য থেকে আয়কর মিটিয়েছেন ৬৯ লক্ষ ৬২ হাজার জন। তার আগের বছর সেই সংখ্যা ছিল ৬৫ লক্ষ ৬০ হাজার। পাঁচ বছর আগে, অর্থাৎ ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে বঙ্গে আয়করদাতার সংখ্যা ছিল ৪৬ লক্ষ ২৮ হাজার, বলছে দপ্তরের তথ্য।
কর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মোদি জমানায় কর্পোরেট সংস্থাকে আর্থিক ছাড় দেওয়া নতুন কিছু নয়। অন্যদিকে, ব্যবসায়ী ও পেশাদারদের কিছু অংশে এখনও নগদ লেনদেনে রাশ টানতে পারেনি কেন্দ্র। ফলে সেসব লেনদেনকে আয়করের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। কিন্তু সাধারণ চাকরিজীবীরা যাতে কোনওভাবেই কর ফাঁকি দিতে না-পারেন, তার জন্য সবরকমের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ব্যাঙ্ক-পোস্ট অফিসের সুদ থেকে শুরু করে শেয়ারের লভ্যাংশ বা অন্য কোনও খাতে আয়—সবটুকুই এখন আয়কর দপ্তরের ‘স্ক্যানার’-এ। আর তাতেই ভরছে সরকারের ভাঁড়ার, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।