নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পর্ষদ এলাকায় তিন মাসের বদলে প্রতি মাসের ভিত্তিতে বিদ্যুতের বিল চালুর দাবি তুলল কংগ্রেস। মঙ্গলবার বিধানসভা অধিবেশনের শেষ দিন কংগ্রেস নেতা নেপাল মাহাত ও অসিত মিত্র যৌথভাবে এই বিষয়ে মুলতুবি প্রস্তাব এনেছিলেন। অধিবেশনের বাইরে বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বিরোধীদের দাবি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
একসঙ্গে তিন মাসের মিটার রিডিং করে গ্রাহকের মোট বিদ্যুৎ খরচের হিসেব করে সরকার নিয়ন্ত্রিত বিদ্যুৎ সংস্থা। এদিন নেপাল মাহাত বলেন, দীর্ঘদিন ধরে গ্রামীণ এলাকাতে বিদ্যুৎ বিলের ক্ষেত্রে তিন মাস অন্তর মিটার রিডিং করা হয়। এর ফলে, প্রতি গ্রাহককে বাড়তি টাকা দিতে হয়। দৃষ্টান্ত দিয়ে তিনি বলেন, ৩০০ ইউনিটের জন্য প্রায় ২০০ টাকা, ৬০০ ইউনিটের জন্য প্রায় ৬০০ টাকা এবং ৯০০ ইউনিটের জন্য প্রায় ৭০০ টাকা অতিরিক্ত দিতে হচ্ছে গ্রাহকদের। অবিলম্বে এই বিদ্যুৎ বিলের রিডিং কলকাতার মতো প্রতিমাসে প্রস্তুত করলে, গ্রাহকদের অতিরিক্ত অর্থ দিতে হবে না বলে দাবি নেপালবাবুর।
বিরোধী সদস্যরা যখন এই বিলের বিষয় বিধানসভায় তোলেন, তখন বিদ্যুৎমন্ত্রী সভায় ছিলেন না। পরে শোভনদেববাবু বলেন, কংগ্রেস সদস্যের এই অভিযোগ তাঁর গোচরে এসেছে। তিনি বলেন, রাজ্য সরকার কোনওভাবেই গ্রাহকদের ঠকিয়ে রোজগার করতে চায়না। তাই তিনি পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। যদি বিল রিডিংয়ে ওই ধরনের বিভ্রান্তি থাকে, তাহলে তা দূর করা হবে। তাই বিষয়টি তিনি নজরে রাখছেন। প্রয়োজনে আসন্ন বাজেট অধিবেশনে তিনি এই বিষয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করবেন বলে জানিয়েছেন শোভনদেববাবু।
এদিন বিধানসভায় পোল্যান্ডের এক প্রতিষ্ঠিত খনি প্রযুক্তি সংস্থার নয় সদস্যের প্রতিনিধিদল এসে বৈঠক করে বিদ্যুৎমন্ত্রীর সঙ্গে। সেখানকার সাইলেসিয়ান প্রদেশের ওই সংস্থার তরফে বীরভূমের দেউচা পাচামির কয়লা তোলার বিষয়ে প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়। উল্লেখ্য, দেউচা পাচামিতে প্রায় ২০ লক্ষ মেট্রিক টন কয়লা রয়েছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই কয়লাক্ষেত্রের উৎপাদন ৬৬ মাসের মধ্যে শুরু করার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শোভনদেববাবু জানান, মাটির প্রায় ২ কিলোমিটার গভীর থেকে এই কয়লা তোলা বেশ কঠিন কাজ। পোল্যান্ডের এই সংস্থা কয়লা তোলার প্রযুক্তির জন্য খ্যাত। সংস্থার প্রতিনিধিরা রাজ্যের আধিকারিকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। শোভনদেবের দাবি, এই সংস্থা ছাড়াও চীন সহ নানা দেশের প্রযুক্তিও বেশ উন্নত। গ্লোবাল টেন্ডার ডেকে বরাত দেওয়া হবে। পোল্যাণ্ডের সংস্থার সঙ্গে প্রযুক্তিগত সহায়তার বিষয়ে আলোচনা চলছে বলেই জানান বিদ্যুৎমন্ত্রী।