বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
কোন ক্লাসে বাচ্চারা কী শিখবে, তা আগে থেকেই অভিভাবকদের জানিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। স্কুলে স্কুলে এ নিয়ে পোস্টারিং করা হয়েছে। অভিভাবকদের বুকলেটও দেওয়া হয়েছে। ফলে একটি ক্লাসে সারা বছরে বাচ্চারা কী শিখবে, তা আগে থেকেই জানা থাকবে তাঁদের। সেই মতো বাবা-মায়েরা বছরের শেষে তা মিলিয়ে নিতে পারবেন। এবার ক্লাসে পড়ুয়াদের খামতি এবং অগ্রগতির কথাও লিখিত আকারে বাবা-মায়েদের জানিয়ে দেওয়া হবে। রিপোর্ট কার্ডের নাম দেওয়া হয়েছে ‘নিরবচ্ছিন্ন সার্বিক মূল্যায়নের প্রগতি পত্র’। রিপোর্ট কার্ডের কভার পাতায় পড়ুয়ার ছবি, নাম, ক্লাস ইত্যাদি থাকবে। ভিতরে সামেটিভ বা পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের নম্বর দেওয়ার জায়গা রয়েছে। ক্লাসের পাঠের সঙ্গে একজন বাচ্চার সংযোগ স্থাপনের ক্ষমতা কেমন, সমন্বয় সাধনের সক্ষমতা কেমন, সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে কীভাবে কাজ করে সে এবং মানসিক ও শারীরিক সমন্বয়ের দক্ষতার উপর নম্বর দেওয়া হবে পড়ুয়াদের। মোট তিনটি পরীক্ষায় কত নম্বর সে পেল, তার ভিত্তিতে গ্রেড দেওয়া হবে।
একইভাবে প্রস্তুতিকালীন মূল্যায়নের ভাগও করা আছে। সেখানে ক্লাসে একজনের বাচ্চার অংশগ্রহণ, প্রশ্ন করা ও অনুসন্ধানে কতটা আগ্রহ রয়েছে, ব্যাখ্যা ও প্রয়োগের সামর্থ্যই বা কত, সমানুভূতি ও সহযোগিতায় কেমন এবং নান্দনিকতা ও সৃষ্টিশীলতার প্রকাশে একজন পড়ুয়ার মূল্যায়ন করে নম্বর দেওয়া হবে। রিপোর্ট কার্ডের একটি অংশে ক্লাসের শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক এবং অভিভাবকের সই করার জায়গাও রয়েছে। নম্বর দেওয়ার পর একজন শিক্ষার্থীর কোনও বিশেষ কর্মদক্ষতার স্বীকৃতি নিয়ে শিক্ষকরা মন্তব্য করবেন। এছাড়াও পড়ুয়াদের কোন জায়গায় কী খামতি বা দুর্বলতা রয়েছে, তাও উল্লেখ করবেন শিক্ষকরা। অভিভাবকদেরও যদি কিছু বলার থাকে, সেটিও এই রিপোর্ট কার্ডে উল্লেখ করা যাবে।
ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে (বিশেষ করে দিল্লি বোর্ড) এমন রিপোর্ট কার্ডের রীতি রয়েছে। প্রত্যেক ধাপের পরীক্ষার পর এই রিপোর্ট কার্ড দেওয়া হয়। সেখানে বিষয় পিছু নম্বর যেমন দেওয়া হয়, তেমনই সার্কিভাবে একজন ছাত্র বা ছাত্রীর হাল কেমন, তা নিয়ে মন্তব্য থাকে। প্রায় সেই ধাঁচেই বাংলা স্কুলগুলিতে এই প্রগতি কার্ড দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে বিভিন্ন স্কুল তাদের মতো করে মূল্যায়নের রিপোর্ট তৈরি করে তা প্রিন্ট করে দিয়ে দেয়। তাতে এত বিস্তারিতভাবে কিছু থাকে না। তাছাড়া খামতি কোথায় বা কোন জায়গা উন্নতি করতে হবে, তা মুখে মুখেই বলে দেওয়া হয়। কিন্তু এবার লিখিতভাবে সেসব করা হবে। এখন স্কুলগুলিকে পড়ুয়াদের মূল্যায়নের রিপোর্ট পাঠাতে হয়। অভিভাবকদের যে রিপোর্ট কার্ড দেওয়া হবে, তার সঙ্গে যাতে শিক্ষা দপ্তরের কাছে পাঠানো রিপোর্টের মিল থাকে, তা যাচাই করে নিতে পারবেন কর্তারা। এমনটাই মনে করা হচ্ছে।