Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

ধ্বংসের প্রহর গোনা 
মৃন্ময় চন্দ

আরও একটা বিশ্ব পরিবেশ দিবস গেল। অনেক প্রতিজ্ঞা, প্রতিশ্রুতি...। কিন্তু দূষণ বা অবৈজ্ঞানিক নির্মাণ কি কমছে? উদাসীনতায় আজ ধ্বংসের মুখে যে এরাজ্যের সমুদ্রতটও!

দীঘা থেকে প্রায় ২৭ কিমি দূরে জেলেদের নির্জন পল্লী দাদনপাত্রবার। সমুদ্রের কিনারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে, একরাশ নৌকো বিশ্রম্ভালাপে মত্ত। ঢেউ ভাঙছে দুলকিচালে। মাতাল পুবালি হাওয়ার শীতল স্নেহ-চুম্বনে তৃপ্ত শরীর। মেদুর অপরাহ্ণ। বড় রুপোলি থালার মতো সূর্যটা পাটে বসতে চলেছে। সমুদ্রের উপর বিস্তৃত রূপোর চাঁদোয়ায় চোখ ঝলসে যাচ্ছে। একটা কালো মেঘের ছেঁড়া টুকরো সূর্যের গালের পাশে লেপ্টে রয়েছে। তার ছায়া সমুদ্রের এক খাবলা জলে খেলা করে বেড়াচ্ছে। চোখের ক্ষণিক আরাম। নিমাইদার জেলে-ডিঙি যান্ত্রিক ঘরঘর শব্দে ভেসে চলেছে সমুদ্রের বুক চিরে। ঘোলা জলের ছলাতছল ছাড়া অবলুপ্ত বিশ্বচরাচর। মনে পড়ে যাচ্ছে জেলেবুড়ো সেন্টিয়াগোর কথা। ভেসে চলেছে সেও সমুদ্রের গভীর গহনে। হঠাৎ ছিপের সুতোর বেমক্কা টান, প্রায় হুমড়ি খেয়ে পড়ে যাওয়ার উপক্রম। বুড়ো লাফিয়ে গলুইয়ে উঠে বসল। দৈত্যাকৃতি বেগুনি রঙের মাছ ‘মারলিন’! বেসবলের ব্যাটের মতো বুকের পাশ থেকে ডানা মেলা দু’টো পাখনা সূর্যের আলোয় ঝকমকিয়ে উঠছে। শুরু হল মাছ আর মানুষের অসম লড়াই। তিনদিন বুড়োমানুষটা অচৈতন্য ছিল। সম্বিত ফিরলে সেন্টিয়াগো ঠাউর করার চেষ্টা করল তার অবস্থান। নৌকোর পাশ থেকে মারলিনের খুবলে খাওয়া লেজটা ভেসে উঠল। এক ঝাঁক লোলুপ হাঙর সাবাড় করেছে প্রায় সবটাই। মাথা থেকে ঘাড়ের কাছটা বাকি। তাও শেষ হল বলে। ওই যে জেলেদের বস্তি দেখা যাচ্ছে। বিয়ারের ক্যান হাতে দাঁড়িয়ে পেড্রিকো! সমুদ্রের ঢেউয়ের ছোট ছোট ধাক্কায় ডিঙি তীরে ভিড়ল, ছুটে এল সবাই, ধরাধরি করে টেনে তুলল অসুস্থ প্রায় অচৈতন্য সেন্টিয়াগোকে। ডিঙির সঙ্গে তখনও লেপ্টে আঠারো ফিটের মারলিনের কঙ্কালটা! মানুষজন তাজ্জব, এতবড় মাছ তারা কেউ কখনও দেখেনি। সমুদ্রের সবথেকে বড় মাছ সে ধরেছিল বটে, কিন্তু হাঙরদের সৌজন্যে সে মাছ আর ডাঙায় উঠল না। যিশুর ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার মতো সেন্টিয়াগোর বুকটা যন্ত্রণায় এফোঁড়ওফোঁড় হয়ে যাচ্ছিল। আর্নেস্ট হেমিংওয়ের নোবেল প্রাইজ পাওয়া উপন্যাস ‘দি ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দি সি’র চুম্বক এটি। কয়েকটি মাত্র শব্দের মায়াজালে সেন্টিয়াগোর অব্যক্ত বিমূর্ত যন্ত্রণার শরিক স্বয়ং পাঠক : ‘ফিলিং, দি নেল গো থ্রু হিজ হ্যান্ড ইনটু দি উড’।
সমুদ্র-পুত্র নিমাই দাস
মন্দারমনি থেকে দাদনপাত্রবারের দূরত্ব ২ কিমি। ছোট্ট গ্রাম, সামনে দিগন্তবিস্তারি স্বর্ণালী বেলাভূমি। সমুদ্রের ধারে শুটকি মাছের ভাঙাচোরা বাজারের খণ্ডহর। বাঁদিকে দু’পা এগলেই জেলে বসতির সারিবদ্ধ ঘরের প্রথমটি নিমাইদার। নয় নয় করেও সমুদ্রের সঙ্গে ঘর গেরস্থালী সাতাশ বছরের। বাবার হাত ধরে সমুদ্রে নামা। মুখে পান ফেলে নিমাইদা বলে চলেছেন হাড়মাস কালি করে ধীবরদের বেঁচে থাকার অবিশ্বাস্য গল্প। তাঁর চোখের সামনেই কিশোরী সমুদ্রের যৌবনপ্রাপ্তির গল্প। সমুদ্রের মান ইজ্জত খোয়ানোর গল্প। ধর্ষিত হওয়ার গল্প। দু’চোখে ঠুলি পরা লোভী স্বার্থপর মানুষের সমুদ্র লুণ্ঠনের গল্প। আগে যেখানে ঝাউ-ক্যাসুরিনার ঘনজঙ্গলে জাল মেলে দিয়ে দু’দণ্ড জিরিয়ে নিতেন নিমাইদারা, সেখানে এখন রৌদ্রতপ্ত খাঁ খাঁ বেলাভূমি পা পুড়িয়ে দেয়। নিমাইদারা সকাল-সন্ধ্যে মাছ ধরতে বেরন। রাত কাটে নৌকোতেই। ঝিকিমিকি খোলা আকাশের মশারির নীচে। লুব্ধকের সঙ্গে লুকোচুরি খেলে। ধ্রুবতারা শেষরাতে আলো হাতে বাড়ির পথ দেখায়।
কাষ্ঠবুড়ী, গঙ্গাবুড়ির পুজো সেরে নৌকোয় ওঠেন পাঁচ-সাত জনের ধীবরদল। কাদামাটিতে বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি গড়া হয়। গড়া হয় কুমিরের মূর্তিও। ছোট ‘খেপলা’ জাল, কখনও একটু বড় ‘বেঁউতিয়া’ জাল ফেলতে ফেলতে ৭ নটিকাল মাইল পর্যন্ত সমুদ্রের অন্দরমহলে যাওয়া। ফেরার পথে জাল তুলতে তুলতে ফেরা। ‘খেপলা’ থেকে ‘বেঁউতিয়া’, নৌকো উপচে ওঠে ‘রাশি রাশি ভারা ভারা’ রুপোলি ফসলে, সমুদ্রের অকৃপণ দানে। একা একজন মানুষ টেনে নিয়ে যাবে চল্লিশ কেজির ‘খেপলা’। দুটো ‘খেপলায়’ হবে ‘ভারা’। বাঁশের দু’প্রান্তে বেঁধে ঝুলিয়ে কাঁধে করে পাড়ের দিকে বয়ে নিয়ে যাওয়া। ‘ভারা’য় দুটো ‘খেপলা’ ঝুলিয়ে ত্রস্ত, কর্মব্যস্ত শ্রমিক। ‘ভারা’তে তিনটি ‘খেপলা’ বাঁধা হলে তার নাম ‘সাঙিন’। স্বভাবতই তিনটি খেপলার ওজন এক কুইন্টালের কাছাকাছি। ভার বেশি বলে মজুরিও কিঞ্চিৎ বেশি। নিপুণ ছন্দে বালি ভেঙে পাড়ে মৃত মাছেদের প্রাসাদ নির্মিত হবে। খর তপনে শুকিয়ে কাঠ হবে মাছ। কুচো চিংড়ি থেকে হবে ফিশমিল। বড় মাছ আর মুরগির খাবার। এছাড়াও মিলবে বিঘত খানেকের ভোলা, চেলা, লটে, চাঁদা ও আরও হাজারো নাম না জানা মাছ। শুটকি মাছ হিসেবেই যার চাহিদা।
কিছুদিন আগেই জালে পড়েছিল ৪৫৩ কেজির মহামহিম এক কচ্ছপ। বড় যত্নে তাকে পাড়ে নিয়ে আসা। বাড়ির বউ-ঝি’রা প্রথমে কূর্ম অবতারে তার পায়ে সিঁদুর তর্পণ করলেন। ধরা পড়া ভীত-সন্ত্রস্ত-ক্লান্ত-অবসন্ন কূর্মটির চারটি পা সযত্নে, সন্তর্পণে ‘ম্যাসাজ’ করে দিলেন নিমাইদারা। চাঙ্গা অবলা কূর্মটিকে যন্ত্রচালিত নৌকোয় নিয়ে চললেন মাঝসমুদ্রে। সকলে মিলে ধরাধরি করে ছেড়ে দিলেন তাকে। ডুবসাঁতারে খানিকটা এগিয়েই মাথা তুলে ধন্যবাদ জানাল কূর্ম মহাশয়। তার কৃতজ্ঞতার ভাষা পড়তে ভুল করেননি নিমাইদার মতো কিছু নিরক্ষর আনপড় মানুষ। সতেরো-আঠারো কেজির ‘খচ্চর ভোলা’ কখনও সখনও জালে পড়লে নিমাইদাদের দিল খুশ। ‘খচ্চর ভোলা’একটি উভলিঙ্গ মাছ। ওষুধ তৈরিতে কাজে লাগে। দাম প্রতি কেজি চার হাজারের কাছাকাছি। ইলিশ মাছ দৈবাৎ জালে পড়ে। অত্যন্ত স্পর্শকাতর মাছ ইলিশ। সরু ‘মোনোফিলের’ দামি ‘ভাসানি’ জালেই প্রাজ্ঞ ইলিশরা ধরা দেন। খুব গভীরে নয়, ইলিশের যাতায়াতের করিডর মোটামুটি জলতলের ২০ ফিট নীচে। মোটা জালের সুতোর অস্তিত্ব খুব সহজে টের পায় ইলিশ, তাই সুতো গায়ে লাগলেই চম্পট। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে ইলিশের ঝাঁক থেকে একবারেই মিলতে পারে ৪০-৫০ মন ইলিশ। আর ধরা পড়ে ছোট বড় নানা কিসিমের শঙ্কর মাছ। শঙ্কর মাছ চ্যাপ্টা থালার মতো, কিন্তু লাঙলের ফলার মতো মুখবিশিষ্ট চোঙাকৃতি শঙ্কর মাছও দীঘা উপকূলে পর্যাপ্ত।
নৌকোর পাশে বিশেষত শীতকালে লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে ‘শিশুমঙ্গল’-এর (শুশুক) দল অভিবাদন জানিয়ে যায়। কখনও জালে আটকা পড়লে পরম মমতায় শিশুমঙ্গলকে তারা জলে ছেড়ে দেন। পরিষ্কার জলের থেকে ‘ফিটচোখা’ (অল্প ঘোলা) জলে মাছ মেলে বেশি, সেই জলে আণুবীক্ষণিক জীব ও ফাইটোপ্ল্যাংটন বেশি থাকে, থাকে হিউমাস বা বোদ। মাছেদের প্রিয় খাদ্য। সমুদ্রের ভিতরেও চড়া পড়ে। চড়ার আশেপাশে মাছ মেলে বেশি। একবার জাল ফেললেই সত্তর-আশি কেজি চাঁদা বা অন্য মাছ মিলবে। ‘হালে’ অর্থাৎ গভীর জলে মাছের বসতি কম। মাঝেমধ্যেই ‘জুলুমের’ (সাইক্লোনের) কবলে পড়েছেন নিমাইদারা। বছর চোদ্দ আগে লক্ষ্মীপুজোর রাত। আকাশে সোনার থালা। লক্ষ্মীদেবী বাহন প্যাঁচার সঙ্গে সমভিব্যাহারে বেরিয়েছেন গৃহস্থের উঠোন সোনার ফসলে ভরে দেবেন বলে। ঠিক তখনই ঈশান কোণে উদয় জটাজুটধারী নিকষ কালো এক ফিচেল মেঘের। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে সেই একরত্তি মেঘের তাণ্ডবে শুরু হল ‘জুলুম’। উথালপাতাল সমুদ্র। নৌকো উল্টে দশ ফিট জলের গভীরে, পরমুহূর্তেই সটান দশ ফিট উপরে। দড়িদড়া ছিঁড়ে পাখির পালকের মতো নৌকো ভেসে চলল ‘ময়নাদ্বীপে’। দু’দিন নিখোঁজ থাকার পর, উপকূলরক্ষী বাহিনীর নজরে পড়ে হালভাঙা তরী। তারাই উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেন। বাতাস পুবালি ছিল তাই রক্ষে, নাহলে দক্ষিণ-পশ্চিমী হলে কোনও ভিনদেশে ঠাঁই হতো, অচেনা অজানা গালিভারের মতো। হয়তো ফিরতেও পারতেন না কোনওদিন।
সমুদ্র, নিমাইদার মতো মাছমারাদের কাছে মমতার চাদর বিছনো স্নেহশীলা মা। কখনও সে বাসোহাগী প্রিয়া, অনূঢ়া আদুরে কন্যা। অনেক সময়েই নিমাইদাদের দু’বেলা হাঁড়ি চড়ে না, ঘরে না ফেরা ইস্তক বাড়ির মেয়েরা সমুদ্রের দিকে চেয়ে হা পিত্যেশ করে বসে থাকেন। দিকচক্রবালে কালো কালো বিন্দুর মতো নৌকোর সারি থেকে ঠিক শনাক্ত করেন নিজেদেরটিকে। বিশেষ কালো বিন্দু যেদিন অনুপস্থিত, মনটা কু ডাকে থেকে থেকেই। বড় অনিশ্চিত জীবন মাছমারাদের। তারা জানেন যে কোনও দিন হাসিখুশি-সবল-সক্ষম ঘরের মানুষটা নিরুদ্দেশ হয়ে যেতে পারেন। সরকারি খাতায় তার নামের পাশে পড়বে একটা লালঢ্যাঁড়া, আর রোজ সন্ধ্যেয় তুলসীতলায় প্রদীপ জ্বালানো কুলবধূর সিঁথি থেকে চিরতরে মুছে যাবে সিঁদুরের লালপ্রদীপ। বাস্তবের নিমাইদা বা কল্পলোকের বুড়ো সেন্টিয়াগো—তাদের জীবনের সঙ্গে একসূত্রে গেঁথে ফেলতে পারেন সমুদ্রকে। তাঁরা উপলব্ধি বা অনুধাবন করতে পারেন সমুদ্রই তাদের অন্নদাতা, ত্রাতা। স্বয়ং ঈশ্বর। সুতরাং সমুদ্রকে তারা বুকে আগলে রাখেন। শহুরে শিক্ষিত মানুষ সমুদ্রের পরাক্রমে অবহিত নন। সমুদ্র তাদের কাছে ক্ষণিকের বিনোদন। তাঁরা জানেন না, সমুদ্র কুপিত হলে মানুষের নশ্বর জীবনও লহমায় হতে পারে বিপন্ন।
ধ্বংসের মুখোমুখি দীঘা-শঙ্করপুর-মন্দারমনি
দীঘার পূর্ব পরিচিতি ছিল ‘বীরকুল’ নামে। ওয়ারেন হেস্টিংস, ১৭৮০ সালে তাঁর স্ত্রীকে লেখা চিঠিতে পূবের ‘ব্রাইটন’ বলে দীঘাকে উল্লেখ করেছেন। ১৯২৩ সালে ব্রিটিশ পর্যটক ‘জন ফ্রাঙ্ক স্মিথ’ দীঘার সৌন্দর্যে মোহিত হয়ে প্রথম বিশ্ববাসীর কাছে দীঘাকে উন্মোচিত করেন। আর ২০১৩ সালের ২৫শে ডিসেম্বর, নিউ দীঘার ‘অমরাবতী পার্কে’ একদিনে হাজির হয়েছিলেন ৪৮ হাজার জন। পর্যটন দপ্তরের হিসেবে, ২০১০ সালে ২৫ লক্ষ ৪৭ হাজার ১৭ জন পর্যটক এসেছিলেন দীঘাতে। সেই সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। বন ও পরিবেশ দপ্তরের নথি প্রামাণ্য, পুরনো ও নতুন দীঘার সমস্ত হোটেল, পার্ক, হাসপাতাল, বাণিজ্যকেন্দ্র অর্থাৎ যাবতীয় নির্মাণ ‘কোস্টাল রেগুলেশন জোন’ বা CRZ-II ও CRZ-III-র অন্তর্গত। আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রশাসনের চোখের সামনেই সেখান থেকে চলছে বালি খনন বা নিত্যনৈমিত্তিক হোটেল নির্মাণ।
১৫ এপ্রিল থেকে ১৫ জুন সমুদ্রে মাছধরা নিষিদ্ধ। নিমাইদারা সেইসময় সমুদ্র যান না। জুনের যে কোনও সময়, দাদনপাত্রবারের সৈকতে পরিদৃশ্যমান ছোট ছোট ডিঙি নৌকোর জটলা। মাছ ধরে ফিরে আসছেন খেপ খাটা অতিদরিদ্র কিছু জেলে। জুন-জুলাইয়ের এই বিশেষ সময়টায় তাদের জালে মাছের সঙ্গে উঠে আসে মিষ্টির দোকানের গাঢ় বাদামি রঙের ‘খেজুর’ অথবা ‘নিকুতির’ মতো দেখতে অসংখ্য ‘সমুদ্রশসা’ বা সি কিউকাম্বার (Acaudinamolpadioides)। ২০০১ সালের ১১ জুলাই থেকে সমুদ্রশসা ১৯৭২-এর বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী বিরল বিপন্ন প্রজাতি হিসেবে ‘তফসিল ১’-এ সংরক্ষিত। ‘সমুদ্রশসা’র ক্রমহ্রাসমানতা গোটা সামুদ্রিক পরিবেশের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর। পেটে জল ভর্তি ছোট সামুদ্রিক প্রাণী ‘সমুদ্রশসা’, মাছমারারা জাল ঝেড়ে সমুদ্রের ধারে উচ্ছিষ্ট হিসেবে ফেলে যায়, বালির চরে নড়তে পারে না তারা। জলভরা বেলুনের মতো ফটফট করে ‘সমুদ্রশসা’কে পা দিয়ে টিপে মেরে ফেলাতেই পর্যটকদের বিজাতীয় আনন্দ। তারা জানেনই না ‘সমুদ্রশসা’ একটি সংরক্ষিত প্রাণী। তাকে মারলে তিন বছরের জেল বা পঁচিশ হাজার টাকা জরিমানা হতেই পারে। জেলেদের জালে প্রতি বছর ওই সময়েই ধরা পড়ে বিরাট বিরাট ‘হর্স-শু-ক্র্যাব’। শক্ত বাদামি খোলায় মোড়া, কিম্ভুতকিমাকার অশ্বখুরাকৃতি, অনেকটা কম্পিউটারের মাউসের মতো, বিশালদর্শন, মুখের সামনে সোজা অ্যান্টেনার মতো লম্বা কাঁটা। জলে সাঁতারের সময় দিকনির্ণয় করে কাঁটাটি। তাদের বিরল তাম্রঘটিত নীললোহিত ‘হিমোসায়ানিন’ চিকিৎসা ক্ষেত্রে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। দুর্মূল্যও। ‘ব্যাকটিরিয়াল এন্ডোটক্সিন’ শনাক্তকরণে এদের রক্ত (লিমুলাস অ্যামিবোসাইট লাইসেট) ব্যবহৃত হয়। জালে ওঠার পর তাদের পরিণতিও নির্বিচার অকাল মৃত্যু। উল্টে গেলে নিদাঘতপ্ত দিনে খুব তাড়াতাড়ি এদের ফুলকা শুকিয়ে গিয়ে অপমৃত্যু ঘটে। অথচ, প্রাণীটিকে সোজা করেই দিলেই ঢেউয়ের দোলায় এরা আবার সমুদ্রে ফিরে যেতে পারে। কী বিপুল সামুদ্রিক সম্পদের অজ্ঞতাজনিত অপচয়! একইভাবে পর্যটকদের পদপিষ্ট হয়ে বিলুপ্তপ্রায় ‘সিসিন্ডিলা’ গোষ্ঠীর ২৫টি কীটপতঙ্গ, বিলুপ্তপ্রায় সাইলোমাস ও ডিপলোসিলা প্রজাতির কীটপতঙ্গও।
শুধু প্রাণীকুল নয়, বালিয়াড়ি থেকে পাততাড়ি গুটোতে বসেছে ইন্ডিগোফেরা, আইপোমিয়া, লিপ্পিয়া, ইভোভিউলাস, গ্লাইকসমিস, ক্যাসুয়ারিনাস, আলবিজিয়া, অ্যানাকারডিয়াম বা অ্যালোফাইলাসের মতো গাছেরাও। আইপোমিয়া বা কাষ্ঠল কাণ্ডসমেত ঘন কেয়া গাছের ঝোপ সমুদ্রের ধারেকাছে কিছুদিন আগেও দেখা যেত। উন্নয়নের গুঁতোয় নিশ্চিহ্ন তারা। সমুদ্রের ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলা সাইক্লোন-বন্যা-সুনামির ভয়াল আগ্রাসনের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়াতে পারত কেয়ার ঝোপ। কিন্তু বিরাট বিরাট হোটেল নির্মাণে নির্বংশ হয়েছে তারা। বহুবর্ষজীবী ঘাস ‘স্পিনিফেক্স’ বালিয়াড়ি থেকে পর্যটকদের সৌজন্যে বিলুপ্ত চিরতরে। হোটেল ও পর্যটকের যাবতীয় বর্জ্যে সমুদ্র আজ কলুষিত ড্রেন আর সৈকত ডাস্টবিন বা ‘কুঁড়াদান’।
হ্যালোসিন থেকে প্লেস্টোসিন যুগের মধ্যবর্তী সময়ে দীঘা উপকূল অঞ্চলের জন্ম ও বেড়ে ওঠা। সমুদ্রতীরে বালি-কাদা-পলির গঠনে মেলে ফ্লুভিয়াটাইল ও ইয়োলিয়ান অধঃক্ষেপণ। দীঘা উপকূলের সৈকতে সূক্ষ্ম বালিকণার ভাগ ৬৭%, পলি ১৬.৪% আর কাদা ৭.৬%। দীঘার অলঙ্কারপুর অঞ্চলে একমাত্র পলির ভাগ ৭৩%। বালিয়াড়ি ভাঙছে। ডাঙার দিকে এগচ্ছে প্রতিবছর ৬ থেকে ১২ মিটার বিপজ্জনক হারে। ছোট ঘাস ‘স্পিনিফেক্স’ রুখতে পারত এই আগ্রাসনকে। অদূর ভবিষ্যতে দীঘা-শঙ্করপুর বালির নীচে অন্তঃসলিলা হতেই পারে। দীঘা-শঙ্করপুর উপকূল মেসোটাইডাল। ঢেউয়ের সর্বোচ্চ উচ্চতা ২—৩ মিটার। আগস্ট মাসে ঢেউয়ের উচ্চতা ও তীব্রতা দুইই বাড়ে। এখানে সমুদ্রের জলতলের উচ্চতা ভীতিপ্রদভাবে বাড়ছে। বছরে জলতলের বৃদ্ধির হার ৩ মিমি। সমুদ্রের জলতলের উষ্ণতা বাড়ছে বছরে .০১৯ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড হারে। পূর্বাভাস, ২০৫০ সালে সমুদ্রের জলতলের উচ্চতা বাড়তে পারে ৫০ সেমি। গত ১২০ বছরের ইতিহাসে ভারতে ‘সাইক্লোনিক অ্যাক্টিভিটি’ ২৬% বৃদ্ধি পেয়েছে। সিডার-নার্গিস-বিজলি-আইলা-হুদহুদ-লায়লার মতো বঙ্গোপসাগরে তৈরি অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় অনতি অতীতেই (১৯৭৮ থেকে ২০১৩) ভারতকে তছনছ করেছে। ২০১৮ সালে প্রবল থেকে অতিপ্রবল ৭টা ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত ভারত। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেচ দপ্তর ‘ইন্টিগ্রেটেড কোস্টাল জোন ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান’ তৈরি করেছিল। অজ্ঞাত কারণে দিনের আলো দেখতে পায়নি সেই প্ল্যান। অথচ, এরকম একটা ফণীর লেজের ঝাপটেই দীঘা মানচিত্র থেকে মুছে যেতে পারে।
দীঘায় অকল্পনীয় সমুদ্রের ভাঙনহার। ডাঙার দিকে দৃপ্ত গতিতে এগিয়ে আসছে সমুদ্র। পাল্টে যাচ্ছে ঢেউ ভাঙার রসায়ন। ১৩ কিমি বিস্তৃত দীঘা উপকূলীয় অঞ্চলের ৯টা মৌজা থেকে ভাঙনের আশঙ্কায় লোকজন পালিয়ে যেতে শুরু করেছেন। দীঘার হোটেল/রিসর্টের সুরক্ষায় সরকারি তরফে ৪ কিমি ব্যাপী সমুদ্রের পাড় বাঁধানো হল। চূড়ান্ত অবৈজ্ঞানিক নির্মাণ। দেখা গেল বালিয়াড়ির বিস্তার আরও গগনচুম্বী হল, বছরে ১৬—১৮ মিটার। ১৯৮০তেও বালিয়াড়ি ১১ মিটারের বেশি ডাঙার দিকে পা বাড়ায়নি। বোল্ডার ফেলে সমুদ্রের ঢেউকে নিয়ন্ত্রণের বৃথা চেষ্টা হল। বোল্ডার ল্যাটেরাইটস, চার্নকাইটস বা অ্যাম্ফিবোলাইটস দ্বারা তৈরি। প্রচুর ছিদ্রযুক্ত। ঢেউয়ের দানবিক শক্তিকে নিয়ন্ত্রণে বোল্ডার শিশু। বোল্ডারে ধাক্কা খাওয়ার পর অমিত পরাক্রমী ঢেউ বিপরীতমুখী স্রোতে টুকরো করে ভেঙে ফেলছে বোল্ডারকে। গড়াতে গড়াতে সেই বোল্ডার সৈকত থেকে পাড়ি জমাচ্ছে সমুদ্রে। অবশিষ্টাংশের তলায় চাপা পড়ে বিলুপ্ত হতে বসেছে সামুদ্রিক গেঁড়িগুগলি বা ঝিনুক জাতীয় প্রাণী। বেলাভূমিতে প্রমোদভ্রমণে চলছে বাইক বা চারচাকা। তাতে সৈকতের যেমন ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে তেমনই লাল কাঁকড়া চাপা পড়ে অবলুপ্তির দিন গুনছে। বালিয়াড়ির ধারেই বিশাল গর্ত খুঁড়ে বসানো হচ্ছে গভীর নলকূপ। সমুদ্রের নোনা জলকে নির্বোধের মতো সাদরে আবাহন জানানো হচ্ছে। একফসলা কৃষিজমি বালিয়াড়ির তলায় ঢাকা পড়ে যাচ্ছে, তারপর পানীয় জল লবণাক্ত হতে থাকলে সোনায় সোহাগা! মনুষ্যপ্রজাতির বিলুপ্তি কেবল সময়ের অপেক্ষা। বালিয়াড়ি ধ্বংস করে উপকূল আইনকে কাঁচকলা দেখিয়ে হোটেল নির্মাণ, ধারণক্ষমতার বেশি পর্যটক আবাহন, সমুদ্রের জীবকূল সম্পর্কে পর্যটকদের সীমাহীন অজ্ঞতা, নির্বিচারে বৃক্ষ-নিধন কেবলমাত্র সমুদ্রকে আগ্রাসী করে তুলছে না, বাড়াচ্ছে সাইক্লোনে বিপর্যয়ের সম্ভাবনা। প্রকৃতি এক চুটকিতে দীঘাকে মানচিত্র থেকে মুছে দিতে পারে যে কোনও সময়। অর্বাচীন মানুষ কোন জাহান্নামে তখন ফূর্তির রসদ খুঁজবে?
 ছবি: লেখক ও চন্দ্রভানু বিজলি
বিশ্বের প্রখ্যাত স্বনামধন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, আইআইটি, সমুদ্রগবেষণা কেন্দ্রের অজস্র গবেষণার সারাৎসার প্রতিবেদনটি।
 গ্রাফিক্স: সোমনাথ পাল
 সহযোগিতায়: উজ্জ্বল দাস
09th  June, 2019
বিরাট সম্ভাবনা ভারতের

রাতুল ঘোষ: প্রায় দেড় মাসব্যাপী সাত দফার লোকসভা নির্বাচন পর্ব শেষ। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদির প্রধানমন্ত্রিত্বের দ্বিতীয় ইনিংসের সূচনা হয়েছে। অতঃপর পরবর্তী দেড় মাস আসমুদ্রহিমাচলব্যাপী ভারতবর্ষের সোয়াশো কোটি জনগণ আন্দোলিত হবেন দ্বাদশ আইসিসি বিশ্বকাপ ঘিরে।
বিশদ

02nd  June, 2019
মোদি ম্যাজিক
সমৃদ্ধ দত্ত

আর নিছক জয় নয়। দেখা যাচ্ছে জয় খুব সহজ তাঁর কাছে। ২০ বছর ধরে কখনও মুখ্যমন্ত্রী হয়ে, কখনও প্রধানমন্ত্রী হয়ে জিতেই চলেছেন। সুতরাং ওটা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে না। তাহলে এরপর টার্গেট কী? সম্ভবত ইতিহাস সৃষ্টি করা। এক রেকর্ড সৃষ্টি করাই লক্ষ্য হবে নরেন্দ্র মোদির। কিসের রেকর্ড?
বিশদ

26th  May, 2019
ভোটের ভারত 

রাত নামল দশাশ্বমেধ ঘাটে। অন্ধ ভিক্ষুককে প্রতিবন্ধী ফুলবিক্রেতা এসে বলল, চলো ভান্ডারা শুরু হয়েছে। ফুল বিক্রেতার হাত ধরে অন্ধ ভিক্ষুক এগিয়ে গেল বিশ্বনাথ গলির দিকে। পোস্টার, ফ্লেক্স, টিভি চ্যানেল আর সভামঞ্চ থেকে মুখ বাড়িয়ে এসব দেখে গোপনে শ্বাস ফেলল ভোটের ভারত! যে ভারত ঘুরে দেখলেন সমৃদ্ধ দত্ত।
 
বিশদ

19th  May, 2019
মাসুদনামা

অবশেষে আন্তর্জাতিক জঙ্গি মাসুদ আজহার। ভারতের কূটনীতির কাছে পরাস্ত চীন এবং পাকিস্তান। কীভাবে উত্থান হল তার? রাষ্ট্রসঙ্ঘের সিদ্ধান্তে মোদির লাভই বা কতটা হল? লিখলেন শান্তনু দত্তগুপ্ত
বিশদ

12th  May, 2019
কবিতর্পণ 

তিনি রবীন্দ্রনাথের বড়দাদা দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রপৌত্রী। জোড়াসাঁকো ও শান্তিনিকেতনে শৈশব কাটানোর সুবাদে কবিগুরুকে খুব সামনে থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল তাঁর। যদিও শৈশবের বেশিরভাগ স্মৃতিই কালের নিয়মে ঢাকা পড়েছে ধুলোর আস্তরণে। তবুও স্মৃতির সরণিতে কিছু ঘটনা ইতিউতি উঁকি মেরে যায়। একসময়ে নিজে অভিনয় করেছেন সত্যজিৎ রায়, তপন সিংহের মতো পরিচালকদের ছবিতে। দাপিয়ে বেড়িয়েছেন মঞ্চেও। আজ তিনি অশীতিপর। আরও একটি পঁচিশে বৈশাখের আগে ঠাকুরবাড়ির কন্যা স্মিতা সিংহের কবিতর্পণের সাক্ষী থাকলেন বর্তমানের প্রতিনিধি অয়নকুমার দত্ত। 
বিশদ

05th  May, 2019
চিরদিনের সেই গান
শতবর্ষে মান্না দে 
হিমাংশু সিংহ

২৫ ডিসেম্বর ২০০৮। কলকাতার সায়েন্স সিটি প্রেক্ষাগৃহ। একসঙ্গে আসরে প্রবাদপ্রতিম দুই শিল্পী। পদ্মভূষণ ও দাদাসাহেব ফালকে সম্মানে ভূষিত মান্না দে ও গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। একজনের বয়স ৮৯ অন্য জনের ৭৭। মঞ্চে দুই মহান শিল্পীর শেষ যুগলবন্দি বলা যায়।  
বিশদ

28th  April, 2019
রাজনীতির ভাগ্যপরীক্ষা
আকাশদীপ কর্মকার

 এই মুহূর্তে দেশের রাজনীতিতে মুখ্য আলোচিত বিষয় লোকসভা নির্বাচন। রাজনীতিকদের ভাগ্যপরীক্ষা। এই নির্বাচনে দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের শক্তি পরীক্ষার পাশাপাশি ভাগ্য পরীক্ষা দেশের হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিদেরও।
বিশদ

21st  April, 2019
প্রতীক বদলে ডিজিটাল ছোঁয়া
দেবজ্যোতি রায়

সাহিত্য বা লেখালিখিতে সর্বদা সময়ের দাবিই উঠে আসে। প্রতিফলিত হয় তৎকালীন সময়ের পটভূমি, চরিত্র, চিত্রায়ন। অতীতেও হয়েছে, আধুনিক বা নব্য আধুনিক যুগও তার ব্যতিক্রম নয়। বর্তমানে আধুনিক সাহিত্য বা পটভূমির একটা বড় অংশ দখল করে নিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক মাধ্যম।
বিশদ

21st  April, 2019
শতবর্ষে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড

১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল জালিয়ানওয়ালাবাগে একটি প্রতিবাদ সভায় জেনারেল ডায়ার বিনা প্ররোচনায় নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিলেন। এ বছর ওই হত্যাকাণ্ডের ১০০ বছর। সেদিনের ঘটনা স্মরণ করলেন সমৃদ্ধ দত্ত।
বিশদ

14th  April, 2019
প্রথম ভোট
সমৃদ্ধ দত্ত

সকলেই চাইছে লাঙল। ১৯৫১ সালের ১ জুলাই। রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে দেশের প্রথম নির্বাচন কমিশনার সুকুমার সেন মিটিং ডেকেছেন। নির্বাচনী প্রতীক বন্টন করা হবে। প্রতিটি দলকে বলা হয়েছিল আপনারা নিজেদের পছন্দমতো প্রতীক নিয়ে আসবেন সঙ্গে করে। সেটা প্রথমে জমা নেওয়া হবে। তারপর স্থির করা হবে কাকে কোন প্রতীক দেওয়া যায়। কিন্তু, মিটিং শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রবল ঝগড়া শুরু হয়ে গেল। কারণ প্রায় সিংহভাগ দলেরই পছন্দ লাঙল। কেন?
বিশদ

07th  April, 2019
সিনেমার রাজনীতি
শাম্ব মণ্ডল

সেদিন পোডিয়ামে উঠেই শ্রোতাদের চমকে দিয়ে একটা ডায়লগ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন তিনি: ‘হাও ইজ দ্য জোশ?’ এক মুহূর্ত দেরি না করে শ্রোতাদের মধ্যে থেকে সমস্বরে উত্তর এসেছিল ‘হাই স্যর!’ যিনি ডায়লগটা শ্রোতাদের উদ্দেশে ছুঁড়ে দিয়েছিলেন তিনি আর কেউ নন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গত ২০ জানুয়ারি মুম্বইয়ে ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব ইন্ডিয়ান সিনেমা-র উদ্বোধনে দেশের প্রধানমন্ত্রীর মুখেও তখন ‘উরি’র ক্রেজ।
বিশদ

31st  March, 2019
ভোট মানেই তো
স্লোগানের ছড়াছড়ি
কল্যাণ বসু

ভোটের মাঠে হরেক রকমের সুর। স্লোগানে মেলে ছড়ার ছন্দ। গ্রাম-শহরের অলি-গলি ছাপিয়ে রাজপথে মাইকে ভাসে সেই ছন্দময় স্লোগান। চলে স্লোগান নিয়ে শাসক-বিরোধীর আকচা-আকচিও। বহু স্লোগান দাগ কেটে যায় দেশের মাটিতে। বহুকাল টিকে থাকে তার স্মৃতিও। দেশের সৈনিক ও কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য ১৯৬৫ সালে তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রীর স্লোগান ‘জয় জওয়ান, জয় কিষান’ আজও তো কত ইতিহাসের সাক্ষী। 
বিশদ

31st  March, 2019
স্বাধীন গণতান্ত্রিক ভারতের ভোট
ব্যবস্থার রূপকার সুকুমার সেন
অভিজিৎ দাস

রাস্তাঘাটের দুর্বিষহ দশা। কোথাও আবার রাস্তাই নেই। বিস্তর ঝক্কি পেরিয়ে প্রত্যন্ত গাঁ-গঞ্জ পর্যন্ত পৌঁছনো। দেশের সিংহভাগ জায়গা টেলি যোগাযোগের বাইরে। এখনও বাকি পড়ে রয়েছে বহু কাজ। তার মধ্যেই বহু কাঠ-খড় পুড়িয়ে খসড়া ভোটার তালিকা তৈরি হল। তাতে চোখ বুলিয়ে আঁতকে উঠলেন এক বঙ্গসন্তান।
বিশদ

24th  March, 2019
বদলে যাওয়া
ভোট
রজত চক্রবর্তী

 নির্বাচন গ্রামে-গঞ্জে-মফঃস্বলে আগে উৎসবই ছিল। তোরঙ্গ থেকে পাট ভাঙা শাড়ি পরতেন মা-মাসিরা। সেখান থেকে প্রচারে চলে এল ক্যাপশান, ‘গণতন্ত্রের মহান উৎসব নির্বাচন’। এই প্রচারের উল্টোপিঠে ছিল আরও একটি প্রচার। ‘নির্বাচন কোনও উৎসব নয়, আপনার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত জানাবার পদ্ধতি’।
বিশদ

24th  March, 2019
একনজরে
গ্রেম স্মিথ : অস্ট্রেলিয়া দলের প্রধান অস্ত্র পেস বোলিং। ওভালে ভারতের বিরুদ্ধে মন্থর, ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে অজিদের এই অস্ত্র কাজ করেনি। অন্য ম্যাচে ভয়ঙ্কর মূর্তিতে আবির্ভূত হলেও মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্সের মতো বোলাররা ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের উপর বিন্দুমাত্র ত্রাসের সঞ্চার করতে ...

  নয়াদিল্লি, ১১ জুন (পিটিআই): নিজের কেন্দ্রে ‘জল সঙ্কট’ নিয়ে সরব বিজেপি এমপি মীনাক্ষী লেখি। মঙ্গলবার দিল্লির জল বোর্ডের বাইরে রীতিমতো ধর্নায় বসেন তিনি। যদিও দিল্লি সরকারের আওতায় থাকা জল বোর্ডের দাবি, ক্ষমতা অনুযায়ী জল সরবরাহ করা হচ্ছে। বিজেপি মানুষকে ...

  নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: প্রয়াত হয়েছেন শীলা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারপার্সন এমেরিটাস শীলা গৌতম। গত ৮ জুন তিনি পরলোক গমন করেন। ১৯৭১ সালে তিনি শীলা ফোম তৈরি করেন, যা ক্রমশ সফল ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন বিচক্ষণ রাজনীতিক। ...

 দিব্যেন্দু বিশ্বাস, নয়াদিল্লি, ১১ জুন: রাজ্যের ভোট পরবর্তী হিংসা এবং আইনশৃঙ্খলার ক্রমাবনতির অভিযোগ তুলে এই বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে দেবে বিজেপির সংসদীয় প্রতিনিধি দল। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

বিশ্ব শিশু শ্রমিক বিরোধী দিবস,
১৯২৯- লেখিকা অ্যান ফ্রাঙ্কের জন্ম,
১৯৫৭- পাকিস্তানের ক্রিকেটার জাভেদ মিঁয়াদাদের জন্ম,
২০০৩- মার্কিন অভিনেতা গ্রেগরি পেকের মৃত্যু 



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৬৮.৬৯ টাকা ৭০.৩৮ টাকা
পাউন্ড ৮৬.৫৮ টাকা ৮৯.৮০ টাকা
ইউরো ৭৭.২১ টাকা ৮০.১৬ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৩২,৯১৫ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৩১,২৩০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৩১,৭০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৩৬,৬৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৩৬,৭৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৬, ১২ জুন ২০১৯, বুধবার, দশমী ৩৩/৫০ সন্ধ্যা ৬/২৭। হস্তা ১৭/১৯ দিবা ১১/৫১। সূ উ ৪/৫৫/২০, অ ৬/১৭/৬, অমৃতযোগ দিবা ৭/৩৫ গতে ১১/১০ মধ্যে পুনঃ ১/৪৯ গতে ৫/২৩ মধ্যে। রাত্রি ৯/৫০ মধ্যে পুনঃ ১১/৫৭ গতে ১/১২ মধ্যে, বারবেলা ৮/১৬ গতে ৯/৫৬ মধ্যে পুনঃ ১১/৩৬ গতে ১/১৬ মধ্যে, কালরাত্রি ২/১৬ গতে ৩/৩৬ মধ্যে। 
২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৬, ১২ জুন ২০১৯, বুধবার, দশমী ৩৫/৫৪/৩৯ রাত্রি ৭/১৭/২৫। হস্তানক্ষত্র ২০/৪৩/৩৩ দিবা ১/১২/৫৮, সূ উ ৪/৫৫/৩৩, অ ৬/১৮/৫১, অমৃতযোগ দিবা ৭/৩৮ গতে ১১/১৩ মধ্যে ও ১/৫৪ গতে ৫/২৯ মধ্যে এবং রাত্রি ৯/৫৪ মধ্যে ও ১২/১ গতে ১/২৫ মধ্যে, বারবেলা ১১/৩৭/১২ গতে ১/১৭/৩৭ মধ্যে, কালবেলা ৮/১৬/২২ গতে ৯/৫৬/৪৭ মধ্যে, কালরাত্রি ২/১৬/২৩ গতে ৩/৩৫/৫৭ মধ্যে। 
৮ শওয়াল 
এই মুহূর্তে
আজকের রাশিফল 
মেষ: কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। বৃষ: ভ্রমণ যোগ আছে। মিথুন: প্রয়োজনীয় অর্থের অভাব ...বিশদ

07:11:04 PM

ইতিহাসে আজকে দিনে 
বিশ্ব শিশু শ্রমিক বিরোধী দিবস,১৯২৯- লেখিকা অ্যান ফ্রাঙ্কের জন্ম,১৯৫৭- পাকিস্তানের ...বিশদ

07:03:20 PM

বিশ্বকাপ: ৪১ রানে পাকিস্তানকে হারাল অস্ট্রেলিয়া 

10:35:44 PM

বিশ্বকাপ: পাকিস্তান ২৩০/৭(৪০ ওভার)(টার্গেট ৩০৮) 

10:03:16 PM

 বিশ্বকাপ: পাকিস্তান ১৬০/৬(৩০ ওভার)(টার্গেট ৩০৮)

09:20:41 PM

বিশ্বকাপ: পাকিস্তান ১১০/২(২০ ওভার)(টার্গেট ৩০৮)

08:34:26 PM