হঠাৎ জেদ বা রাগের বশে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়া শ্রেয়। প্রেম-প্রীতির যোগ বর্তমান। প্রীতির বন্ধন ... বিশদ
জল জমে যাওয়ার কারণে বহু জায়গাতে স্কুলের দরজা খুললেও পড়ুয়াদের দেখা মেলেনি। অনেক স্কুলে পড়ুয়া না আসায় শিক্ষক ও শিক্ষিকারা এলেও জল জমার আতঙ্কে তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে গিয়েছেন। সুন্দরবনের বেশ কয়েকটি জায়গাতে নদী বাঁধে জলের চাপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টানা বর্ষণের জেরে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় ট্রেন চলাচল কোথাও কোথাও বিলম্ব হয়েছে। রাস্তায় লোক চলাচল ছিল অন্য দিনের তুলনায় একেবারে কম। দিদিকে বলো কর্মসূচি নিয়ে শাসকদলের নেতাদের মধ্যে জনসংযোগের ক্ষেত্রে পাড়ায় পাড়ায় যে উদ্দীপনা দেখা গিয়েছিল, ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্লাবিত এলাকায় মানুষের পাশে সেভাবে তাঁদের পাওয়া যায়নি।
জেলার শহরতলি রাজপুর-সোনারপুর, বারুইপুর, জয়নগর, মহেশতলা, বজবজ, পুজালি ও ডায়মন্ডহারবার এই সাতটি পুরসভার অধিকাংশ ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। রাজপুর-সোনারপুরের ৩৫টি ওয়ার্ড কম বেশি জলমগ্ন। এরমধ্যে ভয়ঙ্কর অবস্থা গড়িয়ার উভয় দিক, বৈকুণ্ঠপুর মোড়, মিশনপল্লি, গ্রিন পার্ক, নরেন্দ্রপুর স্টেশন সংলগ্ন জনপদ ছাড়া সুভাষগ্রাম পার্ক ও স্টেশন রেলগেট সংলগ্ন রাস্তা জলের তলায়।
গ্রিন পার্ক ও মিশনপল্লিতে বহু বাড়িতে একতলায় জল ঢুকেছে। পানীয় জলের রিজার্ভার জলের তলায় চলে গিয়েছে। কামালগাজি-সোনারপুর রাস্তার উভয় দিকে ফুটপাত তৈরির জন্য গর্ত খোঁড়া রয়েছে। তাও জলের তলায় চলে যাওয়াতে পথচারীদের যাতায়াত আতঙ্কের হয়ে গিয়েছে। কারণ, কোথায় গর্ত তা বোঝা যাচ্ছে না। ফলে অনেকেই পড়ে যাচ্ছেন জলে। এ নিয়ে দু’দিন আগে শিমূলতলাতে রাস্তা অবরোধ হয়েছিল। বারুইপুর ব্লকের মল্লিকপুর জলমগ্ন। এদিন বারুইপুর সুপার হাসপাতালের ঢোকার মুখ জলে ডুবে যায়। ওই জায়গাতে শহরের জঞ্জাল জমা হয়। সেই জঞ্জাল আর জল একাকার হয়ে গিয়ে রোগীদের নরকযন্ত্রণা সইতে হয়। তাতে পা দিয়ে হাসপাতালে যেতে হয়েছে রোগী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের।
রাজপুর ও সোনারপুরে নিকাশি সাফাই না হওয়াতে যেমন জল জমে গিয়ে মানুষকে অসুবিধায় পড়তে হয়েছে। কোথাও কোনও নজরদারি নেই। ওই বিভাগের চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল সক্রিয় নয়। একই চিত্র বারুইপুরে। নাগরিকদের অভিযোগ, নিকাশি সঠিকভাবে সাফাই হয় না। এ নিয়ে সেভাবে নজরদারিও নেই। পুরসভার ৪ নম্বর ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের পঞ্চাননতলা, পালপাড়া, দত্তপাড়া, মাস্টারপাড়া, শিবতলা, বেলতলা মোড়, দাসপাড়া রোড হাঁটু সমান জল। খাওয়ার জলের ট্যাপ নিকাশির উপছানো জলের তলায়। অনেক জায়গাতে বিদ্যুৎ নেই। ভাঙড়ের কলেজ রোড, সাতুলিয়া বাজার, বাগজোলা খাল, বিজয়গঞ্জ বাজার, মিঠাপুকুর বাজার, কোমর সমান জল। ডায়মন্ডহারবার পুরসভার ৬, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডসহ সংলগ্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কোথাও কোমর কোথাও হাঁটু সমান জল। বহু বাড়িতে জল ঢুকেছে। অধিকাংশ জায়গাতে নিকাশি বুজে রয়েছে। মহেশতলার পুরসভার ৩৫ ওয়ার্ড জলমগ্ন। এর ভিতর ১৩ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ড দু’টি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, কলকাতা পুরসভার রবীন্দ্রনগর পাম্পিং স্টেশন থেকে ১২৯ এর জমা জল ওই দু’টি ওয়ার্ডে ফেলা হচ্ছে। তাতেই আরও ভয়ঙ্কর হয়ে যাচ্ছে। মহেশতলা থেকে বিষ্ণুপুর যাওয়ার চট্টা সুবিদ আলি রোডের নীচ দিয়ে যাওয়া কালভার্টে জল জমে জলমগ্ন হয়েছে। এর প্রতিবাদে সেখানে এদিন আড়াই ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ হয়। শেষ পর্যন্ত অবরোধকারীদের দাবি মেনে জেসিবি দিয়ে সেখানকার আবর্জনা সাফাইয়ের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। ঠাকুরপুকুরের ১২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভিতর দিয়ে যাওয়া চড়িয়াল খালের মুখ আটকে দেওয়াতে সেখানকার মাঝিপাড়া, রামকৃষ্ণ নগর, অরবিন্দ নগর, দাসপাড়া, পূর্বাচল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রোডের বিস্তীর্ণ রাস্তা থেকে অলিগলি এক হাঁটু জলের তলায়। খাবার জলের পাইপ, রিজার্ভার ডুবে গিয়েছে। কারণ, খালের জল ব্যাক ফ্লো করে অলিগলিতে ঢুকছে। এ নিয়ে কাউন্সিলারের কাছে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন নাগরিকরা।