ধনাগম যোগটি অনুকূল। দুপুর থেকে কর্মের বাধা মুক্তি ও উন্নতি। শরীর-স্বাস্থ্য সমস্যার যোগ। ... বিশদ
সম্ভাব্য প্রথম স্থানাধিকারী বনানী গতবারের প্রথম অঞ্জলির চেয়ে এবার ১৮ নম্বর কম পেয়েছে। এবারের দ্বিতীয় পূর্ণিমা মাহাত পেয়েছে ৬৪৩ নম্বর (৯১.৮৬ শতাংশ)। যুগ্মভাবে তৃতীয় চেতনা নায়েক ও মিঠুন সাহার প্রাপ্ত নম্বর ৬৩৬ (৯০.৮৬ শতাংশ)। টানা পাঁচ বছর ধরে এই স্কুলের পড়ুয়ারা রাজ্যে দৃষ্টিহীনদের মধ্যে সম্ভাব্য প্রথম স্থান দখল করছে। দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের সিংহভাগই অত্যন্ত গরিব পরিবারের সন্তান। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে স্থায়ী ব্রেইলের শিক্ষক নেই। ওই স্কুলে শিক্ষক শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে ৫২টি পদের অনুমোদন রয়েছে। ২০০৭ সাল থেকে স্কুলটি শিক্ষকের অভাবে ভুগছে। বর্তমানে মাত্র ১৭ জন স্থায়ী শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী কোনওরকমে স্কুল চালান। তবে নানা সমস্যায় জর্জরিত হওয়া সত্ত্বেও মিশন স্কুলের দৃষ্টিহীনদের ধারাবাহিক সাফল্যের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে অভিনন্দন জানিয়েছে জেলা প্রশাসনও। মিশন স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১৭ জন দৃষ্টিহীন পড়ুয়ার বাড়ি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। তবে সকলেই এখানে প্রাইমারি থেকে পড়াশোনা করছে।
সম্ভাব্য প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তিনজনই ছাত্রী হওয়ায় ভীষণ খুশি স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী সহ মিশনের সকলেই। প্রথম বনানীর বাড়ি পুরুলিয়ার পুঞ্চা ব্লকের জামবাগ গ্রামে। তিন বোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট বনানী। বাবা রাধামাধব সরকার স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন বনানী পড়াশোনার পাশাপাশি ভালো রবীন্দ্র সঙ্গীত গাইতে পারে। অবসরে দাবার চালে কিস্তিমাত করে দেয় বন্ধুদেরও। বানানী বাংলায় ৯০, ইংরাজিতে ৯১, অংকে ৯৭, পদার্থ বিজ্ঞানে ১০০, জীবন বিজ্ঞানে ৯০, ইতিহাসে ৯০ এবং ভূগোলে ৯৩ অর্থাৎ মোট ৬৫১ নম্বর পেয়েছে। দ্বিতীয় পূর্ণিমা ও তার বোন সুমিত্রা মাহাত ক্লাস থ্রি-তে মিশন স্কুলে ভর্তি হয়েছিল। বাবা নন্দ মাহাত দিনমজুরি করেন। সুমিত্রাও ৮৫.৮৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছে। যুগ্ম তৃতীয় চেতনা নায়েক ও মিঠুন সাহা পড়াশোনার পাশাপাশি ভালো অ্যাথলেটও। এরা দু’জনেই শিক্ষক হতে চায়। মিঠুনের বাবা দিনমজুর, মা পরিচারিকার কাজ করেন। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আশিস পন্ডা বলেন, দৃষ্টিহীন ছেলেমেয়েগুলির মনের জোর আমাদেরও প্রেরণা দেয়। এদের এই সাফল্য আমাদের স্কুলকে গর্বিত করেছে।