বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমি আয়োজিত অষ্টাদশ নাট্যমেলায় আমন্ত্রিত হয়ে গত ৩০ নভেম্বর ২০১৮, তৃপ্তি মিত্র নাট্যগৃহ দাপিয়ে গেল গোবরডাঙা রঙ্গভূমির কচিকাঁচারা,তাদের প্রযোজনা ‘রাজার খোঁজে’ নিয়ে। নাটকের বিষয় ছিল আমাদের বর্তমান সমাজ,এ সমাজে সারাক্ষণ যে চেয়ার দখলের লড়াই চলে, আর এসবের গোলকধাঁধায় সাধারণ মানুষকে যেভাবে নাজেহাল হতে হয়,তা-ই তুলে ধরেছেন নির্দেশক বিধানচন্দ্র হালদার জঙ্গলের পশুপাখিদের মধ্যে দিয়ে। আলাদা আলাদা করে ক্ষমতা দখলের যে প্ররোচনা তার রূপ দিয়ে যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। সকলের রাজা অর্থাৎ সিংহের ভূমিকায় নীলাদ্রি মজুমদার এই ছোট্ট বয়সে সকলের মন কেড়েছে। বাঘের ভূমিকায় কৌশিক সরকার অনবদ্য। যথেষ্ট দুর্বুদ্ধি সহ চাহুনি দিয়ে শেয়ালের অভিনয়ে দেবাশিস সরকার নিজস্বতার পরিচয় রেখেছে।
কাঁকড়া ও পিঁপড়ের ভূমিকায় ছিল কিঙ্কর মন্ডল ও মাধব দাস। আর প্রতিটি চরিত্রকে সাপোর্ট করে পুরো নাটক মাতিয়ে রেখেছিল কোরাসদল। কোরাসে ছিল যথাক্রমে দীপান্বিতা, দিশা, জয়দেব, রাহুল,সত্যজিৎ, নিলয়, গজানন, সম্রাট,সুরাইয়া ও সন্ধ্যা।
নাটকের সেট ও লাইটে জঙ্গলের পরিবেশ সৃষ্টি করে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন ইব্রাহিম মন্ডল ও মন্টু পাল। মিউজিকে ছিলেন দীপঙ্কর শীল। পশুপাখিদের বিভিন্ন আচরণ,চলাফেরা তথা কোরিওগ্রাফি করেছেন দেবাশিস সরকার। আর সমগ্র নাটক মাতিয়ে জমজমাট করে রেখেছিল যে গান,তা বেঁধেছেন দেবব্রত দাস এবং সঙ্গ দিয়েছেন কানাইলাল সাহা। বলাই বাহুল্য নাটক শেষে দর্শকের মুখে মুখে গানের সুর ঘোরাফেরা করাই গানের সার্থকতার প্রমাণ। বাদ যায়নি কস্টিউমের প্রশংসাও। বাঘ,সিংহ,শেয়াল,কাঁকড়া,পিঁপড়ে থেকে শুরু করে প্রতিটি জঙ্গলবাসীর কস্টিউম দর্শকদলের চক্ষু সার্থক করেছে, তা শো শেষে দর্শকের উপচে পড়া ভিড় ও হাসি মুখের বক্তব্যই প্রমাণ করে। দর্শকের বক্তব্য, কাউকে বলে দিতে হয়নি কোনটা কোন পশু,কস্টিউমেই তা যথেষ্ট পরিষ্কার। সন্ধ্যা বারুইয়ের এ কস্টিউম ভাবনা নাটকের গুণগত মান বাড়িয়েছে। সবশেষে বলা যায় গোবরডাঙা রঙ্গভূমির এরকম একটি অসামান্য উপস্থাপনা প্রতিটি নাট্যপ্রেমীর মনে নাটক দেখার ক্ষুধা আরও বাড়িয়ে দিল।
জয়শ্রী মিত্র