হঠাৎ জেদ বা রাগের বশে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়া শ্রেয়। প্রেম-প্রীতির যোগ বর্তমান। প্রীতির বন্ধন ... বিশদ
প্রতারিতদের তালিকায় রাজ্য পুলিসের দুই সাব ইন্সপেক্টর, অধ্যাপক, সেনাবাহিনীর অফিসার থেকে শিক্ষক কে নেই! বেলঘরিয়ার বাসিন্দা পেশায় বেসরকারি হাসপাতালের নার্স রুমি সেন নামে একজন প্রতারিতের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৭ সালে তদন্তে নেমেছিল নিউ আলিপুর থানার পুলিস।
প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিসের দাবি, ২০০৭ সালে আপার ডিভিশন ক্লার্ক পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর প্রতারণার কারবার ফেঁদেছিল অভিযুক্ত। তদন্তকারী টিমের অনুমান, চাকরিজীবনে একসময় এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে কাজ করার সুবাদেই সম্ভবত তার মাথায় এমন পরিকল্পনা এসেছিল। ২০১৫ থেকে ২০১৭— এই দু’বছরে সে একাধিক ব্যক্তিকে চাকরি বা বদলির টোপ দিয়ে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বলে অভিযোগ। তারপর একদিন রাতারাতি বেলঘরিয়ার দু’টি বাড়ি বিক্রি করে মোবাইল বন্ধ করে উধাও হয়ে যায় সে। ফলে তদন্তে নেমে কিছুতেই নাগাল পাচ্ছিল না পুলিস।
কীভাবে হদিশ মিলল এই প্রতারকের? তদন্তে নেমে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই অভিযুক্তের নতুন নম্বরের হদিশ পান তদন্তকারী টিম। তাতেই জানা যায়, শ্রীরামপুরে অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার পরিচয় দিয়ে সুবীর পাল নাম নিয়ে বাড়ি কিনে বসবাস শুরু করেছে অভিযুক্ত। বাড়ির হলঘরে রামকৃষ্ণ ও সারদা মায়ের ছবি। এমনকী সুবীর পাল নামে ভোটার কার্ড তৈরিও করেছে সে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রীরামপুরের জগন্নাথ ঘাট লেনের বাসিন্দাদের কাছে ধৃত নিজেকে আইএএস পরিচয় দেওয়ার পাশাপাশি বলত, তার স্ত্রী মারা গিয়েছেন। একমাত্র ছেলে জার্মানিতে চাকরি করে। মেয়ের বিয়ে হয়েছে আমেরিকাতে। জগন্নাথ ঘাট লেনের স্থানীয় ক্লাবের ছেলেদের সে দরাজ হস্তে চাঁদা দিত। স্বাভাবিকভাবেই এলাকার বাসিন্দারা তাকে এতটাই সম্ভ্রমের চোখে দেখতেন যে, এই অভিযুক্ত প্রতারককে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয় নিউ আলিপুর থানার পুলিসকে।
তদন্তে নেমে নিউ আলিপুর থানার পুলিস ধৃতের ১৪টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ‘ফ্রিজ’ করেছে। ওইসব অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা রয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১৩ জন প্রতারিত ব্যক্তির হদিশ মিলেছে। রাজ্য পুলিসে কর্মরত দুই সাব ইন্সপেক্টর বাড়ির কাছে বদলির জন্য ধৃতকে টাকা দিয়েছিলেন বলে পুলিস জানতে পেরেছে। যদিও পুলিস তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, অঞ্জনবাবুর ছেলে নেই। তার কাজকর্মে বিরক্ত স্ত্রী ও মেয়ে রাজস্থানে আলাদা থাকেন।