উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
পাচারকারী-বিএসএফ আঁতাতের মূল কেন্দ্র ছিল বাজেয়াপ্ত গোরুর নিলামের দুর্নীতি। ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে প্রায় ২০ হাজার গোরু বাজেয়াপ্ত করে বিএসএফ। চোরাপথে মুর্শিদাবাদ-মালদহ দিয়ে বাংলাদেশ পাচারের চেষ্টা রোখা হলেও পাচারকারীর উল্লেখই থাকত না তাদের রিপোর্টে। এরপর শুরু হতো আসল খেলা। কলমের আঁচড়ে গোরু হয়ে যেত ‘বাছুর’। ফলে নিলামে দামও যেত কমে। বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতি হতো সরকারের। গোরু পিছু বিএসএফের অফিসারদের দেওয়া হতো ২ হাজার টাকা করে। কাস্টমসের লোকজন পেত ৫০০ টাকা। নিলামের মোট টাকার ১০ শতাংশ দিতে হত বিএসএফ এবং কাস্টমসকে। এব্যাপারে ২০১৮ সালের এপ্রিলে তদন্তে নামে সিবিআই। উঠে আসে সতীশ কুমারের নাম। তিনি তখন মুর্শিদাবাদ ও মালদহের দায়িত্বে থাকা ৩৬ নম্বর ব্যাটালিয়ানের কমান্ডান্ট ছিলেন।
গোরু নিলামে কীভাবে হতো কারচুপি? এনামুলের ঘনিষ্ঠতা ছিল সতীশের সঙ্গে। গোরু ধরা পড়ার পরই তিনি ডেকে পাঠাতেন ওই ব্যবসায়ীকে। সিজার লিস্টে কোন গোরু দেখানো হবে, তার তালিকা তৈরি করতেন দু’জন। সব গোরু সিজারে দেখানো হতো না। বড় গোরু চলে যেত এনামুলের কাছে। সিজারে দেখানো হতো শুধু ‘বাছুর’। নিয়ম ভেঙে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হতো নিলাম। তাতে অংশ পর্যন্ত নিতে পারত না অন্য কেউ। কম দামে সেই ‘বাছুর’ কিনে নিত এনামুল ও তার সহযোগীরা। সেগুলি ফের সীমান্ত দিয়ে পাচার হয়ে যেত বাংলাদেশে। সাহায্য করত সতীশ ও তাঁর এক সহযোগী। বিনিময়ে আসত অস্ত্র, সোনার বিস্কুট। এভাবেই রসদ পৌঁছে যেত জঙ্গিদের হাতে। এনআইএ-র রেডারেও রয়েছে এই এনামুল। জঙ্গিদের তহবিল জোগানো, জাল নোটের ব্যবসায় তার হাত রয়েছে বলে অভিযোগ।
এই তথ্যের ভিত্তিতে এদিন কলকাতায় সতীশের তিলজলা, তপসিয়া এহং সল্টলেকের বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই। পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের পাঁচটি এবং মালদহের তিনটি জায়গাতেও হানা দেন অফিসাররা। গাজিয়াবাদ, রায়পুর, রাজস্থান, দিল্লি সহ মোট ১৫টি জায়গায় চালানো হয় তল্লাশি। উদ্ধার হওয়া নথি ঘেঁটে একাধিক ব্যবসায়ী এবং রাজনৈতিক নেতার নাম পাওয়া যায় বলে সিবিআই সূত্রে খবর। এনামুলের কারবারে এদের টাকা লাগানো রয়েছে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। তার অন্তত ৫০টি সংস্থা রয়েছে। এই ব্যবসার জন্য উত্তরপ্রদেশের এক রাজনৈতিক নেতাকে কোটি কোটি টাকা মাসোহারা দেওয়ার কথাও জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। ওই নেতা এক শাগরেদের মাধ্যমে এই টাকা উত্তরপ্রদেশ দিল্লি ও বিদেশে বিনিয়োগ করেছে। এনামুলের ব্যবসাতে আরও দুই ব্যবসায়ীর জড়িত থাকার কথাও জানা গিয়েছে।