কর্মক্ষেত্রে অশান্তির সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কার শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার: ... বিশদ
প্রথম ম্যাচে রহিত শর্মার দুরন্ত সেঞ্চুরিতেও হার এড়াতে পারেনি ভারত। সিডনিতে ৩৪ রানে হেরে তিন ম্যাচের সিরিজে ০-১ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছেন কোহলিরা। ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ের পর এই হার মেনে নিতে একটু যেন বেশিই কষ্ট হচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেট অনুরাগীদের। তার মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ত্রী অনুষ্কা শর্মার সঙ্গে খামার বাড়ি ঘুরতে যাওয়ার ছবি পোস্ট করে সমর্থকদের কটাক্ষ হজম করতে হয়েছে কোহলিকে। পরামর্শ শুনতে হয়েছে এখন এ সব ছেড়ে খেলায় মন দেওয়ার জন্য। সোশ্যাল মিডিয়ার সেই মৃদু তিরস্কারকে ভারত অধিনায়ক আমল দিক বা না দিক, কোচ রবি শাস্ত্রীর পাঠশালায় অনুশীলন নামক কর্মপ্রক্রিয়াটা ইদানীং অত্যন্ত গৌণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিডনিতে কার্যত কোনও রকম আউট-ডোর প্র্যাকটিস ছাড়াই খেলতে নেমেছিল ভারতীয় দল। অ্যাডিলেডে পৌঁছেও একটা দিন ঘুরে বেড়িয়েই কাটিয়ে দিলেন ক্রিকেটাররা। তবে সোমবার পুরোদমে অনুশীলন করল ভারতীয় দল। ৩৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা উপেক্ষা করে বেশ কয়েক ঘণ্টা মাঠে ঘাম ঝরাল কোহলি ব্রিগেড।
আগের ম্যাচে জয়ের জন্য ২৮৯ রান তাড়া করতে নেমে চার রানেই তিন সেরা ব্যাটসম্যানকে হারিয়েছিল ভারত। মাত্র ৩ রান করেছিলেন কোহলি। এই ম্যাচে তাঁর কাছে বড় রানের প্রত্যাশা নিয়ে তাকিয়ে থাকবে দল। ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের পোস্ট করা এক ভিডিও’তে দেখা যাচ্ছে নেটে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে ব্যাট করছেন অধিনায়ক কোহলি। সিডনির হতাশা ঝেড়ে ফেলে অ্যাডিলেডে বড় রানের জন্য বদ্ধপরিকর দেখাল তাঁকে। বিসিসিআইয়ের পোস্ট করা ছবিতে দেখা গেল প্রধান কোচ রবি শাস্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। আবার দীনেশ কার্তিকের ব্যাটিংয়ের সময় স্টাম্পের পিছনে কিপার হিসেবেও থাকলেন মাহি। ঠাণ্ডা মাথার ধোনিও অস্তিত্বরক্ষার এই ম্যাচের উত্তেজনা আড়াল করতে পারছেন না। তার ওপর গত ম্যাচে হাফ-সেঞ্চুরি করেও সমালোচনা এড়াতে পারেননি তিনি। ৯৬ বলে ৫১ রান। তাই তাঁর মন্থর ব্যাটিং নিয়ে ফের একবার প্রশ্ন উঠেছে। তাই তিনিও মরিয়া থাকবেন সমালোচনার জবাব দেওয়ার জন্য।
এমনিতে এদিনের অনুশীলনের নেট পর্ব দেখে আভাস পাওয়া গিয়েছে, ব্যাটিং অর্ডারে তেমন কোনও পরিবর্তন ঘটাতে আগ্রহী নয় ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। অর্থাৎ রহিত, ধাওয়ান, কোহলি ও রায়াডু নামবেন প্রথম চার ব্যাটসম্যান হিসেবে। আর পাঁচ-ছয় নম্বরে যথাক্রমে ধোনি ও দীনেশ কার্তিক। কিন্তু একই দলে দুই উইকেটরক্ষক নিয়ে নামার যৌক্তিকতা কোথায়? কার্তিকের বদলে কেদার যাদবকে সুযোগ দিলে তা অধিক লাভদায়ক হতে পারত। কারণ ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতেও গত এশিয়া কাপে দারুণ কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছিলেন কেদার। আর সাত নম্বরে এই ম্যাচেও সুযোগ পাওয়া কার্যত নিশ্চিত রবীন্দ্র জাদেজার। কারণ হার্দিক পান্ডিয়ার পরিবর্ত পেসার-অলরাউন্ডার হিসেবে বিজয় শঙ্কর ডাক পেলেও তিনি অ্যাডিলেডে পৌঁছাবেন সোমবার মধ্যরাতে। ফলে মঙ্গলবার তাঁকে সরাসরি ম্যাচে নামিয়ে দেওয়া অসম্ভব। তাই স্পিনার জাদেজাই পালন করবেন অলরাউন্ডারের ভূমিকা।
পাশাপাশি বোলিং নিয়েও চিন্তা রয়েছে ভারতের। যশপ্রীত বুমরাহ বিশ্রামে থাকায় ভারতের পেস বিভাগকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভুবনেশ্বর কুমার। কিন্তু ভুবি প্রথম ওয়ান ডে’তে নিজের খ্যাতির প্রতি বিন্দুমাত্র সুবিচার করতে পারেননি। ডেথ ওভারে অজি ব্যাটসম্যানরা হাতখুলে মেরেছেন তাঁকে। অপর পেসার খলিল আহমেদও সুবিধা করতে পারেননি। তাঁদের বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে এই ম্যাচে।
অ্যাডিলেডে শেষ কয়েকটি একদিনের ম্যাচে তেমন বড় রান ওঠেনি। এই মরসুমের গোড়াতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ২৩১ রানের পুঁজি নিয়েও জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। এই মাঠে ভারতের বিরুদ্ধেও অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ড দারুণ ভালো। পরিসংখ্যানের খাতায় ৪-১ ব্যবধানে এগিয়ে তারা। তবে ২০১২ সালে এই মাঠে দুই দলের শেষ সাক্ষাতে জিতেছিল ভারত। আর গত মাসে অ্যাডিলেড ওভালেই টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচটি জিতে ইতিহাসের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন কোহলিরা। সেই পয়া ভেন্যুতে ওয়ান ডে সিরিজে এবার ঘুরে দাঁড়ানোর পথ খুঁজতে নামছে টিম ইন্ডিয়া।
অন্যদিকে, অ্যারন ফিনচের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়ার সামনে সিরিজ জেতার উজ্জ্বল হাতছানি। যা তাদের নতুন দিশা দেবে। কারণ একদিনের ক্রিকেটে ইদানিং খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না অজিদের। ২০১৭ সালের জানুয়ারির পর কোনও দ্বিপাক্ষিক ওয়ান ডে সিরিজ জিততে পারেনি পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। শেষ ২৬টি ম্যাচের মধ্যে হেরেছে ১৯টি ম্যাচেই। মঙ্গলবার ভারতকে হারিয়ে দীর্ঘ দুই বছরের খরা কাটাতে চায় অ্যারন ফিনচের দল। সেক্ষেত্রে টানা ছয়টি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ হারের পর সাফল্যের মুখ দেখবে তারা। আর তা পারলে কোহলির কাছে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ হারের দুঃখ কিছুটা হলেও লাঘব হবে অজি বাহিনীর।